২,০০০ বছর আগেও ছিল সেক্স টয়! ৭ ইঞ্চির প্রাচীন 'ডিলডো' আবিষ্কার গবেষকদের!

Ancient Sex Toy: গবেষকদের বিশ্বাস, যৌনাঙ্গে প্রবেশের জন্য নয়, সম্ভবত যোনির ক্লিটোরিসকে উদ্দীপিত করার জন্য ব্যবহার করা হয়েছিল এই ডিলডো।

সেক্স টয়, যৌনতার নানা অজানা বিষয়কে আবিষ্কার করতে অথবা যৌনতার অভ্যাসকে আরও একটু আকর্ষণীয় করতে খেলনার ব্যবহার। ইদানীংকালে 'সেক্স টয়' শব্দটির সঙ্গে আমাদের পরিচয় করিয়েছে নানা মাধ্যম। নানা ওয়েব সিরিজ (দেশি এবং বিদেশি) সেক্স টয়কে যৌনক্রীড়ার দুর্দান্ত অংশ হিসেবে দেখিয়েছে, দেখতে অভ্যস্ত করেছে। সেক্স টয় শুধুমাত্র শারীরিক ঘনিষ্ঠতা বাড়ায় না, শ্রোণীদেশে ব্যথা, ইরেক্টাইল ডিসফাংশন এবং মেনোপজের নানা সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের সাহায্যও করে। তবে হালেফিলে সেক্স টয় মান্যতা পেলেও, এর ইতিহাস কিন্তু বেশ প্রাচীন।

সম্প্রতি অ্যান্টিকুইটি জার্নালে প্রকাশিত একটি সমীক্ষা বলছে, প্রায় ২,০০০ বছর আগেও ছিল সেক্স টয়। প্রত্নতাত্ত্বিকরা প্রায় বছর ২০ আগে সাত ইঞ্চি লম্বা একটি বস্তু খুঁজে পান হ্যাড্রিয়ানের প্রাচীরের কাছে এক রোমান দুর্গের অবশিষ্টাংশ, ভিনডোল্যান্ডের কাছে একটি খাদে। উত্তর ইংল্যান্ডের ৭৩ মাইল লম্বা এই প্রাচীর এককালে ছিল রোমান সাম্রাজ্যের উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত। গবেষকরা বলছেন, লিঙ্গ আকৃতির ওই কাঠের বস্তুটি ব্রিটেনের প্রাচীন রোমানদের দ্বারা ব্যবহৃত সেক্স টয় হতে পারে। গবেষণা বলছে, রোমান বিশ্বে কাঠের তৈরি প্রমাণ মাপের পুরুষ লিঙ্গের প্রথম সেক্স টয় হতে পারে এটিই।

তবে প্রথমে গবেষকরা ভেবেছিলেন এই বস্তুটি কোনও বিশেষ কিছু ফুটো করার যন্ত্র। আসলে এই যন্ত্রটি পাওয়া গিয়েছিল বেশ কিছু জুতো, পোশাক সম্বন্ধীয় নানা জিনিস এবং ছোট সরঞ্জাম, হাতের কাজের নানা জিনিসের পাশে। প্রথমে অবশ্য এও ভাবা হয়েছিল যে যন্ত্রটি বোধহয় মুষল, বা কিছু পেষাই করার যন্ত্র। ভাগ্য ফেরানোর তাবিজ হিসাবেও বিষয়টি ব্যবহৃত কিনা তাও ভাবা হয়েছিল কারণ এমন জিনিস ধাতু বা হাড় থেকে তৈরি লকেট বা কানের দুল হিসাবে পরা হতো রোমান বিশ্বে। তবে নিউক্যাসল ইউনিভার্সিটি এবং ইউনিভার্সিটি কলেজ ডাবলিনের নতুন বিশ্লেষণ বলছে, আসলে এটি রোমান বিশ্বে উদ্ধার হওয়া প্রথম ডিলডো বা খেলনা পুরুষাঙ্গের উদাহরণ।

আরও পড়ুন- কীভাবে তৈরি হত কন্ডোম? তাজ্জব করবে ৩০০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ প্রাচীন কন্ডোমের এই ইতিহাস

ইউনিভার্সিটি কলেজ ডাবলিনের গবেষক এবং প্রত্নতাত্ত্বিক রব স্যান্ডস বলছেন, কাঠের জিনিস প্রাচীন বিশ্বে খুবই সাধারণ ব্যাপার ছিল, কিন্তু কাঠের তৈরি জিনিস খুব নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতেই টিকে থাকে। উত্তর ইউরোপে সাধারণত অন্ধকার, স্যাঁতসেঁতে পরিবেশে কাঠের জিনিসের এতকাল টিকে থাকা দুষ্কর। সুতরাং, ভিনডোলান্ডে এই ডিলডোর টিকে থাকা অত্যন্ত বিরল ঘটনা। প্রায় ২০০০ বছর ধরে এটি টিকে রয়েছে এবং এখনও বেশ ঠিকঠাক অবস্থাতেই আছে।

গবেষকদের বিশ্বাস, যৌনাঙ্গে প্রবেশের জন্য নয়, সম্ভবত যোনির ক্লিটোরিসকে উদ্দীপিত করার জন্য ব্যবহার করা হয়েছিল এই ডিলডো। আবার হতেও পারে হামানদিস্তার মতো বস্তুতে রান্নার উপাদান বা ওষুধ পেষার জন্য ব্যবহার করা হতো এই যন্ত্রটি। সৌভাগ্যের প্রতীক হিসেবে এই সেক্স টয়টিকে কোনও মূর্তির মধ্যেও স্থাপন করা হয়ে থাকতে পারে। সেই সময় এই মূর্তিটি হয়তো কোনও গুরুত্বপূর্ণ সরকারি বা সামরিক ভবনের প্রবেশদ্বারের সামনে অবস্থিত ছিল।

আসলে এই প্রাচীন ডিলডোর আকার এবং কাঠ দিয়ে খোদাই করে তৈরি হওয়ার বিষয়টি প্রাচীনকালে এর ব্যবহার সম্পর্কে বেশ কয়েকটি প্রশ্ন তোলেই। নিউক্যাসল ইউনিভার্সিটির প্রত্নতাত্ত্বিক রব কলিন্স বলছেন, এর ব্যবহার সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারা মুশকিল। তবে প্রাচীন রোমান এবং গ্রিকরা নানা যৌন সরঞ্জাম ব্যবহার করত, ফলে এই বস্তুটি প্রাচীন ডিলডোর একটি উদাহরণ হতে পারে। বর্তমানে ভিনডোল্যান্ডের জাদুঘরে প্রদর্শিত হচ্ছে এই প্রাচীন সেক্স টয়।

More Articles