ভাং-এর শরবতেই মিশে আছে রঙিন বাঙালির দোলের ঐতিহ্য, কীভাবে ঘরেই বানাবেন এই শরবত?

holi special bhang thandai : উৎসবের আমেজে ঐতিহ্য এবং খানাপিনাকে বাদ দিলে চলবে কেন? তাই ঘরেই বানিয়ে ফেলুন জমাটি স্বাদের ভাঙের শরবত। কাজের ফাঁকে তাতেই চুমুক দিন, মন জুড়িয়ে যাবে নিশ্চিত।

শীতের শেষ এবং গরমের শুরু মাঝখানের বসন্তকালটুকু আবহাওয়ার হিসেবে এখন অস্তাচলে। তাপমাত্রার বাড়বাড়ন্ত দেখলে সত্যিই আর আলাদা করে চেনা যায় না বসন্তকে। তবুও বসন্ত আসে। নিজের নিয়মেই আসে। গাছের নতুন পাতাগুলো জানান দেয় ঋতুর আগমন। আর এই বসন্তের উৎসব মানেই দোল। নানা রঙের আবেশে সেজে ওঠে ঋতুরাজ। বছরের এই একটা দিন সব বিভেদ ভুলে ফাগের রঙে রাঙিয়ে দেওয়ার পালা। আজ সকাল থেকেই শহরের ছবিটা খুব অন্যরকম। ট্রেনে বাসে অফিস টাইমে বাদুড় ঝোলা ভিড় নেই, বদলে ভিড় পাড়ায় পাড়ায়, মন্দিরে মন্দিরে। দোল উপলক্ষ্যে দেবতার পায়ে ফাগ দিয়ে তবেই উৎসবের শুভ সূচনা করা হয় এই বাংলায়। বসন্তের এইটুকু উদযাপন ঘিরেই চলে বিরাট প্রস্তুতি পর্ব। দোকানে দোকানে বিভিন্ন রঙের আবিরের পসরা বসে গত কয়েকদিন ধরে। তার সঙ্গেই থাকে পিচকারি, বালতি, মুখোশ অথবা কুখ্যাত বাদুড় রং।

তবে দোলের প্রসঙ্গ এখানেই শেষ নয়, উৎসবের আমেজটুকু মিশে যায় বাঙালির ভুরিভোজে। রঙের পাশেই তাই সাজানো থাকে ফুটকড়াই, মঠ, লাড্ডু, মিষ্টি এবং সরি চিরাচরিত শরবত। রং মেখে শরবতের গ্লাসে চুমুক দেওয়ার যে আদি এবং অকৃত্রিম স্বাদ তা অবশ্য নতুন করে বলে দেওয়ার অপেক্ষা রাখে না। দোলের এই শরবতের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে একটা অন্য ঐতিহ্য। সিদ্ধি বা ভাং খাওয়ার প্রচলন আছে এখনও। তবে ব্যস্ত জিবিবে এখন ওই ফুরসৎটুকুর বড় অভাব, তাই সবাই মিলে চুমুক দেওয়ার সময়ও মেলে না। কিন্তু ঐতিহ্য এবং খানা পিনাকে বাদ দিলে চলবে কেন? তাই ঘরেই বানিয়ে ফেলুন জমাটি স্বাদের ভাঙের শরবত। কাজের ফাঁকে তাতেই চুমুক দিন, মন জুড়িয়ে যাবে নিশ্চিত।

আরও পড়ুন - ঠাকুরবাড়ির সিদ্ধি, অলিগলির বাঁদুরে রঙ! কেমন ছিল পুরনো কলকাতার দোল?

জেনে নিন কীভাবে সহজে ঘিরেই বানিয়ে নেবেন এই শরবত।

উপকরণ -

চিনেবাদাম ২০০ গ্রাম, কাজুবাদাম ২০০ গ্রাম, দুধ ২ লিটার, ২টো বড় ডাবের জল, চিনি স্বাদমতো, গোলাপজল ২ বড় চামচ, কেওড়ার জল ৩ বড় চামচ, ভাং পাতা বাটা হাফ কাপ (প্রয়োজন মত মেশাতে পারেন), মৌরি গুঁড়ো ২ বড় চামচ, ২০০ গ্রাম মাখা সন্দেশ, ১ টা তামার পাত্র

পদ্ধতি -

একটু আগে থেকে জলে কাজুবাদাম এবং চিনেবাদাম ভিজিয়ে রাখতে হবে। এরপর চুলায় দুধের সঙ্গে পরিমাণ মতো চিনি মিশিয়ে ভালো করে জাল দিতে হবে। তারপর ঘন হয়ে একে নামিয়ে ঠাণ্ডা করে নিতে হবে। এবার মিক্সার গ্রাইন্ডারে ভাং পাতা বাটা, দুধ, বাদামবাটা, মাখা সন্দেশ, ডাবের জল এবং মৌরি গুঁড়ো একসঙ্গে দিয়ে খুব ভালো করে মিশিয়ে নিতে হবে। এরপর ওই মিশ্রণটি একটি আলাদা পাত্র বা হাঁড়িতে ঢেলে নিতে তাতে অল্প গোলাপ এবং কেওড়ার জল মিশিয়ে নিন। এরপর ওই তামার পাত্রটি গ্যাসে খুব ভালো করে গরম করে, ওই অবস্থায় শরবতের মধ্যে দিয়ে দিন। শরবত তৈরি। গ্লাসে ঢেলে দু-এক টুকরো বরফ এবং উপর থেকে কাজুবাদাম ও চিনা বাদাম কুচি ছড়িয়ে ঠান্ডা ঠান্ডা পরিবেশন করুন দোলের স্পেশাল ভাং-এর শরবত।

More Articles