ঠিক কী হয়েছিল কে কে-র! কেন অকালে চলে যেতে হল?

অটোপসি রিপোর্টে ধরা পড়া মাথা এবং মুখমণ্ডলের চোট কি সোফা থেকে পড়ে গিয়েই হয়েছে? না কি এর পিছনে রয়েছে অন্য বড় কোনও রহস্য?

 

ভারতীয় সংগীজগতে ঘটে গেল এক নক্ষত্রপতন। চলে গেলেন বলিউড তথা ভারতের নামজাদা গায়ক কৃষ্ণকুমার কুন্নাথ, ওরফে কে কে। 'হম রহে ইয়া না রহে কাল...'- কলকাতার রবীন্দ্র সরোবর-সংলগ্ন নজরুল মঞ্চে অনুষ্ঠানের শেষ গানটা গেয়ে যখন তিনি স্টেজ থেকে নামছেন, তখন কে জানত, এটাই হবে তাঁর জীবনের শেষ গান। তাঁর মৃত্যুতে গভীরভাবে শোকাহত গোটা বিশ্ব। বিশিষ্ট সংগীতশিল্পীর মৃত্যু যেন কোনওভাবেই মানতে পারছেন না তাঁর ভক্তরা। যিনি কিছুক্ষণ আগে নজরুল মঞ্চে গান গাইছিলেন, কয়েক ঘণ্টার পর তাঁর নিথর দেহ শোয়ানো! এ কি ভাবা যায়!

৩১ মে কলকাতার জন্য যেন একটা কালো দিন হয়ে রইল। 'আসছি' বলে যে মানুষটা কলকাতার যুবদের মাঝে এসে হাজির হলেন, তাঁকেই এভাবে নিথর অবস্থায় দেখতে হবে- এটা হয়তো স্বপ্নেও ভাবতে পারেনি কলকাতার আপামর জনগণ। উল্টোডাঙ্গার স্যর গুরুদাস মহাবিদ্যালয়-এর সোশ্যাল অনুষ্ঠানে প্রধান তারকা হিসেবে নজরুল মঞ্চে অনুষ্ঠান করতে এসেছিলেন কে কে। অনুষ্ঠান শেষ করে চলে যান ধর্মতলার বিলাসবহুল গ্র্যান্ড হোটেলে। কিন্তু সেখানেই ঘটে অঘটন। হোটেলে পৌঁছে এই শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। সঙ্গে সঙ্গেই আলিপুরের সিএমআরআই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। কিন্তু সেখানেই চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। তখন ঘড়িতে বাজে রাত সাড়ে নটা। চিকিৎসকদের অনুমান অনুযায়ী, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে কে কে-র।

মাত্র ৫৩ বছর বয়সে সম্পূর্ণভাবে সুস্থ থাকা সত্ত্বেও হঠাৎ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে কেন মৃত্যু হল জনপ্রিয় গায়কের? এই ঘটনার আকস্মিকতা ঘিরে নানা প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। আদৌ কি কে কে-র মৃত্যু স্বাভাবিক ছিল? না কি এর জন্য দায়ী ছিল উদ্যোক্তাদের একাংশের অপরিণামদর্শিতা? বুধবার থেকেই এই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। সোশ্যাল মিডিয়াতেও শুরু হয়েছে আলোচনা। নজরুল মঞ্চের উদ্যোক্তাদের বিরুদ্ধে মানুষ উগরে দিচ্ছেন ক্ষোভ। অনেকে আবার দুষছেন স্যর গুরুদাস মহাবিদ্যালয়ের তৃণমূল ছাত্র পরিষদ কমিটিকে।

আরও পড়ুন: ‘দেবদাস’ থেকে ‘আশিকি টু’- গানের সুরে প্রেমের নদীর খোঁজ দিয়েছিলেন কে কে

তবে এই সব হিসেব যেন ওলটপালট করে দিল বুধবার সকালের একটি অটোপসি রিপোর্ট। সেই রিপোর্টে জানা যায়, মুখমণ্ডল এবং মাথায় রয়েছে চোট। সেই রিপোর্ট সামনে আসামাত্রই অস্বাভাবিক মৃত্যুর অভিযোগ দায়ের করা হলো নিউ মার্কেট থানায়। কলকাতার অনুষ্ঠানে আসা কে কে-র সঙ্গীরাই অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগ পাওয়ার পরেই তদন্ত শুরু করেছে কলকাতার নিউ মার্কেট থানার পুলিশ। অভিযোগ উঠছে, নজরুল মঞ্চ থেকে ফেরার পর নিউ মার্কেট থানা-সংলগ্ন গ্র্যান্ড হোটেলে তিনি উঠেছিলেন, সেখানেই তাঁর সঙ্গে এমন কিছু ঘটেছিল, যার ফলে তিনি অজ্ঞান হয়ে যান। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট সামনে না আসলেও, কে কে-র মৃত্যু নিয়ে ধোঁয়াশা থাকছেই।

কোথায় হয়েছিল ভুল?
অটোপসি রিপোর্ট কী বলছে, সেটা যদি একটু দূরে সরানো যায়, তাহলে প্রথমেই চোখে পড়বে নজরুল মঞ্চের বিশৃঙ্খলা। তবে এই বিশৃঙ্খলা যে এই প্রথম, সেটা কিন্তু বলা যাবে না। এর আগেও বহু অনুষ্ঠানে এরকম বিশৃঙ্খলা দেখা গিয়েছে। অনেক নামীদামি তারকাদেরও এই ভিড়ের জন্য সমস্যার মধ্যে পড়তে হয়েছে একাধিকবার। কিন্তু কে কে-র অনুষ্ঠানের জন্য যতটা ভিড় হলো, ততটা হয়তো এর আগে কোনওদিন দেখেনি নজরুল মঞ্চ। রবীন্দ্র সরোবর-সংলগ্ন এই কমিউনিটি হলে ২,৫০০-এর কাছাকাছি মানুষের বসার জায়গা রয়েছে। প্রত্যেক অনুষ্ঠানে কিছু সংখ্যক মানুষ অতিরিক্ত প্রবেশ করেনই। কিন্তু, এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রায় ৭,৫০০-এরও বেশি মানুষ। অসমর্থিত সূত্রের দাবি, অনেকে নাকি টিকিট ছাড়াই পাঁচিল টপকে ঢুকেছিলেন। তাই সামনের ভিড় সরানোর জন্য অতর্কিতে অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র থেকে কার্বন ডাই-অক্সাইড ব্যবহার করতে হয়েছিল উদ্যোক্তাদের। প্রত্যক্ষদর্শীদের অনেকেরই বক্তব্য, অত দূরে কে কে প্রথমে গাড়ি থেকে নামতেও দ্বিধা' করেছিলেন। কিন্তু কোনওক্রমে ভিড় সরিয়ে তাঁকে সরাসরি গ্রিনরুমে নিয়ে যাওয়া হয়।

এই একই অনুষ্ঠানে কে কে-র আগে সংগীত পরিবেশন করেছিলেন স্থানীয় শিল্পী শুভলক্ষ্মী দে। তিনি সরাসরি জানিয়েছেন, "এত ভিড় ছিল যে, কে কে স্যারকে অনেকক্ষণ গাড়িতে বসে থাকতে হয়েছিল। তারপরে ভিড় সরিয়ে তাঁকে গাড়ি থেকে সরাসরি গ্রিনরুমে নিয়ে যাওয়া হয় এবং সেখানে কাউকে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছিল না। শুধুমাত্র আমি অনুষ্ঠান করব বলে আমায় ঢুকতে দেওয়া হয়।" তাঁর কথা থেকে স্পষ্ট, নজরুল মঞ্চের এই অনুষ্ঠানে ভিড় ছিল প্রবল। কিন্তু তবুও, প্রশ্ন উঠছে, নজরুল মঞ্চের এসি বন্ধ ছিল কি?

এই প্রশ্নের উত্তরে নজরুল মঞ্চের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, কোনওভাবেই এসি বন্ধ করা হয়নি। সর্বক্ষণ এসি চলছিল। কিন্তু এদিনের অনুষ্ঠানে পুরো হলের ৭টি বড় দরজার মধ্যে ৫টি খোলা ছিল। বারবার দরজা খোলা এবং বন্ধ করা হচ্ছিল এবং বারবার অনেক লোক ঢুকছিল। এই কারণে প্রচণ্ড গরম ছিল এবং এসি কোনওভাবেই হাওয়া ঠান্ডা করতে পারছিল না। এর জন্য একসময় সমস্যাও হয় গায়কের। তিনি নিজেই একসময় এসি চালানোর কথা বললেও, লোকের তুলনায় জায়গা অপ্রতুল হওয়ায় কোনওভাবে সাহায্য করা সম্ভব হয়নি।

এরপর প্রশ্নটি উঠছে, নজরুল মঞ্চের লাইট ব্যবস্থা নিয়ে। নিজের অনুষ্ঠানে যখন তিনি গান গাইছেন এবং তিনি নিজেই বলছেন, তাঁর অস্বস্তি হচ্ছে, মুখের সামনে ফ্লাড লাইট বন্ধ করা হোক, সেটা মানা হয়নি বলে উঠেছে অভিযোগ। অনুষ্ঠান থেকে সোশ্যাল মিডিয়াতে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে আমরা দেখতে পাচ্ছি, উদ্যোক্তাদের বারবার আলো বন্ধ করার অনুরোধ করছেন কে কে। গায়কের সেই অনুরোধ পর্যন্ত রাখতে চেষ্টা করেননি উদ্যোক্তারা।

অনুষ্ঠানের একজন দর্শকের বক্তব্য, তিনি একটি পাস জোগাড় করে এই অনুষ্ঠান দেখতে গিয়েছিলেন, কিন্তু সেখানে এই চরম বিশৃঙ্খলা সকলকে একেবারে চমকে দেয়। বিগত কয়েকদিনে নজরুল মঞ্চে এরকম ঘটনা একাধিকবার ঘটেছে। গত সপ্তাহেও একটি নামী বাংলা ব্যান্ডের অনুষ্ঠানে দর্শকদের চাপে গেট ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছিল। কিন্তু কে কে-র অনুষ্ঠানে পরিস্থিতি ছিল একেবারে বেসামাল এবং তজ্জনিত বিশৃঙ্খলাও ছিল প্রবল।

কে কে-র মৃত্যুরহস্য নিয়ে আরও একটি সমস্যা রয়েছে। যখন অনুষ্ঠানের শেষেই কে কে-র শরীরে অস্বস্তি দেখা গিয়েছিল, সেখানে দক্ষিণ কলকাতার আশপাশের চার-চারটি হাসপাতাল বাদ দিয়ে তাঁকে হঠাৎ করে মধ্য কলকাতার চৌরঙ্গী এলাকার একটি পাঁচতারা হোটেলে নিয়ে আসা হলো কেন? নজরুল মঞ্চ থেকে ধর্মতলার হোটেলে যখন তিনি ফিরছেন, সেই সময় গাড়িতে শীত করার জন্য তিনি গাড়ির বাতানুকূল যন্ত্র পর্যন্ত বন্ধ করতে বলেছিলেন। এছাড়াও তাঁর পেশিতে খিঁচুনি হচ্ছিল বলেও জানা যাচ্ছে। ছবি তোলার জন্যও তিনি কাউকে তাঁর কাছে আসতে দিচ্ছিলেন না। তখন কোনও সময় নষ্ট না করে যদি কোনও একটি হাসপাতালে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হতো, তাহলে হয়তো তিনি আজ সুস্থ থাকতেন।

ঘটনাক্রম অনুযায়ী হোটেলে আসার পরেই তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। সোফায় বসতে গিয়ে হোটেলের ঘরে পড়ে যান তিনি। তাঁর মাথায় চোট লাগে, ক্ষত তৈরি হয়, আলিপুরের ওই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় গায়কের। এখানেই এক পক্ষের মানুষ বলছেন, যদি অনুষ্ঠানের সময় থেকেই অসুস্থ বোধ করেই থাকেন, এবং নজরুল মঞ্চ থেকে হোটেলে ফেরার সময় পেশিতে খিঁচুনি এবং শীত করার কথা উল্লেখ করে থাকেন, তাহলে তাঁকে তৎক্ষণাৎ কোনও হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলো না কেন? তবে অনেকে আবার বলছিলেন, কে কে একদম ফিট মানুষ, তাই তিনি শুধুমাত্র বিশ্রাম নিতে চেয়েছিলেন।

ডাক্তারদের কী মত?
পরিবার এবং ঘনিষ্ঠ সূত্রের খবর, গায়ক কে কে অত্যন্ত শৃঙ্খলাবদ্ধ জীবনযাপন করতে অভ্যস্ত। বহুদিনের পুরনো বন্ধু জিৎ গাঙ্গুলী তাঁর স্মৃতিচারণায় বলছেন, খাওয়াদাওয়ার রুটিন থেকে শুরু করে ব্যায়ামের সময়, সব কিছুই তাঁর ছিল বাঁধাধরা। কিন্তু তা হলেও এত কম বয়সে কেন হার্ট অ্যাটাক হলো? আগে মানুষের মধ্যে একটা ধারণা ছিল, বার্ধক্যের সঙ্গে আস্তে আস্তে হৃদরোগ দেখা দেয়। কিন্তু এখন এই ধারণা পাল্টাচ্ছে। ইয়ং জেনারেশনের খাদ্যাভ্যাস, অতিরিক্ত ধূমপান, মানসিক চাপ এবং নিয়মিত শরীরচর্চা না করার ফলশ্রুতিতে বাড়ছে হার্ট অ্যাটাকের প্রবণতা।

বর্তমানে ভারতে ৫৪ বছর বয়সি একজন মানুষের শরীরে হৃদরোগের কোনও সম্ভাবনা আছে কি না সেটা সহজে দেখে বোঝা যায় না। এই মুহূর্তে ভারতে হৃদরোগের যে ট্রেন্ড চলছে, তাতে এটা বলাই যায়, পঞ্চাশোর্ধ্ব ব্যক্তিদের মধ্যে ২০ শতাংশ ব্যক্তির ক্ষেত্রে হৃদরোগের সম্ভাবনা রয়েছে। আর এই হৃদরোগের পরিণাম মৃত্যু। কমবয়সি থেকে শুরু করে সকলের ক্ষেত্রেই এই সমস্যাটা রয়েছে।

চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, কে কে-র হৃদরোগের সম্ভাবনাও একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। এতটা কম বয়সে শুধুমাত্র গরমের কারণে এবং অতিরিক্ত ভিড়ের কারণে হার্ট অ্যাট্যাক হওয়াটাকে এত সহজ চোখে দেখতে চাইছেন না ডাক্তাররা। তাঁদের ধারণা, হয়তো কে কে-র শরীরেও এরকম কোনও হৃদরোগ বাসা বেঁধে থাকার সম্ভাবনা রয়েছে, যা আরও বেশিমাত্রায় সামনে আসে মঙ্গলবারের ওই বিশৃঙ্খল পরিস্থিতিতে।

হার্ট অ্যাটাকের প্রাথমিক লক্ষণ উপেক্ষা করা হয়নি তো?
নজরুল মঞ্চের ওই অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশনের সময় থেকেই যেন দরদর করে ঘামতে শুরু করেছিলেন গায়ক কৃষ্ণকুমার কুন্নাথ। প্রথম থেকেই তাঁর শারীরিক অবস্থা খারাপ হতে শুরু করে। প্রত্যেকটি গান গাওয়ার পরে তাঁকে দেখা যায় রুমাল দিয়ে ঘাম মুছতে। কয়েকটি গান গাওয়ার পর গ্রিন রুমে গিয়ে বেশ কিছুক্ষণ বিশ্রামও নিয়েছিলেন গায়ক। তারপরে আবার ফিরে আসেন গান গাইতে। ডাক্তারি ভাষায়, এই অত্যধিক ঘাম কিন্তু হৃদরোগের একটি বড় লক্ষণ। হার্ট অ্যাটাকের মতো একটি মেডিক‍্যাল এমার্জেন্সি যখন হয়, তখন একটি জায়গার রক্ত জমাট বেঁধে গিয়ে হৃদপিন্ডে রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ডাক্তারি ভাষায় এটিকে মায়োকার্ডিয়াল ইনফার্কশন বলে।

যখন এটি হয়, তখনই মানুষের শরীরে বিভিন্ন উপসর্গ দেখা দিতে শুরু করে। বুকে ব্যথা, বুকে চাপ লাগা, বুকের বাঁদিকে অসহ্য যন্ত্রণা, চোয়াল ওপরে উঠে যাওয়া, স্ট্রোক হওয়ার মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়া, মুখ জড়িয়ে যাওয়ার পাশাপাশি আরও একটি উপসর্গ হলো অত্যধিক পরিমাণে ঘাম হওয়া। অত্যধিক গরম পরিবেশ হওয়ার পাশাপাশি নজরুল মঞ্চের ওই অনুষ্ঠানে এসি চললেও ঠিকঠাক কাজ করতে পারছিল না। তার ওপর এত মানুষের ভিড়, তাদের গলার আওয়াজ, সবকিছু মিলে সৃষ্টি হয়েছিল এক দমবন্ধ পরিবেশ। এর ফলে অত্যধিক দমবন্ধ অবস্থায় হৃদপিন্ড অত্যন্ত দ্রুত স্পন্দিত হতে শুরু করে। প্রচণ্ড গরম এবং প্রচণ্ড অস্বস্তির কারণে শরীরের তাপমাত্রা বাড়তে থাকে। শুরু হয় মাত্রাতিরিক্ত ঘাম। হার্ট অ্যাটাকের এই পূর্ব লক্ষণ হয়তো কে কে-র ক্ষেত্রেও দেখা দিয়েছিল। হয়তো তিনি বা তাঁর সঙ্গীরা এই ব্যাপারটি বুঝতে পারেননি।

যে প্রশ্নগুলো থেকেই যাচ্ছে
নেটমাধ্যমে এই মুহূর্তে নজরুল মঞ্চ থেকে তাঁর বেরিয়ে যাওয়ার সময়ের কয়েক সেকেন্ডের একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। সেই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, তিনি অত্যন্ত ঘর্মাক্ত এবং বিধ্বস্ত। কখনও তাঁকে ঘিরে বা তাঁর পিছু পিছু দৌড় করেছে জনগণ। এই অবস্থাতেও তাঁকে একা কেন ছেড়ে দেওয়া হলো না? এটা কি কোনওভাবে উদ্যোক্তাদের গাফিলতি নয়? ২৫০০ মানুষের বসার জন্য উপযুক্ত একটি অনুষ্ঠান মঞ্চে কেন প্রায় সাড়ে সাত হাজার মানুষকে প্রবেশ করার অনুমতি দেওয়া হল? ঢোকার মুখে অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রের মাধ্যমে কার্বন ডাই-অক্সাইড কেন ছড়ানো হলো, যখন ভেতরের পরিস্থিতি ছিল এত গুমোট? গায়ক কে কে যখন অনুষ্ঠান মঞ্চে এতটা ঘামছেন, সেই সময় তাঁকে বিশ্রাম করতে কেন বলা হলো না? এবং সর্বোপরি অটোপসি রিপোর্টে ধরা পড়া মাথা এবং মুখমণ্ডলের চোট কি সোফা থেকে পড়ে গিয়েই হয়েছে? না কি এর পিছনে রয়েছে অন্য বড় কোনও রহস্য?

More Articles