এটিই পৃথিবীর দীর্ঘতম মল! দৈর্ঘ্য-প্রস্থ জেনে হাঁ গবেষকরাও!

World's Biggest Poop: বিশ্বের এই লম্বা মলটিকে শেষমেশ রক্ষা করা যায়নি। ২০০৩ সালে প্রদর্শনীতে এই মলটি নিয়ে আসার পর সেটি তিন টুকরো হয়ে যায়।

পৃথিবীর দীর্ঘতম মল আসলে কত ইঞ্চি লম্বা? কী বিচিত্র প্রশ্ন! কী অশ্লীল প্রশ্ন! কেই বা কবে মলের দৈর্ঘ্য মেপেছে! মেপেছে, মেপেছে বলেই পৃথিবীর দীর্ঘতম মানব মলের হলিশ মিলেছে! পরিত্যক্ত এক ভাইকিং বসতিতে খননকার্য চলার সময় একটি মলের সন্ধান পাওয়া যায়। সেই মলের দৈর্ঘ্য ২০ সেমি বা ৮ ইঞ্চি! দৈর্ঘ্য দেখেই যদি ঘাবড়ে থাকেন তাহলে আরেকটু অপেক্ষা করুন। মানুষের এই লম্বা মল চওড়াতে ৫ সেমি বা ২ ইঞ্চি। বিজ্ঞানীরা এই মলের নাম দিয়েছেন 'কপ্রোলাইট'। ১৯৭২ সালে এই মলটি উদ্ধার হয় ব্রিটেনে। ভবিষ্যতে ইয়র্কের এই জায়গাটিতেই গড়ে ওঠে লয়েডস ব্যাঙ্ক।

ইয়র্ক আর্কিওলজিক্যাল ট্রাস্টের (YAT) খননকারীরা খননকার্য চালানোর সময় এই মলটি উদ্ধার করেন। পরে সেটি জোর্ভিক ভাইকিং সেন্টারে প্রদর্শনীতে রাখা হয়। 'কপ্রোলাইট' (coprolite) আসলে একটি জীবাশ্ম মল। সেই কারণেই এই ভাইকিং মল এখনও তুলনামূলকভাবে অক্ষত আছে। এটিই এখনও পর্যন্ত আবিষ্কৃত সবচেয়ে বড় মানব মলের জীবাশ্ম বলে মনে করা হয়।

আধুনিক যুগের বিশ্লেষণ করে দেখা গিয়েছে, ভাইকিং নবম শতাব্দীর কাছাকাছি সময়ে বসবাস করতেন এবং তিনি বেশিরভাগ সময়ই মাংস আর রুটি খেতেন। প্রাচীন এই মলের জীবাশ্মে শ'য়ে শ'য়ে পরজীবীর ডিমও আবিষ্কৃত হয়েছিল। তা থেকেই বোঝা যাচ্ছে যে, মলের মালিক ভাইকিং, যিনি এই বহু বহু বছর আগে মলত্যাগ করেছিলেন, তাঁর অন্ত্রে কৃমি ছিল। ১৯৯১ সালে প্যালেসকেটোলজিস্ট ডঃ অ্যান্ড্রু জোনস বলেছিলেন, তাঁর দেখা সবচেয়ে আকর্ষক 'মল' এটিই।

আরও পড়ুন- ২,০০০ বছর আগেও ছিল সেক্স টয়! ৭ ইঞ্চির প্রাচীন ‘ডিলডো’ আবিষ্কার গবেষকদের!

ভাইকিং কারা?

ভাইকিং যুগ হল ইউরোপীয় ইতিহাসের একটি সময়কাল। ৮০০ থেকে ১০৫০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত এই ভাইকিং যুগ বিস্তৃত ছিল। ভাইকিংদের কিছু গোষ্ঠী এই সময়কালের পরেও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আরও অনেকটা বেশি সময় ধরেই টিকে ছিল। স্ক্যান্ডিনেভিয়ায় এই জনগোষ্ঠীর উদ্ভব ঘটে এবং বিখ্যাত ভাইকিং জাহাজে সারা বিশ্বে ভ্রমণ করেন এই মানুষরা। জাহাজে করে বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে উপনিবেশ স্থাপন করেন ভাইকিংরা। ভাইকিংরা নিজেদের নৃশংসতার জন্যও সুপরিচিত। ভাইকিংরা বিশ্বজুড়ে বাণিজ্যের বিস্তার ঘটিয়েছিলেন, পাশাপাশি সাম্রাজ্যও বিস্তার করেছিলেন। ভাইকিং বাড়ির শৈলী, গয়না, সরঞ্জাম এবং অন্যান্য দৈনন্দিন সরঞ্জামের প্রমাণ অনেক দেশেই পাওয়া গেছে।

১০৬৬ সালে স্ট্যামফোর্ড ব্রিজের যুদ্ধে নরওয়ের রাজা হারাল্ডার হার্দারি নিহত হলে ব্রিটেনে ভাইকিং যুগের অবসান ঘটে। ভাইকিংদের সবচেয়ে পরিচিত চিহ্ন হচ্ছে শিরস্ত্রাণে শিং। তবে ভাইকিং যুগের কেবলমাত্র একটিই শিরস্ত্রাণ ভালোভাবে সংরক্ষিত রয়েছে এবং তাতে শিং নেই। তবে এই মল থেকে ভাইকিংদের নিত্য জীবনের খাদ্যাভ্যাসের বেশ একটা ধারণা মেলে। খননের সময় এই বিশাল মলটি মাটির স্তরে আবৃত ছিল।

তবে বিশ্বের এই লম্বা মলটিকে শেষমেশ রক্ষা করা যায়নি। ২০০৩ সালে প্রদর্শনীতে এই মলটি নিয়ে আসার পর সেটি তিন টুকরো হয়ে যায়। পরে জোর্ভিক ভাইকিং সেন্টারের দর্শকদের জন্য মলটিকে জোড়া হয়। ফলে আবার পূর্ণ দৈর্ঘ্য পায় সেটি।

More Articles