পকসো থেকে মুক্তি! হেনস্থার সব অভিযোগ থেকেই বেঁচে যাবেন ব্রিজভূষণ?
Brij Bhushan Sharan Singh: উত্তর প্রদেশের কায়সারগঞ্জের ছয়বারের বিজেপি সাংসদের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগে দিল্লি পুলিশ ২০২৩ সালের ১৫ জুন ব্রিজভূষণ সিংয়ের বিরুদ্ধে কনট প্লেস থানায় দু'টি এফআইআর দায়ের করে।
বিতর্কিত, চরম বিতর্কিত হয়েও শাস্তির খাঁড়া থেকে তিনি বরাবরই নিরাপদ দূরত্বে থেকেছেন। শাসক হয়ে ক্ষমতাবলে আইনকে কীভাবে নিজস্ব চাহিদামতো মুড়েসুড়ে ব্যবহার করা যায় তার নিবিড়তম উদাহরণ হয়ে উঠেছেন। উঠেছেন বলেই, পকসোর মতো কড়া আইন থেকেও বেঁচে গেলেন তিনি। গত ২৬ মে দিল্লির একটি আদালত ভারতের রেসলিং ফেডারেশনের (ডব্লিউএফআই) প্রাক্তন চেয়ারপারসন এবং ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) নেতা ব্রিজভূষণ শরণ সিংয়ের বিরুদ্ধে পকসো মামলা বাতিলের প্রতিবেদন গ্রহণ করেছে। মাথার উপর এখন কেবল পাঁচজন মহিলা কুস্তিগীরের দায়ের করা যৌন হেনস্থার মামলা ঝুলছে ব্রিজভূষণ শরণ সিংয়ের বিরুদ্ধে।
লাইভল-এর প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে, দিল্লির পাতিয়ালা আদালতের অতিরিক্ত দায়রা বিচারক গোমতী মনোচার সামনে এই মামলার শুনানি হয়। সেখানেই শুনানি শেষে মামলার 'নিষ্পত্তি' হয় বলেও জানা যাচ্ছে। এই মামলাটি বন্ধ হয়ে যাওয়াতে দেশে ব্যাপক বিতর্ক, বিক্ষোভ এবং জনরোষের উদ্রেক ঘটানো মামলার আংশিক অবসান ঘটল।
আদালতের এই সিদ্ধান্তের পর, ব্রিজভূষণের ছোট ছেলে করণ ভূষণ সিং X-এ লিখেছেন, "এটি ন্যায়বিচার এবং সত্যের এক নির্ণায়ক বিজয়! সত্যকে সমস্যায় ফেলা যেতে পারে কিন্তু পরাজিত করা যায় না। বিচার বিভাগ দীর্ঘজীবী হোক, নেতাজি দীর্ঘজীবী হোন!”
ব্রিজভূষণের বড় ছেলে প্রতীক ভূষণ সিং X-এ লিখেছেন, “আমরা একটি মিথ্যা ও ভুয়ো মামলায় বিচারবিভাগীয় জয় অর্জন করেছি। প্রতিটি ভিত্তিহীন অভিযোগ এখন বিচারের মুখোমুখি হচ্ছে। এটি সত্যের জয় এবং এই জয় অব্যাহত থাকবে।”
আরও পড়ুন- কুস্তিগীরদের যৌন হেনস্থার ‘শাস্তি’? ব্রিজ ভূষণের ছেলেকে এবার টিকিট বিজেপির
উত্তর প্রদেশের কায়সারগঞ্জের ছয়বারের বিজেপি সাংসদের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগে দিল্লি পুলিশ ২০২৩ সালের ১৫ জুন ব্রিজভূষণ সিংয়ের বিরুদ্ধে কনট প্লেস থানায় দু'টি এফআইআর দায়ের করে। একটি এফআইআর ভারতীয় দণ্ডবিধি, ১৮৬০-এর অধীনে বিভিন্ন অপরাধের কারণে নথিভুক্ত করা হয়েছিল। আর একজন নাবালক কুস্তিগীরের দায়ের করা দ্বিতীয় এফআইআরটি পকসো আইনের অধীনে নথিভুক্ত করা হয়। পরে ব্রিজভূষণ সিংয়ের বিরুদ্ধে নিজের অভিযোগ প্রত্যাহার করে নেন ওই নাবালক।
ইকোনমিক টাইমসের এক প্রতিবেদন অনুসারে, গত বছর ওই নাবালক অভিযোগকারী এর আগের বিচারককে জানিয়েছিলেন যে তিনি দিল্লি পুলিশের তদন্তে সন্তুষ্ট এবং মামলাটি বন্ধ করার ক্ষেত্রে কোনও বিরোধিতাও করেননি।
ইতিমধ্যে, যৌন হেনস্থার মামলায়, ২০১৬ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে WFI কার্যালয়, ব্রিজভূষণ সিংয়ের বাসভবন এবং অন্যান্য স্থানে ঘটে যাওয়া ঘটনা সম্পর্কিত পাঁচজন মহিলা কুস্তিগীরের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। দিল্লির যন্তর মন্তরে কুস্তিগীর ভিনেশ ফোগাট, সাক্ষী মালিক এবং বজরং পুনিয়ার নেতৃত্বে ব্যাপক বিক্ষোভের পর সুপ্রিম কোর্টের হস্তক্ষেপে এই এফআইআর দায়ের করা হয়।
বিজেপি নেতা ব্রিজভূষণ তখন ছিলেন সাংসদ। সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে দিল্লি হাইকোর্টে উক্ত এফআইআর, চার্জশিট এবং ট্রায়াল কোর্টের কার্যক্রমকে চ্যালেঞ্জ করে আবেদন করেছিলেন তিনি। সেই আবেদনটি এখনও বিচারাধীন।