সমস্ত প্রবেশ নিষিদ্ধ! পাকিস্তানকে 'জব্দ' করতে যে যে সিদ্ধান্ত নিল ভারত সরকার
India Pakistan Relation: পাকিস্তানিদের ভারতে আসা বন্ধ করেছে বিজেপি সরকার। ভারতে আসার জন্য পাকিস্তানের মানুষ যে ‘সার্ক’ ভিসা ব্যবহার করেন, তা বাতিল করে দেওয়া হয়েছে।
পহেলগাঁওয়ে পর্যটকদের উপর হামলার জবাবে ভারতের কী কী করণীয় এই নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় একপ্রস্থ সালিশি হয়ে গিয়েছে। মূলধারার গণমাধ্যমগুলিও বারেবারে এই প্রশ্নই সামনে এনেছে যে পাকিস্তানকে 'যোগ্য' জবাব দিতে কী কী করতে পারে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন সরকার। হামলার দুই দিনের মাথায় প্রথম বড় সিদ্ধান্ত হিসেবে দুইটি পদক্ষেপ করেছে। নিঃসন্দেহে সেই সিদ্ধান্তগুলি ভারত-পাক প্রাচীন সম্পর্কের জটিলতা আরও বাড়াবে। প্রথমত, পাকিস্তানিদের ভারতে আসা বন্ধ করেছে বিজেপি সরকার। ভারতে আসার জন্য পাকিস্তানের মানুষ যে ‘সার্ক’ ভিসা ব্যবহার করেন, তা বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। এমনকী, এই ঘটনার আগে যে ভিসাগুলি দেওয়া হয়েছিল, সেগুলিও বাতিল করা হয়েছে। ফলে ওই ভিসা নিয়ে পাকিস্তানের যে নাগরিকরা এই মুহূর্তে ভারতে রয়েছেন, তাঁদেরও ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ভারত ছাড়তে হবে। সার্ক ভিসা কী?
‘সার্ক’-এর সদস্য দেশগুলির সাধারণ মানুষের মধ্যে যোগাযোগ আরও নিবিড় করার লক্ষ্যে ১৯৮৮ সালে এর সদস্য রাষ্ট্রগুলি ‘সার্ক ভিসা এক্সেম্পশন স্কিম’ বা এসভিইএস নামে একটি বিশেষ ব্যবস্থা চালু করে। তা বন্ধ করে দেওয়া শুধু পাকিস্তানকে 'জবাব' দেওয়া নয়। সার্কের সদস্য দেশ, অর্থাৎ ভারতের অন্যান্য প্রতিবেশী দেশগুলির কাছেও এক বড় বার্তা।
দ্বিতীয় বড় সিদ্ধান্ত হচ্ছে সিন্ধু জল চুক্তি অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করে দেওয়া। ভারতের বিদেশ মন্ত্রক বলছে, পাকিস্তান সন্ত্রাসবাদে মদত দেওয়া বন্ধ না করা পর্যন্ত এই সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে। অর্থাৎ কবে এই জল বিভাজনের ক্ষেত্রটি স্বাভাবিক হবে তা বলা যাচ্ছে না। চুক্তি অনুযায়ী পূর্ববাহিনী তিন নদী - বিয়াস, রাভি এবং সতলুজের জল ভারতে এবং পশ্চিম দিকের তিনটি নদী চেনাব, সিন্ধু এবং ঝিলামের জল পাকিস্তানে যাবে। চুক্তি অনুযায়ীই, দুই দেশ নির্দিষ্ট উদ্দেশ্যে একে অন্যের নদীগুলি ব্যবহার করতে পারবে। এই মুহূর্তে ভারত চুক্তি স্থগিত করায় পাকিস্তানের কৃষিক্ষেত্র এবং বিদ্যুৎ উৎপাদন দুই-ই প্রভাবিত হবে।
আরও পড়ুন- কাশ্মীরের জবাবে সিন্ধু জল চুক্তি স্থগিত! ভারতের সিদ্ধান্তে কোন বিপদের মুখে পাকিস্তান?
এদিকে ভারত সরকার ওয়াঘা-আট্টারি সীমান্ত বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে। যার এই সীমান্ত দিয়ে ভারতে এসেছেন এই মুহূর্তে তাঁদের ১ মে-র মধ্যে ভারত ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ভারত ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে নয়াদিল্লিতে পাকিস্তানি হাইকমিশনে প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত আধিকারিক যাঁরা আছেন, তাঁদেরও। আবার ইসলামবাদেও ভারতীয় হাইকমিশনে যে ভারতীয় প্রতিরক্ষা আধিকারিকরা আছেন, তাঁদের ফিরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। ভারতে পাকিস্তানি দূতাবাসের আধিকারিক সংখ্যাও আগামী ১ মে থেকে ৫৫ থেকে কমিয়ে ৩০-এ নামিয়ে আনতে বলা হয়েছে। পাকিস্তানে ভারতীয় দূতাবাসের আধিকারিকদের সংখ্যাও কমানো হবে। ভারতের এই একগুচ্ছ সিদ্ধান্ত নিয়ে আলোচনার জন্য পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির বৈঠক ডেকেছেন পাক প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ।
কাশ্মীরের ২৬ জন নিরস্ত্র সাধারণ মানুষকে হত্যা করে জঙ্গিরা। পরে এর দায় স্বীকার করেছে পাক জঙ্গিগোষ্ঠী লস্কর-ই-তৈবার ছায়া সংগঠন ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ (টিআরএফ)। এই মর্মান্তিক ঘটনার পরে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে উচ্চপর্যায়ের দীর্ঘ বৈঠক হয়। যার পরেই বিদেশ মন্ত্রক এই পদক্ষেপগুলির কথা জানায়।