মাওবাদীদের সঙ্গে যোগ? রাজ্যজুড়ে যে গবেষক, সমাজকর্মীরা NIA-এর নিশানায়
NIA Raid West Bengal: মাওবাদী সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত সন্দেহে পানিহাটি পল্লীশ্রী এলাকায় শিপ্রা চক্রবর্তীর বাড়িতে হানা দেন এনআইএ আধিকারিকরা।
পশ্চিমবঙ্গের ১২টি জায়গা এখন এনআইএ-র নজরে। জাতীয় তদন্ত সংস্থা বা ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (এনআইএ) ছত্তিশগড় থেকে পরিচালিত মাওবাদী বা চরম বামপন্থী (এলডব্লিউই) গোষ্ঠীগুলিকে কে টাকার জোগান দেয় এই বিষয়ে তদন্তে নেমে পশ্চিমবঙ্গের বারোটি জায়গায় মঙ্গলবার, ১ অক্টোবর সকাল থেকে অভিযান চালিয়েছে৷ দক্ষিণ কলকাতার নেতাজিনগর এলাকায়, উত্তর ২৪ পরগনার পানিহাটি, ব্যারাকপুর এবং সোদপুর, পশ্চিম বর্ধমানের আসানসোল এবং রাজ্যের আরও বেশ কয়েকটি জায়গায় মাওবাদীদের সাথে দুই মহিলা এবং তাদের সহযোগীদের সম্পর্কের অভিযোগে অভিযান চালানো হয়েছে। আসানসোলে তদন্তকারীরা যে গবেষকের বাড়িতে তল্লাশি অভিযান চালান, তাঁর সঙ্গে এই দুই মহিলার যোগাযোগ ছিল বলে অভিযোগ। অভিযানকারী এনআইএ আধিকারিকদের প্রতিটি দলের সঙ্গে রয়েছে সেন্ট্রাল আর্মড পুলিশ ফোর্স।
এনআইএ-র নজরে রয়েছে বাংলার তিন ‘আর্বান নকশাল’। সূত্রের খবর, তদন্তকারীদের মতে সমাজকর্মী মানবেশ চক্রবর্তী, শিপ্রা চক্রবর্তী এবং সুদীপ্ত পাল হচ্ছেন সেই 'শহুরে নকশাল' যারা নকশাল গোষ্ঠীদের আর্থিক সাহায্য করে থাকেন৷ এছাড়াও তদন্তকারী আধিকারিকদের স্ক্যানারে রয়েছেন অভিজ্ঞান সরকার। অভিজ্ঞান একজন গবেষক, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র তিনি। সুনির্দিষ্ট সূত্রের ভিত্তিতে, মঙ্গলবার সকাল থেকে অনুসন্ধান অভিযান শুরু হয়।
আরও পড়ুন- হাতে তির-ধনুক, না মাওবাদী নন, অস্ত্র হাতে গাছ বাঁচাচ্ছেন এই আদিবাসী মেয়েরা
তদন্তকারীদের দাবি, চারজন ব্যক্তি, মূলত পশ্চিমবঙ্গ থেকে এই অর্থায়নের কাজটি করলেও সারা ভারতের সমস্ত এলডব্লিউই সংস্থাগুলির সঙ্গে তাঁদের সম্পর্ক রয়েছে, বিশেষ করে যারা ছত্তিশগড়ে সক্রিয়। তদন্তকারী আধিকারিকরা এই গোষ্ঠীগুলির সঙ্গে যোগাযোগের সঠিক সূত্রগুলি চিহ্নিত করার চেষ্টা করছেন।
এনআইএ-র কাছে তথ্য রয়েছে যে, মাওবাদী গোষ্ঠীগুলির জন্য টাকার ব্যবস্থা করার পাশাপাশি, এই চার ব্যক্তি শিক্ষিত যুবক-যুবতীদের মাওবাদী আন্দোলনে যোগ দেওয়ার জন্য 'মগজ ধোলাই'-ও করে থাকেন। মাওবাদী সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত সন্দেহে পানিহাটি পল্লীশ্রী এলাকায় শিপ্রা চক্রবর্তীর বাড়িতে হানা দেন এনআইএ আধিকারিকরা। অভিযোগ শিপ্রা চক্রবর্তী এবং তাঁর স্বামী মানবেশ সরকার মাওবাদী সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত। মঙ্গলবার প্রথমে ডাকাডাকি করলে বাড়ির দরজা না খোলায় গেট টপকে বাড়ির ভেতর ঢোকেন এনআইএর আধিকারিকেরা। শিপ্রা চক্রবর্তী বলেন, "২০২২ সালে প্রশান্ত বসু অ্যারেস্ট হয়েছেন। সেই তদন্তের সূত্রেই আমাকে তারা সন্দেহ করছেন এবং তদন্তে জুড়তে চাইছেন। ঘরে বইপত্র সার্চ করেছে, মোবাইল ও ল্যাপটপ নিয়ে গেছেন এনআইএ-র আধিকারিকরা। এবার যখন তাঁদের মনে হবে, আমাকে তারা জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে পাঠাবেন।"
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, "এই ব্যক্তিদের কাছে এবং ছত্তিশগড়, ঝাড়খণ্ড আর বিহারের মাওবাদীদের কাছে টাকা পাঠানো হয়েছিল। আমরা এই যোগসূত্রগুলি খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি। দুই মহিলা কিছু এনজিও-র সঙ্গে কাজ করতেন যারা খনি শ্রমিকদের তাঁদের বকেয়া পেতে সাহায্য করত।" এই অভিযানে বেশ কিছু নথি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।