পাক সেনার অন্দরে: ভারতের মুখোমুখি হওয়ার সামর্থ্য আদৌ আছে?
Pakistan Army: ইসলামাবাদের অস্ত্রাগারে বর্তমানে ১৭০টি পারমাণবিক ওয়ারহেড রয়েছে বলে জানা গেছে। এর পাশাপাশি রয়েছে কয়েকটি অত্যাধুনিক মানের ডেলিভারি সিস্টেম
কাশ্মীরের পহেলগাঁও উপত্যকায় পৈশাচিক জঙ্গি হামলার পর কাশ্মীর এখনও থমথমে। সারা ভারতে জ্বলছে বিক্ষোভের আগুন। রাস্তায় নেমে এই হামলার বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলেছেন কাশ্মীরের সাধারণ মানুষ। অভিযোগ উঠছে পাকিস্তানের মদতেই নাকি ছবির মতো অপরূপ পহেলগাঁওয়ের বৈসরন উপত্যকা পরিণত হয়েছে মৃত্যু উপত্যকায়। এই গোটা হামলার দায় যদিও স্বীকার করেছে লস্করের ছায়া সংগঠন দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট, তবে গোয়েন্দারা বিশ্বাস করছেন, শুধুই এই জঙ্গিগোষ্ঠী নয়, এই হামলার পিছনে অবশ্যই রয়েছে পাকিস্তানের হাত। হামলার ধরন, পরিকল্পনা ও প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণে উঠে এসেছে পাকিস্তানের সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই-এর পরোক্ষ মদতের প্রমাণ।
পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী যখন FATF-এর নজরদারি এড়াতে পহেলগাঁওয়ের হামলাকে ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় হিসেবে স্থাপন করার চেষ্টায় মরিয়া, তখনই সোশ্যাল মিডিয়াতে বোম ফাটালেন প্রাক্তন পাক সেনা কর্মকর্তা আদিল রাজা। সোশ্যাল মিডিয়াতে আদিল রাজা দাবি করলেন, এই হামলার পিছনে পাকিস্তান সেনা প্রধান জেনারেল আসিম মুনিরের সরাসরি মদত রয়েছে। রাজা বললেন, "পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থার এক উচ্চপদস্থ সূত্র থেকে জানা গেছে, পহেলগাঁও হামলা ছিল পাকিস্তানের সামরিক কর্তৃপক্ষের এক নির্দেশনা।" এই এক বক্তব্য পাকিস্তানকে নিয়ে এসে আবারও দাঁড় করাল কাঠগড়ায়। একদিকে পাকিস্তান বিশ্বে ‘নিরপরাধ’ হিসেবে হাজির হতে চাইছে, অন্যদিকে তার অন্দরের গোপন আঁতাত ও নিষ্ঠুরতার ইতিহাস বারবার উন্মোচিত হয়ে পড়ছে।

পাকিস্তান সেনা প্রধান জেনারেল আসিম মুনির
পাকিস্তানের মোকাবিলায় প্রস্তুত ভারত
দুই দেশের এই কূটনৈতিক আক্রমণ পাল্টা-আক্রমণের মধ্যেই এবার পাকিস্তানের উপরে আক্রমণের আঁচ বাড়াতে শুরু করেছে নয়া দিল্লি। ভারতে অবস্থানরত পাকিস্তানি জনতাকে ভারত ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে যুদ্ধের মহড়া শুরু করে দিয়েছে ভারতীয় সেনাবাহিনী। ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকজন জঙ্গি খতম হয়েছে কাশ্মীর জুড়ে। রদ করা হয়েছে সিন্ধু জল চুক্তি, সীমানাজুড়ে বেড়েছে সেনার প্রভাব। ধ্বংস করা হয়েছে কাশ্মীরের বেশ কিছু গুপ্ত জঙ্গি আস্তানা। সবকিছুই যেন পাকিস্তানকে জানান দিচ্ছে, সাধু সাবধান!
আরও পড়ুন-পুলিশের নজর এড়িয়েই বৈসরনে পর্যটকরা! নিরাপত্তার যে যে গাফিলতি স্বীকার কেন্দ্রের
অন্যদিকে, পাকিস্তানও হাল ছাড়ার পাত্র নয়। তারাও নিজেদের পূর্ণ শক্তি দিয়ে ভারতের মোকাবিলা করার জন্য প্রস্তুত বলে ঘোষণা করেছে। ভারত ও পাকিস্তানের এই যুদ্ধ পরিস্থিতিতে বেশ কিছু প্রশ্ন বারবার সামনে উঠে আসে— যদি ভারত একবার পাক-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীর বা সীমান্ত বরাবর কোনও বড়সড় সামরিক অভিযান শুরু করে, পাকিস্তান আসলে কী করতে পারবে? কতটা ক্ষমতা আছে পাকিস্তানের হাতে? ভারতকে পরাস্ত করার জন্য কতটা প্রস্তুত পাকিস্তান? কী কী অস্ত্র রয়েছে পাকিস্তানের ভাণ্ডারে? কেনই বা এত ভাষণের পর শেষ মুহূর্তে আমেরিকার মধ্যস্থতা আশা করছে পাকিস্তান?
‘প্রতিরক্ষা’-র পর্দার আড়ালে ভাঙা সাম্রাজ্য
৯/১১ এর ঘটনায় সারা বিশ্ব কেঁপে ওঠার পর যখন পাকিস্তান সরাসরি জঙ্গি রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা হওয়ার দোরগোড়ায়, ঠিক তখনই আমেরিকার পক্ষে দাঁড়িয়ে নিজেদের সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে প্রথম সারির মিত্র হিসাবে প্রতিষ্ঠা করেছিল পাকিস্তান। সেই থেকে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী নিজেদের ক্ষমতা ও প্রভাব বৃদ্ধি করতে শুরু করে। এই মুহূর্তে পাকিস্তানের সামরিক শক্তির যা অবস্থা, তাতে তারা বিশ্ব মানচিত্রে নিজেদের একটা জায়গায় ভালোভাবেই স্থাপন করতে পারে। তবে স্থান অবশ্যই ভারতে অনেকটাই নীচে। পাকিস্তান মূলগতভাবে সেনানির্ভর দেশ। এই দেশের বাজেটের একটা বিশাল বড় অংশ যায় সেনা প্রতিপালনে এবং সামরিক ক্ষমতা বিস্তারের লক্ষ্যে। বলতে গেলে নিজেদের উন্নয়ন ও শিক্ষার মতো খাতের বরাদ্দ কমিয়ে পাকিস্তান সামরিক খাতে খরচ করে।
প্রতিরক্ষা মানচিত্রে পাকিস্তানের অবস্থান
গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ারের স্টেটাস অনুযায়ী এই মুহূর্তে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী সারা বিশ্বের সবথেকে বড় সেনাবাহিনীর তালিকায় দ্বাদশ স্থানে। আর ভারতীয় সেনাবাহিনী এই তালিকায় ৪ নম্বরে। এই মুহূর্তে পাকিস্তানের কাছে প্রায় ৬ লক্ষ ২০ হাজারের কাছাকাছি সক্রিয় সেনাকর্মী রয়েছে। পাকিস্তানের স্থলবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনী— তিন শাখার অনেকটাই চিন-নির্ভর। পাশাপাশি, আমেরিকার থেকেও কিছু অস্ত্র কিনেছে পাকিস্তান। চিনের তৈরি চেংদু এফ-৭, জেএফ-১৭ থান্ডার, এফ-১৬ ফাইটিং ফ্যালকন, ডাসাল্ট মিরাজ, জে-১০সি রয়েছে পাক বায়ুসেনার কাছে। এছাড়াও রয়েছে পরিবহণ বিমান, প্রশিক্ষক বিমান এবং কিছু সমর্থনকারী বিমান। এছাড়াও পাকিস্তানের কাছে নিজেদের আকাশ প্রতিরক্ষা সিস্টেম এবং রাডারও রয়েছে। তবে, এই সবকিছুই আসে অন্য দেশ থেকে। আমদানিনির্ভর হওয়ার কারণে রক্ষণাবেক্ষণের খরচ অনেক ক্ষেত্রেই সামাল দিতে পারে না পাকিস্তান।
পদাতিক এবং বায়ুসেনার পাশাপাশি পাকিস্তানের কাছে একটি নৌ বাহিনী রয়েছে, যারা ১৪৪৬ কিলোমিটার দীর্ঘ উপকূল রেখা রক্ষা করে। পাকিস্তান নৌ বাহিনীতে বর্তমানে তুর্কি, আমেরিকান, চিনা এবং নিজেদের দেশে তৈরি যুদ্ধজাহাজ আছে। এই যুদ্ধজাহাজগুলির মধ্যে রয়েছে আমেরিকান অলিভার হ্যাজার্ড পেরি ক্লাস ফ্রিগেট, তুর্কি নকশার বাবর ক্লাস যুদ্ধজাহাজ এবং পাকিস্তানেই নির্মিত জুলফিকার ক্লাসের যুদ্ধ জাহাজ।
আরও পড়ুন-বালুচিস্তানে দিশেহারা পাকিস্তান! বিশ্বের নজর ঘোরাতেই পহেলগাঁও হামলা?
পারমাণবিকতায় গর্বিত পাকিস্তান
পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর প্রধান গর্বের জায়গা হচ্ছে তাদের পারমাণবিক শক্তিভাণ্ডার। বিশ্বের ষষ্ঠ বৃহত্তম পারমাণবিক শক্তিধর দেশ পাকিস্তান তাদের পারমাণবিক শক্তি প্রদর্শন করার জন্য মুখিয়ে থাকে। ইসলামাবাদের অস্ত্রাগারে বর্তমানে ১৭০টি পারমাণবিক ওয়ারহেড রয়েছে বলে জানা গেছে। এর পাশাপাশি রয়েছে কয়েকটি অত্যাধুনিক মানের ডেলিভারি সিস্টেম। ছয়টি পারমাণবিক চুল্লি সম্মিলিতভাবে ৩,৫৩০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করে থাকে।
১৯৭২ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জুলফিকার আলি ভুট্টোর হাত ধরেই পাকিস্তানের পারমাণবিক যাত্রা শুরু হয়। সেই সময় থেকেই পাকিস্তানের পাশে ছিল চিন। তবে, এই পারমাণবিক ওয়ারহেড তৈরির জন্য বাজেটের একটা বড় অংশ প্রতি বছর খরচ করে পাকিস্তান। বিশ্বের পারমাণবিক শক্তিমঞ্চে এই ওয়ারহেড পাকিস্তানকে একটা ভালো স্থান দিতে পারলেও, এই পারমাণবিক যাত্রা পাকিস্তানের অর্থনীতিকে ক্ষতিগ্রস্তও করেছে গুরুতরভাবে।
পাকিস্তানের সমান্তরাল গঠন
পাকিস্তান সেনাবাহিনী শুধুমাত্র নিজে লড়াই করে না। বহু বছর ধরে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সঙ্গে একজোটে লড়াইয়ে সাহায্য করে আসছে তাদের মদতপুষ্ট জঙ্গি সংগঠনগুলো। গত এক দশকে পাকিস্তান সামরিকভাবে যুদ্ধ করার কৌশল অনেকটা বদলেছে। তবে, ভারত পাকিস্তানের ছায়াযুদ্ধ নীতি সম্পর্কে বেশ ভালোভাবেই অবগত। আশ্চর্যের বিষয় হলো, পাকিস্তানের এই জঙ্গি গোষ্ঠীগুলি কখনই কাশ্মীরের সাধারণ পর্যটকদের উপরে হামলা করত না কিন্তু এবারে আক্রমণের পদ্ধতি পরিবর্তন করেছে জঙ্গি সংগঠনগুলি। পহেলগাঁওয়ের মতো হামলায় তারা বুঝিয়ে দিয়েছে তাদের মধ্যে এবার খানিক হতাশা জন্ম নিতে শুরু করেছে। আর সেটাই যুদ্ধে শেষ পর্যন্ত তাদের কোণঠাসা করে দেবে, মত বিশ্লেষকদের একাংশের।
'পারমাণবিক অস্ত্র’ — শুধুই ফাঁকা আওয়াজ
পাকিস্তানের সবচেয়ে বড় ‘ভরসা’—পারমাণবিক অস্ত্র। কিন্তু পরমাণু ব্যবহার করা মানেই আন্তর্জাতিকভাবে আত্মহনন। এই অস্ত্র ব্যবহার করলে পাকিস্তান বিশ্বের দরবারে পুরোপুরি বাতিল হয়ে যাবে। ফলে, ভারত পাকিস্তানের এই যুদ্ধ চূড়ান্ত উত্তেজনায় না পৌঁছলে এই অস্ত্র ব্যবহারের সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ। আর ভারতের কাছেও ১৮০টি পারমাণবিক ওয়ারহেড রয়েছে, পাকিস্তানের তুলনায় ১০টি বেশি। ভারত এই অস্ত্রগুলি ব্যবহার করলে পুরো পাকিস্তানই ধ্বংস হয়ে যেতে পারে। ফলে পাকিস্তান নিজের পারমাণবিক শক্তি যে কতটা প্রদর্শন করতে পারবে, সে নিয়ে ধন্দ রয়েছে।
আরও পড়ুন-পাকিস্তানের পাল্টা, সিমলা চুক্তির স্থগিতাদেশে কী প্রভাব পড়বে ভারতে?
অর্থনীতির ধস: যুদ্ধের সামর্থ্য কোথায়?
২০২৫ সালের পাকিস্তান এক ভয়াবহ অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। ডলার না থাকায় চিকিৎসা, খাদ্য, বিদ্যুৎ— সবখানেই টানাটানি। IMF, চিন, সৌদি আরব— যার কাছ থেকে পারে, সাহায্য চাইছে। এই পরিস্থিতিতে বড়সড় যুদ্ধে অর্থ জোগাড় করা কার্যত অসম্ভব।
আমেরিকার দরজায় করুণ দরবার
আশ্চর্যের বিষয়— এই পরিস্থিতিতে পাকিস্তান আবার এক পুরনো কার্ড খেলছে। শোনা যাচ্ছে, যুদ্ধ পরিস্থিতি শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই পাকিস্তান আমেরিকার মধ্যস্থতা চাইতে আগ্রহী হয়েছে। সেই পাকিস্তান, যারা এককালে বলত, “আমদের আমেরিকার প্রয়োজন নেই, চিনই আমাদের ভবিষ্যৎ,” এখন সেই আমেরিকার কাছেই তারা আবার মধ্যস্থতা ভিক্ষা করছে।
ফাঁকা হুঙ্কারের পালা শেষ, বাস্তবের মুখোমুখি পাকিস্তান
পাকিস্তান এখন ইতিহাসের এক সংকটময় সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে— ভিতরে ফাটল, বাইরে চাপে পড়া এক বিপন্ন রাষ্ট্র। বালুচিস্তান থেকে গিলগিট-বালতিস্তান, খাইবার পাখতুনখাওয়া— অভ্যন্তরীণ বিদ্রোহ দমনে তার অর্থনীতি রক্তাক্ত, অথচ বৈদেশিক কৌশলেও সে ক্রমেই কোণঠাসা। এমন প্রেক্ষাপটে পহেলগাঁওয়ের জঙ্গি হামলা একদিকে যেমন ভারতকে উস্কে দেওয়ার ছল, তেমনই নিজের জনগণ এবং বিশ্বের সংবাদমাধ্যমের দৃষ্টি ঘোরানোর শুধুই এক মরিয়া প্রয়াস।
ভারতের পাইলট অভিনন্দনের বন্দিত্ব ও চা-পর্ব নিয়ে পাকিস্তানি সেনার প্রচারযন্ত্র হয়তো কিছুদিন আর নিজস্ব কল্পনার জাল বুনবে, সোশ্যাল মিডিয়ায় তাতেও উত্তাপ ছড়াবে। হয়তো সিন্ধু জল চুক্তি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় লড়াই চরমে উঠবে ভারতীয় ও পাকিস্তানিদের মধ্যে কিন্তু বাস্তব রাজনীতির পাটিগণিতে আবেগের দাম নেই। চিন এই মুহূর্তে নিজস্ব অর্থনৈতিক চাপে কিছুটা দিশেহারা; আমেরিকার সঙ্গে ট্যারিফ যুদ্ধ ও বাজারহানির চিন্তায় এখন হয়তো পাকিস্তানের কাঁধে হাত রাখতে দ্বিধা করবে চিন, বিশেষত ভারতের বিশাল বাজার হারানোর ঝুঁকিতে। আর আমেরিকা বর্তমানে ভূ-কৌশলগত ভারসাম্যের প্রশ্নে ভারতকে অন্যতম মিত্র মনে করে। ফলে, সে-ও পাকিস্তানের কোনও যুদ্ধাত্মক পদক্ষেপে সায় দেবে, এমন সম্ভাবনা ক্ষীণ।
এই পটভূমিতে, পাকিস্তান কী পথে এগোবে, তা শুধু দক্ষিণ এশিয়ার ভবিষ্যৎ নয়, বিশ্ব রাজনীতিরও দিক নির্ধারণ করতে পারে। কিন্তু, পাকিস্তানের সন্ত্রাস আর রাষ্ট্রীয় মদতের যুগ যে শেষের পথে, সেটা হলফ করে বলা যায়। তাই পাকিস্তান যদি এখনও আত্মসমীক্ষা না করে, তবে অপেক্ষা করছে শুধুই একাকীত্ব আর পতন।