পাকিস্তানের ড্রোন হামলায় অগ্নিদগ্ধ! পঞ্জাবের প্রৌঢ়ার মৃত্যুতে উঠছে যে প্রশ্ন

Pakistan Drone Attack: পাকিস্তানের ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় এখনও পর্যন্ত পঞ্জাবে দুইজন নিহত এবং ১০ জন আহত হয়েছেন।

অপারেশন সিঁদুরের পাল্টা আঘাত দিতে পাকিস্তান মুহুর্মুহু ড্রোন হামলা চালিয়েছে ভারতে। যুদ্ধবিরতির পরেও তা থেকেছে অব্যাহত। এই হামলা মূলত চলেছে জম্মু-কাশ্মীর, রাজস্থান ও পঞ্জাবের সীমান্তে। যুদ্ধে উলুখাগড়ার প্রাণ যায় চিরকালই, সেই তালিকা দীর্ঘায়িত করছে আরও কিছু সাম্প্রতিক মৃত্যু। পাকিস্তানের ড্রোন হামলায় পুড়ে গিয়ে প্রাণ গেল এক ভারতীয় মহিলার। ড্রোন হামলায় গুরুতর দগ্ধ হওয়ার পাঁচ দিন পর, ১৩ মে ভোরে পঞ্জাবের বাসিন্দা বছর ৫০-এর সুখবিন্দর কৌর মারা গেলেন।

গত ৯ মে রাতে তাঁদের বাড়িতে ড্রোন পড়ার পর সুখবিন্দর, তাঁর স্বামী লক্ষবিন্দর সিং এবং ছেলে যশবন্ত সিং গুরুতর দগ্ধ হন। কৌর পরিবারের বাস ফিরোজপুর জেলার খাই ফেমে কি গ্রামে। ড্রোন হামলায় ভয়াবহভাবে পুড়ে যাওয়ার পরে চিকিৎসকরা দগ্ধ হওয়ার পরিমাণ দেখে, সিদ্ধান্ত নেন সুখবিন্দর এবং লক্ষবিন্দরকে ফিরোজপুর থেকে লুধিয়ানার দয়ানন্দ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠানো হবে। পুত্র যশবন্ত অবশ্য ফিরোজপুরেই চিকিৎসাধীন ছিলেন। লুধিয়ানার হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে, প্রাণ হারালেন সুখবিন্দর।

হামলা-পাল্টা হামলার মধ্যে পড়ে ড্রোন বিস্ফোরণে দগ্ধ হওয়ার একাধিক ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। নানা ভিডিওতে দেখা গেছে কৌর পরিবারের বাড়ি, গাড়ি এবং অন্যান্য জিনিসপত্রের উল্লেখযোগ্য ক্ষতি হয়েছে। একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, গাড়িটি আগুনে একেবারে পুড়ে গেছে। গ্রামবাসীদের আহতদের বাঁচানোর এবং আগুন নেভানোর চেষ্টা করতেও দেখা গেছে অজস্র ভিডিওতে।

আরও পড়ুন- মোদি থাকতে কেন ট্রাম্প তড়িঘড়ি যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে দিলেন?

দ্য ওয়ারের একটি প্রতিবেদন অনুসারে, অপারেশন সিঁদুরের পর প্রতিশোধ হিসেবে পাকিস্তানের ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় এখনও পর্যন্ত পঞ্জাবে দুইজন নিহত এবং ১০ জন আহত হয়েছেন। ভারত সরকার যদিও এখনও পর্যন্ত বেসামরিক মৃত্যুর কোনও সরকারি পরিসংখ্যান দেয়নি। তবে জানা যাচ্ছে, পাঁচজন সেনাকর্মীর মৃত্যুর পাশাপাশি কমপক্ষে ২০ জন সাধারণ নাগরিক নিহত হয়েছেন দুই দেশের আঘাত-প্রত্যাঘাতের দ্বন্দ্বে।

এর আগে, ভাটিন্ডা জেলার আকলিয়া কালান গ্রামে এক হরিয়ানার এক শ্রমিক নিহত হন। ওই গ্রামে একটি যুদ্ধবিমানের ধ্বংসাবশেষ এসে পড়ে। এই ঘটনায় নয়জন আহত হন।

দ্য ওয়ারের ওই প্রতিবেদন বলছে, হরিয়ানার চরখি দাদরি গ্রামের বাসিন্দা গোবিন্দা বিস্ফোরণে প্রাণ হারান। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, গোবিন্দা সম্ভবত বিমানটি প্রথম দেখতে পেয়েছিলেন। ভিডিও রেকর্ড করার জন্য ছুটে গিয়েছিলেন তিনি। তারপরেই ঘটে বিস্ফোরণ, প্রাণ হারান গোবিন্দ।

পঞ্জাবের সীমান্তবর্তী জেলাগুলির মধ্যে একটি হলো ফিরোজপুর। ১০ মে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধবিরতি ঘোষিত হওয়ার পর গত তিন দিনে পাকিস্তান অজস্রবার ড্রোন আক্রমণ করেছে এই এলাকায়। পাঠানকোট, অমৃতসর, গুরুদাসপুর, তরন তারান, জলন্ধর, হোশিয়ারপুর এবং কাপুরথালার মতো অন্যান্য সীমান্তবর্তী জেলাগুলিতেও এই ধরনের ঘটনা ঘটতে দেখা গেছে।

১২ মে রাতে অমৃতসর, জলন্ধর এবং হোশিয়ারপুর জেলার কিছু অংশে ড্রোন দেখা যাওয়ার খবরের পর ভারতীয় বিমান বাহিনীর নির্দেশে জেলা প্রশাসন আংশিকভাবে ব্ল্যাকআউট করে। জম্মু অঞ্চলের কিছু অংশ থেকেও একই ধরনের খবর পাওয়া গেছে।

More Articles