স্বপ্নের শপিং মল! উদ্বোধনের দিনেই লুঠ পাকিস্তানে

Pakistan Shopping Bazar Loot: প্রত্যক্ষদর্শীদের অনেকেই দাবি করেছেন, শপিং মল উদ্বোধনের সময় নাকি চরম বিশৃঙ্খলতা তৈরি হয়েছিল। এরই মাঝে কিছু লোক লাঠি-পাথর নিয়ে সেখানে হাজির হন। ভাঙচুর চলে দোকানে।

বিদেশি ধাঁচে মস্ত বড় শপিং মল, তাতে দেদার ছাড়। সেই মল উদ্বোধন হতে না হতেই তাতে উপচে পড়ল ভিড়। না, কেনাকাটার জন্য নয়। বরং মুহূর্তে সব ভাঙচুর করে লুঠ হয়ে গেল সমস্ত জিনিসপত্র।

দেশে চরম আর্থিক অনটন। সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা তলানিতে। অবস্থা এমনই দু-বেলা খেয়ে পড়ে বেঁচে থাকাটাই এখন পাকিস্তানের মানুষের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ। চেষ্টা করেও খরচে লাগাম টানতে পারেনি সরকার। বরং মানুষের উপরেই নানা রকম ভাবে চাপ তৈরি করেছে তারা। দেনার দায়ে সরকারের অবস্থাও তথৈবচ। এরই মধ্যে খুব শিগগিরই আবার নোটবাতিলের পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। এই পরিস্থিতিতে যা হওয়ার তা-ই ঘটেছে।

বিরাট শপিং মল, তাতে উপচে পড়া জিনিস। যেসব জিনিস কেনার সামর্থ্য পড়শি দেশের বাসিন্দাদের আসলে নেই। ফলে চোখের সামনে যা পাওয়া যায়, লুটেপুটে নেওয়া ছাড়া আর কী-ই বা উপায়।

আরও পড়ুন: এবার নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত! দেনায় ডোবা পাকিস্তানের জন্যে কী অপেক্ষা করছে?

ড্রিম বাজার নামে করাচিতে একটি বিদেশি ধাঁচে শপিং মল তৈরি করেছিলেন পাকিস্তানি এক ব্যবসায়ী। তার সাধের স্বপ্নবাজারের যে এমন দশা হবে,তা কি দুঃস্বপ্নেও ভেবেছিলেন তিনি। উদ্বোধন হতে বা হতেই যেন ক্ষুধার্ত বাঘের মতো তার উপর ঝাঁপিয়ে পড়লেন বাসিন্দারা। দেদার জিনিস তুলে নিয়ে যে যেদিকে পারলেন, দিলেন ছুট। কার্যত দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখল পুলিশ। ওই জনস্রোতের সামনে কী-ই বা করার ছিল তাদের।

করাচির গুলিস্তান-এ-জোহরে ওই শপিং মলটি যিনি তৈরি করেছেন, তিনি জন্মসূত্রে পাকিস্তানের বাসিন্দা হলেও কর্মসূত্রে থাকেন বিদেশে। এই শপিং মলটি নিয়ে কম প্রচার চলেনি পাকিস্তান জুড়ে। উদ্বোধন জুড়েও সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক প্রচার চালানো হয়। ঘোষণা করা হয় দেদার ছাড়েরও, যাতে উপচে পড়ে ভিড়।

 

তা ভিড় উপচে পড়েছিল বটে। আকর্ষণীয় সব অফার দেখে শপিং মলে ভিড় করেছিলেন দলদল মানুষ। আর সেই ভিড় সামলাতে ব্যর্থ হন কর্তৃপক্ষ। উত্তেজিত জনতা ঝাঁপিয়ে পড়ে মলের দোকানে। মুহূর্তে লুট হয়ে যায় গোটা শপিং মল। তার একাধিক ভিডিও ভাইরালও হয়েছে সোশ্য়াল মিডিয়ায়। যা দেখে কার্যত বিস্মিত গোটা বিশ্ব।

প্রত্যক্ষদর্শীদের অনেকেই দাবি করেছেন, শপিং মল উদ্বোধনের সময় নাকি চরম বিশৃঙ্খলতা তৈরি হয়েছিল। এরই মাঝে কিছু লোক লাঠি-পাথর নিয়ে সেখানে হাজির হন। ভাঙচুর চলে দোকানে। চলতে থাকে অবাধ লুটপাট। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া ভিডিয়োগুলিতে দেখা গিয়েছে, দোকানে জনতার ভিড় আটকানোর আপ্রাণ চেষ্টা করেও ব্যর্থ হচ্ছে পুলিশ। তাঁদের ঠেলে ভিতরে ঢুকে পড়ছে ভিড়ের স্রোত। যে যার ইচ্ছে মতো জিনিসপত্র, পোশাক নিয়ে নিচ্ছেন। কেউ কেউ আবার সেলফিও তুলছেন দোকানের ভিতর। গোটা ঘটনার নীরব দর্শক পুলিশকর্মীরা। সূত্রের খবর, সবচেয়ে বেশি লুঠ হয়েছে ওই মলের পোশাকের দোকানগুলিতে।

আরও পড়ুন:৪৫ দিনে ১১ বিলিয়ন ডলার ধার! যে ভাবে ডুবছে পাকিস্তান

পাকিস্তানের এ হেন ঘটনা কার্যত অবাক করে দিয়েছে নেটদুনিয়াকে। আর্থিক পরিস্থিতি ঠিক কতটা খারাপ হলে এমন পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে একটা দেশে, উঠেছে প্রশ্ন। পাকিস্তানে সরকার রদবদল হয়েছে খুব বেশিদিন হয়নি। অথচ মানুষের অর্থনৈতিক অবস্থা ফেরাতে তেমন কোনও পদক্ষেপ করতে দেখা যায়নি সরকারকে। বরং ভবিষ্যতে আরও মানুষের উপর করের বোঝা চাপিয়ে সরকারের খরচ সামলানোর পরিকল্পনা রয়েছে শাসকের। এই পরিস্থিতি থেকে ঠিক কবে বেরোতে পারবে পাকিস্তান, নাকি আরও একটা বড় গণঅভ্যুত্থানেরই দিন গুনছে ভারতের পড়শিদেশ, ভাবাচ্ছে বিশ্বকে।

More Articles