দুই বছরের শিশুকে নিয়েই খাবার ডেলিভারি! স্তব্ধ করে দেয় এই শ্রমিকের জীবনকাহিনি

Swiggy Delivery Agent: ভিড়ের মাঝে নজর কেড়েছেন পঙ্কজ। পঙ্কজ খাবার ডেলিভার করেন। তবে অজস্র ডেলিভারি পার্টনারের ভিড়ে তাঁর গল্প আলাদা।

তীব্র দহনকাল। আলো ফোটা ইস্তক সূর্যের মারাত্মক তাপে ঝলসে যাচ্ছে চারপাশ। বেলা যত বাড়ে, মানুষের সংখ্যা কমে। তবু, ছুটে যায় কিছু বাইক। বাইকে সওয়ার যারা, পিঠে তাঁদের হয় জোমাটো বা ব্লিঙ্কইট বা বিগ বাস্কেটের ঝোলা। ১০ মিনিটে ডেলিভারির তাড়ায় ছুটতেই হবে, ঘেমে নেয়ে, লু সামলে। এমন তো কত লক্ষ শ্রমিকই কাজ করে চলেছেন। তবে ভিড়ের মাঝে নজর কেড়েছেন পঙ্কজ। পঙ্কজ খাবার ডেলিভার করেন। মূলত গুরগাঁও এলাকা তাঁর কর্মক্ষেত্রে। তবে অজস্র ডেলিভারি পার্টনারের ভিড়ে তাঁর গল্প আলাদা। কেন?

লিঙ্কডিনে সুইগির ডেলিভারি পার্টনার পঙ্কজের গল্পটি ভাইরাল হয়েছে। পঙ্কজ একা ডেলিভারি করেন না, তাঁর বাইকে, সঙ্গে থাকে তাঁর দুই বছরের ছোট্ট মেয়ে! গুরগাঁওয়ের এক সংস্থার সিইও মায়াঙ্ক আগরওয়াল নিজের অভিজ্ঞতা লিঙ্কডিনে এক পোস্টে শেয়ার করেন। ডেলিভারি এজেন্ট পঙ্কজের গল্প বলেন তিনি। একবার খাবার অর্ডার করেছেন। সময়েই এসে গেছে খাবার। ডেলিভারি পার্টনার পঙ্কজকে খাবারের অর্ডারটি উপরে পৌঁছে দিতে বলেছিলেন মায়াঙ্ক। কিন্তু ফোনে কথা বলার সময় একটি শিশুর কণ্ঠস্বর শুনে তিনি থেমে যান। বদলে তিনি নিজেই নীচে নেমে পঙ্কজের সঙ্গে দেখা করতে আসেন। দেখেন পঙ্কজের দুই বছরের ছোট্ট মেয়ে টুনটুন চুপচাপ বাইকে বসে আছে।

নিজে রোদে গরমে বাইকে দৌড়চ্ছেন। এত ছোট্ট বাচ্চাকে সঙ্গে নিয়েছেন কেন? পঙ্কজ জানান, মেয়েকে ডেলিভারির সময় সঙ্গে করেই নিয়ে যান তিনি কারণ ওই ছোট্ট শিশুর যত্ন নেওয়ার মতো বাড়িতে আর কেউ নেই। ছেলে যায় সান্ধ্যকালীন ক্লাসে এবং তাঁর স্ত্রী প্রসবের সময়ই মারা যান।

মায়াঙ্ক আগরওয়াল পোস্টে লিখেছেন, এত কঠিন পরিস্থিতি সত্ত্বেও, পঙ্কজ শান্তভাবে নিজের কাজ করে যান। তবে সব গ্রাহকের কাছে অবশ্য 'ব্যক্তিগত সমস্যার' কোনও মলম থাকে না। বাচ্চাকে বাবা কোথায় রাখবেন, বাচ্চাকে কোলে নিয়ে বহুতলে খাবার পৌঁছতে কষ্ট হবে কিনা, এত ছোট্ট বাচ্চার সারাক্ষণ বাইরে থাকায় শরীর খারাপ হবে কিনা এই নিয়ে বিব্রত নন অনেক মানুষ। পঙ্কজের মতো এমন অজস্র গিগ শ্রমিকদের জন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থার অপ্রতুলতা নিয়ে তবু, আবারও প্রশ্ন ওঠে। কর্মীদের শিশুদের জন্য ক্রেশ, শৌচাগার, চিকিৎসার সুবিধা এবং সর্বোপরি যথাযথ বেতন ও ছুটির নিয়ম নিয়ে সংশ্লিষ্ট আইন কেন্দ্রীয় স্তরে কবে বলবৎ হবে প্রশ্ন থেকেই যায়।

 

More Articles