পর্দায় বিশ্বকাপ জয়ের সেই তুফান, এখন কে কোথায় আছেন ৮৩-র কিংবদন্তিরা?

২৪ ডিসেম্বর প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে কবির খান পরিচালিত এবং রণবীর সিং অভিনীত ছবি '৮৩'। ইতিমধ্যেই নে দুনিয়ায় এই ছবি নিয়ে বহু মানুষ কথাবার্তা  বলছেন। ছবিটি তৈরি হয়েছে ১৯৮৩ ক্রিকেট বিশ্বকাপ নিয়ে। ক্লাইভ লয়েডের ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে কপিল দেবের ভারতীয় ক্রিকেট দলের সেই লড়াই সিনেমার পর্দায় ফুটিয়ে তুলেছেন পরিচালক কবির খান এবং তাঁর টিম। সিনেমা সমালোচকরা বলেছেন, ১৯৮৩ সালে ভিভিয়ান রিচার্ডস, ক্লাইভ লয়েড, ম্যালকম মার্শাল, গার্নারের ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে কপিল দেব, মহিন্দর অমরনাথ, সন্দীপ পাটিল, কৃষ্ণমাচারি শ্রীকান্ত, মদন লালদের লড়াইটা পুরোদস্তুর ফিরিয়ে আনতে পেরেছে এই চলচ্চিত্র। হ্যাঁ, ৮৩ এমন একটি সিনেমা, যার শুরুটা এবং শেষটা সকলেরই জানা। কিন্তু তারপরেও সিনেমা হলে বসে ১৯৮৩ এর ম্যাজিক মোমেন্ট দেখে গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠেছে আপামর দর্শকদের। 

বলিউডে খেলা নিয়ে সিনেমা এই প্রথম নয়। যদি একটু সময় সারণিতে চোখ রাখা যায়, তাহলেই দেখা যাবে আমির খানের জো জিতা ওহি সিকান্দার থেকে শুরু করে লগান, চক দে ইন্ডিয়া, মেরি কম, ইকবাল, পান সিং তোমার , সাইনা, ভাগ মিলখা ভাগ, এম এস ধোনি: দ্য আনটোল্ড স্টোরি সহ একাধিক সিনেমা রয়েছে স্পোর্টস ফিল্মের তালিকায়। কিন্তু ৮৩ আর পাঁচটা স্পোর্টস ফিল্মের মতো নয়। তার কারণ অবশ্য এই ছবির চিত্রনাট্য। সাধারণত বলিউডের সমস্ত খেলার ছবিতে একটা খেলার পাশাপাশি সেই ছবির প্রোটাগনিস্ট চরিত্রের জীবনের একটা গল্প বলা হয়। কখনও কখনও নিরুচ্চারেই থাকে জাতীয়তাবাদী শ্লাঘা। বলিউডের প্রত্যেকটি স্পোর্টস ফিল্ম এমন ভাবেই শেষ হয় যেন, প্রত্যেকটি প্রোটাগনিস্ট চরিত্রের এবং তার মানুষের জীবনের গল্প খেলার মাঠের সঙ্গে মিলে যায়। শেষ মুহূর্তে খেলার মাঠে জয় দিয়ে লেখা হয় গল্পের সমাপ্তি। 

কিন্তু, ৮৩ এই সমস্ত বলিউডি ধাঁচের স্পোর্টস ফিল্মের থেকে একেবারেই আলাদা। এই ছবিতে প্রধান জায়গাতেই আছে ১৯৮৩ সালে ভারতের বিশ্বকাপের জার্নি। এই ছবিটা দেখতে দেখতে আপনার মনে হবে, আপনি হয়তো স্টেডিয়ামে বসে ১৯৮৩ সালের বিশ্বকাপের আনন্দ উপভোগ করছেন। ব্রিটিশদের কাছে পাস চাইতে গিয়ে মান সিং এর অপমান থেকে শুরু করে, ব্রিটিশ সাংবাদিকদের অপমানজনক প্রশ্নে কৃষ্ণমাচারি শ্রীকান্তের রসিকতার ভঙ্গিতে যোগ্য জবাব দেওয়া, কপিল দেবরূপী রণবীর সিং এর দুর্দান্ত অভিনয় থেকে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে ইংল্যান্ড নিবাসী শিখদের নিখাদ জাতীয়তাবাদ সবকিছু নিয়েই এক কথায় অসাধারণ '৮৩'। ফিল্মের মাঝেমধ্যে দেখতে পাওয়া যায় ১৯৮৩ বিশ্বকাপের সময়কার সেই সমস্ত ম্যাচের কিছু স্টিল। তার সঙ্গেই রয়েছে একাধিক জাকসটাপোজ এবং পুরনো খেলার ক্লিপ, যা এই ছবিকে শুধুমাত্র একটা স্পোর্টস ফিল্ম না, করে তোলে ৮৩ বিশ্বকাপের জীবন্ত দলিল। এই ছবিতে ইতিহাসকে ছাপিয়ে যাওয়ার, অতি নাটকীয়তা যোগ করার, অত্যধিক মেলোড্রামাটিক কিছু করার চেষ্টা করা হয়নি। এই ছবিতে শুধুমাত্র দেখানো হয়েছে ১৯৮৩ বিশ্বকাপে চরম পরাক্রমশালী ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে ভারতীয় দলের লড়াই। এই ছবিতে কোন দাঁত নখ বার করা খলনায়ক নেই, তেমন কোনো ভিএফএক্স কিংবা মেলোড্রামাটিক গানও নেই। আছে শুধু ১১ জন ভারতীয়ের মাঠে আপ্রাণ লড়াই আর তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর দেওয়া সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বার্তার একটা মিশেল যা আপনাকে টাইম মেশিনে বসিয়ে সোজা নিয়ে যাবে ১৯৮৩-র ২৫  জুনে।

আরও পড়ুন-বিশ্বে মাত্র ১৫টি আছে! প্রধানমন্ত্রীর এই নতুন গাড়ি সর্বংসহা, কেন এই বাহন বাছলেন মোদী

৮৩ সিনেমাটি তো ইতিমধ্যেই দর্শক মহলে জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। কিন্তু, '৮৩' সিনেমার মূলে যারা আছেন, অর্থাৎ ১৯৮৩ বিশ্বকাপের যোদ্ধারা তারা এখন কে কোথায় আছেন জানেন? চলুন জেনে নেওয়া যাক কপিল দেব থেকে শুরু করে কীর্তি আজাদ যারা ভারতকে ১৯৮৩ বিশ্বকাপে জিতিয়ে বিশ্ব ক্রিকেটে ভারতের ধ্বজা তুলে ধরেছিলেন তাঁরা এখন কী করছেন।

কপিল দেব -

১৯৮২ থেকে ১৯৮৭ সাল পর্যন্ত ভারতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক ছিলেন কপিল দেব। ভারতীয় ক্রিকেট দল প্রথম তার অধিনায়কত্বে বিশ্বকাপ জয় লাভ করে। ভয়ঙ্কর ভিভিয়ান রিচার্ডসকে ছাপিয়ে গিয়ে ওই বিশ্বকাপে নিজের জাত চিনিয়েছিলেন কপিল দেব। ১৯৯৪ পর্যন্ত তিনি ভারতের হয়ে ক্রিকেট খেলেছেন। তার দুর্ধর্ষ বোলিং এবং ব্যাটিংয়ের দক্ষতার জন্য তিনি হরিয়ানা হারিকেন নামে পরিচিত ছিলেন। তাঁর ঝুলিতে রয়েছে ১৩১ ম্যাচে ৪৩৪ টি টেস্ট উইকেট। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার পরে কিছুদিনের জন্য ভারতীয় ক্রিকেট দলের কোচ হিসেবে কাজ করেছিলেন কপিল দেব। তবে বর্তমানে তিনি একজন ক্রিকেট বিশেষজ্ঞ এবং কমেন্টেটর হিসেবে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থায় কাজ করছেন। এছাড়াও, তিনি নিজের নামে রেস্তোরাঁও খুলেছেন। 

সুনীল গাভাস্কার -

১৯৮৩ ক্রিকেট বিশ্বকাপে সুনীল গাভাস্কার একেবারেই ফর্মে ছিলেন না। '৮৩ বিশ্বকাপে রান না করতে পারলেও ভারতীয় ক্রিকেট দলের হয়ে একাধিক ম্যাচে দুর্ধর্ষ পারফরম্যান্স করেছেন সুনীল গাভাস্কার। নিজের দক্ষতায় তিনি বহু ম্যাচ ভারতকে জিতিয়েছেন। ১৯৮৭ সাল পর্যন্ত ভারতীয় ক্রিকেট দলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন সুনীল গাভাস্কার। তারপরে মুম্বাই ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের সহ-প্রেসিডেন্ট, এবং বিসিসিআইয়ের অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব সামলেছেন সুনীল গাভাস্কার। এছাড়াও ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিলের ক্রিকেট কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবেও দায়িত্ব সামলেছেন গাভাস্কার। ক্রিকেটের সব থেকে বড় পণ্ডিতদের মধ্যে একজন হলেন সুনীল গাভাস্কার। বর্তমানে প্রফেশনাল মানেজমেন্ট গ্রুপের বোর্ড অফ ডিরেক্টরদের মধ্যে একজন সুনীল গাভাস্কার। এছাড়াও বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে কমেন্টেটর এবং ক্রিকেট বিশেষজ্ঞ হিসেবে আমরা সুনীল গাভাস্কারকে দেখতে পাই।

মোহিন্দর অমরনাথ -

১৯৮৩ সালের বিশ্বকাপজয়ী দলের সহ অধিনায়ক ছিলেন মহিন্দর অমরনাথ। ফাইনাল এবং সেমিফাইনালে ম্যাচের সেরা হয়েছিলেন মোহিন্দর। ফাইনালে মাত্র ১২ রান দিয়ে তিনি তিনটি বড় উইকেট দখল করেন এবং ২৬ রান করেন ব্যাট করে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার পর ১৯৯০ এর শুরুর দিকে অমরনাথ টেলিভিশনে একটি সাপ্তাহিক ক্রিকেট কোচিং শো করতেন, যার নাম ছিল, 'ক্রিকেট উইথ মহিন্দর অমরনাথ'। সেই সময় এই কোচিং শো বেশ জনপ্রিয় ছিল। বর্তমানে অমরনাথ পাকাপাকিভাবে গোয়ায় বসবাস করছেন এবং বিভিন্ন সংবাদ স্টেশনের ক্রিকেট অ্যানালিস্ট হিসেবে কাজ করছেন। ৮৩ ছবিতে আমরা তাঁকে দেখতে পেলাম তার বাবা লালা অমরনাথের ভূমিকায় অভিনয় করতে।

কৃষ্ণমাচারী শ্রীকান্ত -

১৯৮৩ সালের ভারতীয় ক্রিকেট দলের ওপেনার ছিলেন কৃষ্ণমাচারি শ্রীকান্ত। ১৯৮৩ সালের লো-স্কোরিং ফাইনালে সর্বোচ্চ ৩৮ রান করে সকলকে চমকে দিয়েছিলেন কৃষ্ণমাচারি শ্রীকান্ত। পুরো বিশ্বকাপে তিনি দুর্ধর্ষ ব্যাটিং করেছিলেন এবং একজন ওপেনারের ভূমিকা যথাযথভাবে পালন করেছিলেন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার পরে কিছুদিনের জন্য ভারতীয় ক্রিকেট দলের 'এ' টিমের প্রশিক্ষক হিসেবে কাজ করেছেন কৃষ্ণমাচারি শ্রীকান্ত। এছাড়াও এককালে ভারতীয় ক্রিকেট দলের সিলেক্টরদের মধ্যে একজন ছিলেন কৃষ্ণমাচারি শ্রীকান্ত। তার পরবর্তীতে একজন আইপিএল কনসালটেন্ট হিসেবে কাজ করেছিলেন তিনি। তারপরে তামিলনাড়ু প্রিমিয়ার লিগে কমেন্ট্রি করা এবং ২০১৮ সালের ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের সময়ে বিভিন্ন সংবাদপত্রে প্রতিবেদন লিখেছিলেন কৃষ্ণমাচারি শ্রীকান্ত। বর্তমানে তিনি নিজের ব্যবসার দিকে নজর দিয়েছেন।

মদন লাল -

১৯৮৩ বিশ্বকাপের ভারতীয় স্কোয়াডের অন্যতম সদস্য ছিলেন মদন লাল। ঐতিহাসিক ফাইনালে স্যার ভিভিয়ান রিচার্ডস, ল্যারি গোমস এবং ডেসমন্ড হায়নেসের উইকেট তুলে নিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের একেবারে মেরুদন্ড ভেঙ্গে দিয়েছিলেন মদন লাল। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার পরে কিছুদিনের জন্য সংযুক্ত আরব আমিরশাহির ক্রিকেট দলের কোচ হিসেবে নিযুক্ত হয়েছিলেন মদন লাল। যদিও পরবর্তীতে তিনি টেলিভিশনের একজন জনপ্রিয় ক্রিকেট বিশেষজ্ঞ হিসেবে কাজ করতে শুরু করেন। বর্তমানে নিউ দিল্লিতে সিরি ফোর্ট স্পোর্টস কমপ্লেক্সে একটি ক্রিকেট অ্যাক্যাডেমি চালান মদন লাল।

বলবিন্দর সন্ধু - 

সন্ধু ১৯৮৩ ভারতীয় ক্রিকেট টিমের একজন অন্যতম সদস্য ছিলেন যিনি ওই ফাইনালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিধ্বংসী ওপেনিং ব্যাটসম্যান গর্ডন গ্রিনিজ এর উইকেট তুলে নিয়েছিলেন। এক দিবসীয় ম্যাচের একজন অন্যতম খেলোয়াড় ছিলেন সন্ধু। আন্তর্জাতিক স্তর থেকে অবসর নেওয়ার পর ১৯৯০ এর দশকে তিনি মুম্বইয়ের দলকে প্রশিক্ষণ দিয়েছিলেন। কিন্তু তারপর তাঁকে আর কোথাও দেখা যায়নি। ৮৩ ছবিটি করার জন্য সন্ধুকে প্রশিক্ষণের জন্য আমন্ত্রণ জানান টিম কিউরেটররা।

যশপাল শর্মা -

১৯৮৩ সালের ভারতীয় টিমের অন্যতম ব্যাটসম্যান ছিলেন যশপাল শর্মা। প্রথমদিকে ম্যাচে যশপালের একাধিক দুর্দান্ত ইনিংসের জোরে ভারতীয় ক্রিকেট দল বিরোধী দলকে পরাজিত করে। ১৯৮৩ বিশ্বকাপের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান অধিকারী ছিলেন যশপাল শর্মা। বেশ কয়েকটি ম্যাচে তিনি ম্যাচের সেরাও হয়েছিলেন। তার পরবর্তীতে ভারতীয় ক্রিকেট দলের সর্বোচ্চ সিলেক্টরদের মধ্যে একজন ছিলেন যশপাল শর্মা। এই বছরের জুলাই মাসে তিনি পরলোকগত হয়েছেন। 

সৈয়দ কিরমানী - 

১৯৮৩ বিশ্বকাপের সবথেকে ভালো উইকেট-রক্ষক ছিলেন কিরমানি। শুধুমাত্র ১৯৮৩ বিশ্বকাপ নয়, ভারতীয় ক্রিকেট দলের সবথেকে ভালো উইকেটকিপারদের তালিকায় একেবারে উপরের দিকেই থাকেন সৈয়দ কিরমানি। ১৯৮৫ সালে তিনি বলিউডে ডেবিউ করেছিলেন কাভি আজনাবি থে সিনেমার মাধ্যমে। ২০১৫ সালে তাকে সি কে নাইডু লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট সম্মানে ভূষিত করা হয়।

কীর্তি আজাদ -

১৯৮৩ ক্রিকেট বিশ্বকাপে ভারতীয় দলের একজন মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান ছিলেন কীর্তি আজাদ। ১৯৮৬ সালে ক্রিকেটের সমস্ত ফরম্যাট থেকে অবসর নেওয়ার পর তিনি তার বাবার জুতোয় পা গলিয়ে রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করেন। কীর্তি আজাদের পিতা ভগবত ঝা আজাদ ছিলেন বিহারের পূর্ব মুখ্যমন্ত্রী এবং একজন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। কীর্তি আজাদ পরবর্তীতে কংগ্রেসের সঙ্গে যুক্ত হয় দীর্ঘদিন একজন সাংসদ হিসেবে কাজ করেছেন। পরবর্তীতে দলবদল করে তিনি তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে যোগদান করেন।

রবি শাস্ত্রী -

১৯৮৩ ক্রিকেট বিশ্বকাপে রবি শাস্ত্রী একজন অলরাউন্ডারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন। ২০১৪ সালে তিনি ভারতীয় জাতীয় দলের ডিরেক্টর হিসেবে নির্বাচিত হন। তার পরবর্তীতে দীর্ঘ পাঁচ বছর তিনি ভারতীয় দলের কোচ হিসেবে কাজ করেছেন। সম্প্রতি তিনি অবসর নেওয়ার পর তার ফেলে যাওয়া আসনে বসেছেন রাহুল দ্রাবিড়।

রজার বিনি - 

১৯৮৩ ক্রিকেট বিশ্বকাপে রজার বিনি ছিলেন একজন অলরাউন্ডার। ১৯৮৩ বিশ্বকাপে তার বোলিং এর মাধ্যমে সকলকে চমকে দিয়েছিলেন রজার। এই বিশ্বকাপে সর্বাধিক উইকেট গ্রহণকারী বোলার ছিলেন রজার বিনি। বর্তমানে তিনি কর্ণাটক স্টেট অ্যাসোসিয়েশন এক্সিকিউটিভ কমিটির একজন সদস্য।

সন্দীপ পাটিল -

বিশ্বকাপ জয়ী ১৯৮৩ ভারতীয় জাতীয় দলের একজন পিঞ্চ হিটার ছিলেন সন্দীপ পাটিল। যশপাল শর্মার সঙ্গে একসাথে বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলে ১৯৮৩ বিশ্বকাপে ভারতকে বহু ম্যাচে জিতিয়েছেন সন্দীপ। ১৯৮৫ সালে সাইয়েদ কিরমানি এবং শচীন টেন্ডুলকারের সঙ্গে কাভি আজনাবি থে সিনেমার মাধ্যমে বলিউডে ডেবিউ করেন সন্দ্বীপ। ভারতীয় এ দলের কোচ হিসেবেও দায়িত্ব সামলেছেন সন্দ্বীপ পাটিল। এছাড়াও কেনিয়া দলের কোচ এবং বিসিসিআইয়ের চেয়ারম্যান অফ সিলেকশন হিসেবে এর আগে কাজ করেছেন সন্দীপ পাটিল।

দিলীপ বেংসরকার -

১৯৮৩ বিশ্বকাপের দিলীপ বেংসরকার অত্যন্ত ছোট এবং গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করেছিলেন। চতুর্থ ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে খেলার সময় তার বাঁ দিকের চোয়ালে বল লাগে, এবং তিনি টুর্নামেন্ট থেকে বাদ পড়ে যান। যদিও পরবর্তীতে ১৯৮৭ সালে কপিল দেব অধিনায়কত্ব ছাড়ার পর তিনি হয়েছিলেন ভারতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক। বর্তমানে তিনি তিনটে ক্রিকেট অ্যাকাডেমি চালান, দুটি মুম্বাইয়ে এবং একটি পুনেতে। এই তিনটি অ্যাকাডেমিতে ভালো খেলোয়াড়দের বিনামূল্যে ক্রিকেট শেখানো হয়।

সুনীল ভালসন -

১৯৮৩ বিশ্বকাপে ভারতীয় দলের সদস্য হলেও তিনি ছিলেন একমাত্র প্লেয়ার যিনি কোনো ম্যাচ খেলেননি। যদিও ভারতীয় দলের সদস্য হিসেবে বিশ্বকাপে কিছু করতে না পারলেও, অন্যান্য ম্যাচে ভালো পারফর্মেন্স করেছিলেন সুনীল। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার পর তিনি খুব একটা চর্চার মধ্যে ছিলেন না। সম্প্রতি আইপিএলের দিল্লি ক্যাপিটালস তাকে স্কোয়াড ম্যানেজার হিসেবে নিযুক্ত করার পরে আবারো তিনি সংবাদ শিরোনামে আসেন।

More Articles