বিশ্বকাপের হার কি এখনও কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে? যে কারণে ‘হিরো’ থেকে ‘ভিলেন’ হলেন এমবাপে

Kiliyan Mbappe : বিশ্বকাপ ফাইনালে স্পটকিক থেকে টুর্নামেন্ট সেরা গোলকিপার এমিলিয়ানো মার্টিনেজকে তিন-তিনবার পরাস্ত করেছিলেন যে খেলোয়াড় সেই কিনা নিমেষে মিস করল পেনাল্টি। এত ভালো পজিশন পেয়েও কোথায় হারিয়ে গেল সেই ম্যাজিক...

বিশ্বকাপ নামক উত্তেজনা কেটে গিয়েছে অনেক দিন হল। এবছরের বিশ্বকাপের পরতে পরতে ছিল মেসি ম্যাজিক। তবে ফাইনালের শেষ রাত মনে পড়লে অবশ্য শুধু মেসি নয়, একের পর এক তারকার ছবি চোখের সামনে ভেসে ওঠে। ভুলে গেলে চলবে না গোল্ডেন বল মেসি পেয়েছিল ঠিকই তবে গোল্ডেন বুটের অধিকারী কিন্তু হয়েছিল বিপক্ষের হিরো কিলিয়ান এমবাপে। হিরো না বলে ট্র্যাজিক হিরো বলাই শ্রেয়। নাহলে ফাইনালের রাতে অমন দুর্ধর্ষ খেলার পরও জয়ের শিরোপা জুটল না ফ্রান্সের। তিন তিনটে গোল একাই সেদিন করেছিল এমবাপে। দলকে পৌঁছে দিয়েছিল পেনাল্টির দোরগোড়ায়। সেখানেও অনবদ্য ফর্মে ছিলেন ট্র্যাজিক হিরো, একটা শর্ট, বল জালে জড়িয়ে গিয়েছিল নিমেষে।

অবশ্য সেই ছবিটা ফিকে হয়েছে এতদিনে। প্রতিপক্ষের আসন বদলে আবার একই দলে খেলতে নেমেছে মেসি, এমবাপে। বিশ্বকাপের পর আবার পিএসজির জার্সিতে একসঙ্গে মাঠে নামেন তিন মহাতারকা - লিওনেল মেসি, নেইমার জুনিয়র এবং কিলিয়ান এমবাপ্পে। তবে এমন তিন জন এক পক্ষে থেকেও কোথাও যেন প্রথম থেকেই ফিকে লাগছিল খেলা। সেই ম্যাজিকটি যেন নেই। পয়েন্ট টেবিলে ক্রমশ পিছিয়ে পড়তে থাকে পিএসজি। যদিও ফরাসি মিডিয়া এর দায় চাপাতে থাকে মেসি এবং নেইমারের ওপরই। অন্য দিকে এমবাপেকে নিয়ে কার্যত মুখে কুলুপ দেন তাঁরা। অথচ ম্যাচের দিকে ফিরে তাকালে দেখা যাবে মেসির গোলের খাতা কখনওই শূন্য থাকেনি।

এবার এই বিতর্ককে আরও উস্কে দিল গতকালের ম্যাচের ফলাফল। যে এমবাপেকে এতদিন পেনাল্টিতে অপ্রতিরোধ্য বলে জানতেন সকলে, সেই এমবাপে এবার হারালো পুরনো গৌরব। একটা নয় পরপর দুটো পেনাল্টি মিস করল কিলিয়ান এমবাপে। যদিও খেলার ফলাফল অবশ্য ছিল পিএসজি-এর পক্ষেই। পয়েন্ট টেবিলেও ঘুরে দাঁড়িয়েছে পিএসজি। এখানেও কাজ করে সেই মেসি ম্যাজিক। যদিও তার সঙ্গে আরও দুই তারকার অনবদ্য দুই গোলের অবদান অস্বীকার করা যায় না। ফরাসি মিডিয়ার তোপ ধোপে টেকে না।

এমবাপের কোনও অবদান ছাড়াই পিএসজি ৩-১ গোলে লিগা ওয়ানে উড়িয়ে দিল মন্তেপেঁয়িকে। ম্যাচের প্রথমার্ধে কোনও গোলই করতে পারেনি উভয়পক্ষ। অবশেষে দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে পিএসজিকে এগিয়ে দেন স্প্যানিশ মিডফিল্ডার ফ্যাবিয়েন লুইজ। ৭২ মিনিটে মেসি ২-০ করেন দুরন্ত গোলে। নর্দিন ৮৯ মিনিটে ব্যবধান কমালেও সংযোজিত সময়ে পিএসজির হয়ে ৩-১ করে যান জাইরে এমেরি।

আরও পড়ুন - ফ্রান্সের ফুটবল ছেড়ে এবার বার্সেলোনায় ফিরে আসা? লিওনেল মেসিকে ঘিরে ফের জল্পনা শুরু

মোট কথা ফর্মে নেই এমবাপে। ফরাসি মিডিয়া এই নিয়ে বিশেষ বাক্যালাপ না করলেও এটাই সত্যি। না হলে বিশ্বকাপ ফাইনালে স্পটকিক থেকে টুর্নামেন্ট সেরা গোলকিপার এমিলিয়ানো মার্টিনেজকে তিন-তিনবার পরাস্ত করেছিলেন যে খেলোয়াড় সেই কিনা নিমেষে মিস করল পেনাল্টি। এত ভালো পজিশন পেয়েও কেন হারিয়ে গেল সেই ম্যাজিক। তবে কি এখনও ভিতরে ভিতরে বিশ্বকাপের হার কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে ফরাসি খেলোয়াড়কে। এখনও সেই আঘাত সেরে ওঠেনি বলেই নিজের পুরনো ম্যাজিকের লেশমাত্রও দেখা যাচ্ছে না খেলায়? এদিন কার্যত খোঁড়াতে খোঁড়াতে মাঠ ছাড়েন এমবাপে।

অন্যদিকে মেসির খেলা আবারও নজর কাড়ল। গোল একটা করেছেন ঠিকই তবে, খেলা তৈরি করেছেন তিনিই। মাঠ সাজিয়ে দিয়েছেন, অথচ কাজে লাগাতে পারেনি এমবাপে। খেলা শুরুর সাত মিনিটের মাথায় মাঝমাঠে ফ্রি কিক আদায় করে নিয়েছিলেন মেসি। মেসির ফ্রি কিকের সময় রামোসকে বক্সের মধ্যে ফাউল করে বসেন হুলিয়েন। ব্যাস ফল স্বরূপ জুটে যায় পেনাল্টি। আর পেনাল্টি মানেই চোখ বুঝে সেই সুযোগ চলে যায় এমবাপের কাছে। কিন্তু একবার নয় পেনাল্টি রি টেক হলেও মর্যাদা রক্ষা করতে পারেন না এমবাপে। উপরন্তু জোড়া পেনাল্টি মিস-এর পর কুড়ি মিনিটের মাথায় পায়ে চোট পেয়ে মাঠ ছাড়তে হয় এমবাপেকে।

More Articles