নিয়োগ দুর্নীতি কাকে বলে, শিখিয়েছে মধ্যপ্রদেশ! কেন ব‍্যাপম কেলেঙ্কারির কথা মনে করাচ্ছেন মমতা

Vyapam Scam: কী এই ব‍্যাপম কেলেঙ্কারি?

মোটা টাকা ঘুষ দিয়ে হয়েছে শিক্ষক নিয়োগ, সাদা খাতা জমা দিয়েই মিলেছে চাকরি, যোগ্য হওয়া সত্ত্বেও স্রেফ মন্ত্রীর মেয়ে নন বলে তালিকায় নিচে নেমে গিয়েছে নাম। এই সমস্ত অভিযোগ নিয়ে যখন রাজ্য রাজনীতি তোলপাড়, কালিমালিপ্ত শাসক দলের প্রতিচ্ছবি, তখন বিজেপি-শাসিত মধ্যপ্রদেশের ব্যাপম কেলেঙ্কারির কথা মনে করিয়ে দিয়ে বিরোধী শিবিরকে পাল্টা খোঁচা মারলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর দাবি, সরকারে থেকে কাজ করতে গেলে কোথাও না কোথাও কিছু না কিছু ভুল হতেই পারে। ব্যাপম কেলেঙ্কারির সময় সে-রাজ্যের তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রীকে গ্রেফতার করা হয়নি কেন? কেন এই কেলেঙ্কারি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে বারবার? সেই প্রশ্ন তুলে এবার মধ্যপ্রদেশের বিজেপি সরকারকে একহাত নিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

নিয়োগ দুর্নীতি মামলা নিয়ে এই মুহূর্তে জেলে রয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী তথা তৃণমূলের প্রাক্তন মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তৃণমূল থেকে কার্যত তিনি এই মুহূর্তে অপসৃতই বলা চলে। জোচ্চুরি সামনে আসার পর, তাঁর সমস্ত জারিজুরির অবসান ঘটিয়েছেন মমতা নিজেই। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের গ্রেফতারির দরুন ঘরে-বাইরে মুখ পুড়ছে শাসকদলের। একের পর এক আক্রমণ ধেয়ে আসছে বিরোধীদের তরফ থেকে। কিন্তু এত সহজে কি হাল ছেড়ে দেবেন মমতা? একেবারেই না। আর সেই বিষয়টাই তিনি স্পষ্ট করে দিলেন শিক্ষারত্ন সম্মান প্রদান অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকে।

এই বক্তৃতায় মমতার গলায় প্রথম থেকেই ছিল বিরোধী বিরোধিতার সুর। উঠে এল ব্যাপম কেলেঙ্কারির প্রসঙ্গ। মধ্যপ্রদেশে যে সংস্থার গ্রহণ করা পরীক্ষার মাধ্যমে চাকরিতে নিয়োগ হয়, সেই সমস্যার বিরুদ্ধেই বছর কয়েক আগে উঠেছিল দুর্নীতির অভিযোগ। সংস্থার আধিকারিকদের বিরুদ্ধে উঠেছিল ঘুষ নেওয়ার অভিযোগও। ভুয়ো পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা দেওয়ার পাশাপাশি একাধিক অভিযোগের আঙুল উঠেছিল সে-রাজ্যের সরকারের বিরুদ্ধে। মধ্যপ্রদেশের গদিতে সেই সময় বিজেপি। অনেক রাজনৈতিক নেতার নামও জড়িয়ে ছিল সেই মামলায়। দীর্ঘদিন ধরে এই দুর্নীতির অভিযোগ থাকলেও, ২০১৩ সালে পূর্ণমাত্রায় সামনে আসে এই কেলেঙ্কারির ঘটনা। আর সেই ঘটনার কথা মনে করিয়ে দিয়ে বক্তৃতা মঞ্চ থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, "মধ্যপ্রদেশে ব্যাপম কেলেঙ্কারি হয়েছিল, আপনারা সবাই দেখেছেন তো? ওখানকার শিক্ষামন্ত্রীকে গ্রেফতার করা হয়েছে? ওখানে কিন্তু ৫৪ জন আত্মহত্যা করেছিলেন।"

আরও পড়ুন: ভাঙলেন এক দশকের নীরবতা, অতল থেকে এবার উঠছেন সুদীপ্ত-সহযোগী দেবযানী!

যদিও তৃণমূলের মুখে ব্যাপম কেলেঙ্কারি নিয়ে কটাক্ষ এই প্রথম নয়। মাসচারেক আগে পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল কংগ্রেস সরকারের বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর বক্তৃতাতেও উল্লেখযোগ্য স্থান করে নিয়েছিল এই ব্যাপম কেলেঙ্কারি। বিকাশ ভবনে অভিযানকারী বিজেপির ছাত্র-যুবদের উদ্দেশ্যে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু কটাক্ষ করে বলেছিলেন, "যারা ব্যাপম কেলেঙ্কারির সঙ্গে যুক্ত, তারা নাকি আবার আমাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ করছে।"

কী এই ব্যাপম কেলেঙ্কারি?
স্বাধীন ভারতে ঘটে যাওয়া সবচেয়ে নক্কারজনক কয়েকটি দুর্নীতির মধ্যে একটি হলো এই ব্যাপম কেলেঙ্কারি। বিজেপির ডবল ইঞ্জিন-শাসিত মধ্যপ্রদেশ সাক্ষী থেকেছে এই কেলেঙ্কারির। মধ্যপ্রদেশে সরকারের অধীনস্থ সংস্থা মধ্যপ্রদেশ প্রফেশনাল একজামিনেশন বোর্ড, সরকারি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষা-সহ ইঞ্জিনিয়ারিং এবং মেডিক‍্যালের প্রবেশিকা পরীক্ষা-জাতীয় সমস্ত পরীক্ষাগুলির আয়োজন করে থাকে। আর এই পরীক্ষা গ্রহণের দায়িত্বে থাকে একটি বিশেষ সংস্থা। হিন্দিতে এই সংস্থার নাম হলো, ব্যবসায়িক পরীক্ষা মন্ডল। তবে সংক্ষেপে ব্যাপম নামেই এই সংস্থাটি বেশি পরিচিত।

এই বিশেষ সংস্থার মাধ্যমেই মধ্যপ্রদেশে ঘটেছে নানাবিধ নিয়োগ-সহ বিভিন্ন দুর্নীতির কারবার। একটা সময় সম্পূর্ণ মধ্যপ্রদেশে রীতিমতো জাঁকিয়ে বসেছিল বেনিয়ম। রীতিমতো টাকার বিনিময়ে বিক্রি হতো সরকারি চাকরি। যে যত বেশি টাকা দিত, সে-ই পেয়ে যেতেন সরকারি চাকরি। আর শুধু সরকারি চাকরি কেন, এই সংস্থাটির মাধ্যমে করা হয়েছিল একাধিক দুর্নীতি, যার জাল বিস্তৃত ছিল রাজ্যে কোনায় কোনায়। বিজেপির মন্ত্রী, নেতা, বিধায়ক, সাংসদ, আমলা, সরকার-ঘনিষ্ঠ বিরোধী শিবিরের নেতা-নেত্রী সবাই জড়িত ছিলেন এই কেলেঙ্কারির সঙ্গে। টাকার বিনিময়ে দেদার বিক্রি হতো চাকরি।

পরীক্ষার নামে ঘটানো হতো রীতিমতো একটা জালচক্র। তদন্তে উঠে আসে, যিনি এতদিন ডাক্তার হিসেবে চেম্বার খুলে রোগী দেখছেন, তাঁর কোনও ডাক্তারির লাইসেন্সই নেই। লাইসেন্স তো দূর অস্ত, কয়েকজন এমনও ছিলেন, যাঁরা কিনা প্রবেশিকা পরীক্ষাতেই কখনও বসেননি। একই কথা প্রযোজ্য হয়েছিল অসংখ্য ইঞ্জিনিয়ারের ক্ষেত্রেও। ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে চাকরি করছেন যিনি, তিনি নাকি কখনও ইঞ্জিনিয়ারিং-এর প্রবেশিকা পরীক্ষাতেই বসেননি।

২০১৫ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে সাত বছরে এই কেলেঙ্কারির কলঙ্ক ঘোচাতে দু'বার নাম পর্যন্ত পরিবর্তন করতে বাধ্য হয়েছিল দিল্লির শিবরাজ সিং চৌহান সরকার। ২০১৫ সালে নাম পরিবর্তন করে হয়েছিল প্রফেশনাল একজামিনেশন বোর্ড মধ্যপ্রদেশ, এবং ২০২২ সালে নাম পরিবর্তন করা হয় কর্মচারী চয়ন আয়োগ (স্টাফ সিলেকশন বোর্ড)।

সরকারি চাকরিতে নিয়োগ প্রক্রিয়া এবং চয়ন ও প্রবেশিকা পরীক্ষা মিলিয়ে সর্বমোট ১৩ ধরনের পরীক্ষায় দুর্নীতি হয়েছিল এই ব্যাপমের নেতৃত্বে। মেডিক‍্যাল প্রবেশিকা পরীক্ষা-সহ মধ্যপ্রদেশ সরকারের বিভিন্ন দফতরের সরকারি কর্মচারী নিয়োগের ক্ষেত্রে হয়েছিল দুর্নীতি। পুলিশ ইন্সপেক্টর থেকে খাদ্য দফতরের ইন্সপেক্টর, দুগ্ধ সরবরাহ দফতরের আধিকারিক থেকে বনরক্ষা বিভাগের কর্মী, এমনকী, স্কুল শিক্ষক থেকে পরিবহণ কনস্টেবল, সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছিল এই দুর্নীতির জাল। পরীক্ষার ফলাফলে কারচুপি করে টাকার বিনিময়ে অন্যান্য অযোগ্য প্রার্থীদের করা হয়েছিল নিয়োগ।

এই নিয়োগ প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত সরকারি আধিকারিকদের হাতে রাখার জন্য ব্যবস্থা ছিল নানারকম উৎকোচের। উত্তরপত্র জাল করা থেকে শুরু করে ভুয়ো পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষায় বসানো, অর্থের মাধ্যমে করা হয়েছিল একাধিক বেনিয়ম। আর এই গোটা কেলেঙ্কারির সঙ্গে যুক্ত ছিল মধ্যপ্রদেশের প্রফেশনাল একজামিনেশন বোর্ড ব্যাপম। বোর্ডের সদস্য থেকে শুরু করে আধিকারিক- সকলেই ছিলেন এই কুকর্মের অংশীদার।

আনন্দ রাই এবং আশিস চতুর্বেদি হলেন এই কুখ্যাত কেলেঙ্কারির পর্দা ফাঁসের নায়ক। ২০০৯ সালে তাঁদের দায়ের করা একটি পিআইএল-এর পরিপ্রেক্ষিতে ব্যাপম কেলেঙ্কারির তদন্ত শুরু করা হয়। তিনি সরাসরি দুর্নীতিবাজদের টার্গেটে পরিণত করেন, আর নিয়মিত প্রাণনাশের হুমকি পেতে শুরু করেন। এমনকী, ২০২২ সালের এপ্রিল মাসে মধ্যপ্রদেশ পুলিশের অপরাধ দমন শাখা তাঁকে একাধিকবার গ্রেফতারও করেছে মিথ্যে মামলায়।

তবে বলতে গেলে এই কেলেঙ্কারির তদন্ত শুরু হয় ২০১১ সাল থেকে। এই কেলেঙ্কারি নিয়ে চাপে পড়ার পর ২০১১ সালে বিজেপি-শাসিত ডবল ইঞ্জিন রাজ্য মধ্যপ্রদেশের শিবরাজ সিং চৌহান সরকার তদন্ত কমিটি গঠন করেন। মধ্যপ্রদেশের মেডিক‍্যাল এডুকেশন-এর যুগ্ম পরিচালকের নেতৃত্বে ওই তদন্ত কমিটি এই পুরো মামলার অনুসন্ধান শুরু করে। ১০০-র বেশি সংখ্যক মানুষকে হেফাজতে গ্রহণ করা হলেও কাউকেই অভিযুক্ত করা হয়নি। ২৬ অগাস্ট, ২০১৩ সালের মধ্যপ্রদেশ সরকার একটি বিশেষ টাস্ক ফোর্স গঠন করে এই মামলার তদন্ত করার জন্য। ২০১৩ সালের নির্বাচনের ছয় মাস আগে মধ্যপ্রদেশে বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান ঘোষণা করেন, সিবিআই নাকি তাঁকে এই কেলেঙ্কারিতে ক্লিনচিট দিয়েছে। ২০১৫ সালের জুন মাস পর্যন্ত প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী লক্ষ্মীকান্ত শর্মা-সহ ২,০০০ জনের বেশি সন্দেহভাজনকে প্রতারণার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে আটক করা হয়েছিল। ২০১৫ সালে হাই কোর্টে জমা দেওয়া স্পেশাল টাস্ক ফোর্সের রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়, রহস্যজনকভাবে ২৩ জনের মৃত্যু হয়েছিল। প্রথমে এই তথ্য গোপন রাখা হলেও, পরবর্তীকালে হঠাৎ করে এই চার্জশিটে উঠে আসে এই নথি।

২০১৫ সালে জুলাই মাসে ব্যাপম কেলেঙ্কারির তদন্তভার চলে যায় সিবিআই-এর হাতে। ‌২০২২ সালের জুলাই মাসে ইন্দোরের সিবিআই আদালত ২০০৯ সালের ব্যাপম কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্ত পাঁচ জনকে দোষী সাব্যস্ত করে ৭ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করে। অন্যদিকে উপযুক্ত প্রমাণের অভাবে একজনকে ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় সিবিআই-এর আদালতের তরফ থেকে। তবে সেই কেলেঙ্কারির কোনও আঁচ গিয়ে পড়ে না সে-রাজ্যের নেতা-মন্ত্রীদের ওপর। ফলে প্রশ্ন ওঠে সিবিআই-এর ভূমিকা নিয়ে।

সুনীতি-দুর্নীতি
২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার পর তাঁর প্রথম স্বাধীনতা দিবসের ভাষণে জাতির উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদি তাঁর দৃপ্ত কন্ঠে বার্তা দিয়েছিলেন, 'না খাউঙ্গা, না খানে দুঙ্গা', অর্থাৎ, নিজেও ঘুষ খাব না এবং কাউকে খেতেও দেব না। পরবর্তী বছর স্বাধীনতা দিবসের বক্তৃতাতে তিনি বলেছিলেন, ১৫ মাসে ১৫ পয়সা দুর্নীতিও হয়নি সারা ভারতে। কিন্তু, দেখতে গেলে সেই সময়েই বিজেপি-শাসিত মধ্যপ্রদেশে সামনে এসেছিল ব্যপম কেলেঙ্কারির ঘটনা। এই প্রথম যে এরকম বড় কোনও দুর্নীতির ঘটনা ভারত দেখছে সেটা নয়। প্রতাপশালী রাজনীতি থেকে শুরু করে মহাকোটিপতি ব্যবসায়ীদের দুষ্টচক্র, সবকিছুই আমাদের অত্যন্ত পরিচিত। আর তদন্ত চলাকালীন অভিযুক্ত বা সাক্ষী খুন? এটা তো আকছার ঘটেই থাকে ভারতে। তাই কলেজে ভর্তির পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা এই ব্যাপম কেলেঙ্কারি ছিল স্রেফ দুর্নীতির একটি নতুন জটিল আবর্ত। অনেকেই বলতে পারেন, এ আর নতুন কী! দেশটার নাম যখন ভারত, তখন মঙ্গলবারে যেটা নীতি, বুধবারে সেটাই দুর্নীতি। আর বৃহস্পতিবার সেটা সুনীতি।

ভারতে যতরকম ক্ষমতার অপব্যবহার মানুষ দেখেছে, সরকারি চাকরিতে বা ডাক্তারের মতো উচ্চশিক্ষাক্ষেত্রে ঘুষ নিয়ে ভর্তির যত উদাহরণ এখনও পর্যন্ত ভারতে রয়েছে, সবকিছুকেই ছাপিয়ে গিয়েছিল এই ব্যাপম কেলেঙ্কারি। এই মামলায় অভিযুক্ত বা সন্দেহভাজন অন্তত ৪৩ জনের অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। অনেকে বলেন, এই সংখ্যাটা সরকারি রিপোর্টের প্রায় দ্বিগুণ। মৃতের তালিকায় যাঁরা ছিলেন, তাঁরা মেডিক‍্যাল কলেজে ভর্তি হওয়ার জন্য অথবা নিচুতলার সরকারি চাকরি পাওয়ার জন্য নেতাদের হাতে টাকা দিয়েছিলেন, এই রাজ্যের বিরোধী দলের ভাষায়, জমি-বাড়ি বিক্রি করেই। এই মামলায় জড়িয়ে ছিলেন মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান, তৎকালীন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী উমা ভারতী, রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের দুই কর্মকর্তা সুরেশ সোনি ও প্রভাত ঝা, বিজেপি-র সর্বভারতীয় মুখপাত্র শতাংশ মিত্তাল সহ আরও অনেকে।

সুপ্রিম কোর্ট ৬৩৪ জন ডাক্তারের ডিগ্রি বাতিল করে দিয়েছিল ঠিকই, কিন্তু এই কেলেঙ্কারির রহস্যের পর্দা কিন্তু ১৩ বছর পরেও খোলেনি। কেন খোলেনি? এত বড় দুর্নীতি হয়ে যাচ্ছে, আর মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান কিছু বুঝতেই পারলেন না? ক'জন বিজেপি নেতাকে এই মামলায় কাঠগড়ায় উঠতে হয়েছিল? ক'জন বিজেপি নেতাকে জেলে যেতে হয়েছিল? ক'জনের বিরুদ্ধে সোশ্যাল মিডিয়াতে ছড়িয়েছিল কুরুচিকর সো-কল্ড ইন্টেলেকচুয়াল মিম? আসলে, বিজেপির পুরনো, বা নতুন, কোনও গোত্রের নেতার দুর্নীতিই সিবিআই খুঁজে পায় না। বরং এমনই তদন্তের অবস্থা হয় যে, প্রমাণের অভাবে অভিযুক্ত জেল থেকে ছাড়া পেয়ে যান। তদন্তভার পাওয়ার আগেই মুখ্যমন্ত্রী পেয়ে যান ক্লিনচিট। গেরুয়া শিবিরের তরফে বারবার প্রমাণ করার চেষ্টা করা হয়, বিজেপির রাজ্যে সব ভালো, আসল দুর্নীতিটা করছে বিজেপি বিরোধীরা। দিনের শেষে বিজেপি আর সংঘ কি আসলে আদৌ 'ধোয়া তুলসীপাতা'?

More Articles