শরীরে কোলেস্টরলের মাত্রা বেড়েছে ? বুঝুন পায়ের রঙ দেখে একবারেই

রোজের কর্মব্যস্ত জীবনে খুব আমাদের হাতে অল্পই সমই থাকে নিজেদের প্রতি যত্ন নেওয়ার। অথচ কাজটা তেমন কঠিন নয়। প্রতিদিন অল্প সময় ধরে শরীর চর্চা ও সুষম খাদ্য গ্রহণের মাধ্যমেই আপনি হয়ে উঠতে পারেন সুস্বাস্থ্যের অধিকারী।কিন্তু জীবনযাত্রা সঠিক না হলে শরীরে বাসা বাঁধতে পারে একাধিক রোগব্যাধি। আজকাল আট থেকে আশি সকলেই নানারকম শারীরিক সমস্যায় ভুগছেন। ব্লাড সুগার, উচ্চ রক্তচাপ , কোলেস্টরলের মতো সমস্যা প্রায় প্রতি বাড়িতেই। স্বাস্থ্যবিদরা কিন্তু এই ধরনের রোগভোগকে লাইফস্টাইল ডিজিজ আখ্যা দিচ্ছেন। অর্থাৎ এসব কিছুর জন্যই দায়ী আমাদের জীবনযাত্রা। বেশ কিছু বছর আগেও এমন সমস্যা দেখা দিত একটা নির্দিষ্ট বয়সের পড়ে কিন্তু এখন খুব অল্প বয়সেই থাবা বসাচ্ছে এসব মারণ রোগ। কিন্তু ইদানিং কম বয়সিদের মধ্য়েও হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর খবর শোনা যায়। অথচ এমন রোগকে আপনি খুব সহজেই হারিয়ে দিতে পারেন সঠিক জীবনযাত্রা পালনের মধ্য দিয়ে।

কোলেস্টরেল কী

 কোলেস্টরল হল মোমের মতো একটি চর্বিযুক্ত পদার্থ। ভিটামিন ডি ও দেহে বিভিন্ন ভারসাম্যরক্ষাকারী হরমোন তৈরীর সময় আমাদের লিভারে কোলেস্টরল তৈরি হয়। কোলেস্টরল জলে দ্রবীভুত হয় না। তবে শরীরে বেশি মাত্রায় কোলেস্টরল জমা হতে থাকলে প্রোটিনের উৎপাদন ব্যাহত হয়। লিপোপ্রোটিনের সাথে তখন কোলেস্টরল যুক্ত হয়ে লো-ডেনসিটি লাইপোপ্রোটিন (এলডিএল) তৈরী করে যা আমাদের শরীরের পক্ষে খুবই ক্ষতিকর। এলডিএল ধমনিতে জমা হয়ে রক্তপ্রবাহের পথকে সংকুচিত করে দেয় ফলে হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোকের সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায়। তবে অসুবিধা হচ্ছে দেহে কোলেস্টরলের মাত্রা অতিরিক্ত না বেড়ে যাওয়া পর্যন্ত এর নির্দিষ্ট কোনো লক্ষণ থাকে না। তবে দেহে উচ্চ মাত্রায় কোলেস্টরল থাকলে পা এবং পায়ের পাতায় কিছু লক্ষণীয় পরিবর্তন ঘটে।

কোলেস্টরেলের প্রভাবে যে শারীরিক পরিবর্তন ঘটে—

১. কোলেস্টরল খুব বেড়ে গেলে পায়ের টেন্ডনগুলির ওপর খুব প্রভাব পড়ে।কোলেস্টরলের কারণে পায়ের ধমনীগুলি সংকুচিত হয়ে যায় ফলে প্রয়োজনীয় অক্সিজেনপূর্ণ রক্ত ও পুষ্টি উপাদানগুলি পৌঁছতে পারে না। ফলস্বরূপ পা ভারী হয়ে যায় ও অসহ্য যন্ত্রণা হয়। বেশি হাঁটাচলা করা যায় না, অল্প হাঁটলেই পায়ের ব্যাথা বাড়তে থাকে।

২. রাতে ঘুমের মধ্যে পায়ের পাতা বা আঙুলে টান ধরে অতিরিক্ত কোলেস্টরলের কারণে।এক্ষেত্রে অনেকেই সারারাত পা ঝুলিয়ে বসে থাকেন। পায়ে টান ধরার পাশাপাশি অসহ্য যন্ত্রণাও হয়।

৩. নখ ও ত্বকের রঙ পরিবর্তন হতে দেখা যায়  দেহে বেশি কোলেস্টরল জমতে থাকলে। ধমনীতে রক্ত প্রবাহ বাধা পায় বলেই ত্বকের রঙ পরিবর্তন হয়। কম অক্সিজেম যুক্ত রক্ত প্রবাহের কারণে ত্বকের রঙ কালচে হয়ে যায়।

৪. উচ্চ কোলেস্টরলসম্পন্ন ব্যক্তির পায়ের পাতা সবসময়ই খুব ঠাণ্ডা থাকে। ধমনীর মধ্য দিয়ে কম  অক্সিজেম যুক্ত রক্ত প্রবাহের কারণে পায়ের পাতা ঠাণ্ডা হয়।

এইসব লক্ষণগুলি থাকলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। নিয়মিত রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমেই একমাত্র কোলেস্টরলের মাত্রা নির্ণয় করা সম্ভব।তবে প্রতিদিন সঠিক ডায়েট ও ব্যায়ামের মাধ্যমে সহজেই দেহে কোলেস্টরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।   

More Articles