এক মাস চিনি সম্পূর্ণ বাদ! কোন দু'টি ব্যাপক পরিবর্তন বদলে দেবে আপনার জীবন?

Blood Sugar: চিনি উচ্চ রক্তচাপ, কোলেস্টেরল বৃদ্ধি এবং হৃদরোগের অন্যান্য ঝুঁকি বৃদ্ধির অন্যতম কারণ।

চিনি খাওয়া নিয়ে এত ধরনের মতামত ধেয়ে আসে চারপাশ থেকে যে চিনি প্রায় রোজের তালিকা থেকে ব্রাত্যই করে দিয়েছেন বহু মানুষ। আমাদের রোজের খাবারে নানাভাবেই চিনি থাকে। মিষ্টি তো বটেই, নানা পানীয়, কার্বনেটেড পানীয়, এমনকী নানা ফলের মধ্যেও চিনি থাকে। কিছু চিনি আমাদের শরীরের জন্য প্রয়োজনীয়, তবে পরিশ্রুত চিনি প্রচুর পরিমাণে খেলে তা বিভিন্ন স্বাস্থ্যসমস্যার দিকেই নিয়ে যায়। ফলে মানুষ চিনি ছাড়তে ব্যস্ত।

খাবারের মধ্যে লুকিয়ে থাকা শর্করা ক্যালোরি বাড়ায় এবং স্থূলতা, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগের মতো বিভিন্ন রোগের সৃষ্টি করে। খাদ্যতালিকায় সামান্য পরিবর্তন করলেই এই অতিরিক্ত চিনি কমে। কিন্তু এক মাসের জন্য যদি খাবার থেকে চিনি সম্পূর্ণ বাদ দেন, তাহলে দিলে কী হবে? রোজের ডায়েট থেকে চিনি কমানোর পর শরীরে সবচেয়ে লক্ষণীয় পরিবর্তন হলো, ওজন কমে যাওয়া।

চিনিতে ক্যালোরি বেশি থাকে এবং তা দ্রুত শরীরে যুক্ত হয়ে যায়, যার ফলে ওজন বৃদ্ধি পায়। খাবার থেকে চিনি বাদ দিলেই দেখবেন সামগ্রিকভাবে কম ক্যালোরি গ্রহণ করছেন। যার ফলে ওজন হ্রাস পেতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, বেশি পরিমাণে চিনিযুক্ত খাবার খেলে শরীরের রক্তে শর্করার মাত্রা ব্যাপক ওঠানামা করে। তা টাইপ ২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ায় কারণ এটি রক্তে শর্করা এবং ইনসুলিনের মাত্রা বাড়িয়ে তোলে।

আরও পড়ুন- মিষ্টি বিনে প্রাণ মজে না? রোগ বালাই এড়াতে চিনির বিকল্প হয়ে উঠতে পারে এই দ্রব্যগুলি

অতিরিক্ত চিনি কমালে রক্তে শর্করা এবং ইনসুলিনের মাত্রা বজায় থাকে। এক মাসের জন্য চিনি বাদ দিলেই দেহের শক্তির মাত্রাও বাড়তে পারে। চিনি রক্তে শর্করার মাত্রায় ব্যাপক পরিবর্তন ঘটায়, যার ফলে ক্লান্তি এবং আলস্য অনুভূত হয়। চিনি না খেলে দেহের শক্তির মাত্রাও স্থিতিশীল হয়। ফলে সারা দিন আরও চাঙ্গা থাকে শরীর।

চিনি না খেলে মেজাজও ফুরফুরে থাকে কারণ শরীরের প্রদাহ এবং অক্সিডেটিভ স্ট্রেস অনেকটাই কমে যায়। চিনির কম ব্যবহার হার্টের স্বাস্থ্যকেও প্রভাবিত করে। চিনি উচ্চ রক্তচাপ, কোলেস্টেরল বৃদ্ধি এবং হৃদরোগের অন্যান্য ঝুঁকি বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। চিনির পরিমাণ কমিয়ে হৃদরোগের সমস্যা ও ঝুঁকি দুই-ই কমানো সম্ভব। বেশি পরিমাণে চিনি খেলে অন্ত্রের প্রদাহ ঘটে এবং অন্ত্রের উপকারী ব্যাকটেরিয়া ক্ষতিগ্রস্ত হয়, যার ফলে হজমের সমস্যা যেমন ফোলাভাব, কোষ্ঠকাঠিন্য এবং ডায়রিয়া হয়।

মাসখানেকের জন্য চিনি না খেলে তাই স্বাস্থ্যের উল্লেখযোগ্য বদল চোখে পড়ে। জীবনে ও শরীরে ইতিবাচক পরিবর্তন চাইলে এক মাস রোজের খাবার থেকে চিনি বাদ দিয়েই দেখতে পারেন। তবে মূল বিষয়টি হলো, এক মাস পরে আবার প্রচুর চিনি খেয়ে ফেললে ক্ষতি হবে মারাত্মক! চিনি কমের বিষয়টি ধারাবাহিকভাবেই বজায় রাখতে হবে।

More Articles