মরসুমের প্রথম তুষারপাত, সঙ্গে বৃষ্টি, জোশীমঠের পরিস্থিতি আরও ভয়ংকর হয়ে উঠছে?

Joshimath Sinking Snowfall : আবহাওয়া দফতর আবার বলেছে, তুষারপাতের পাশাপাশি বৃষ্টিপাতও হতে পারে এখানে। তাই চিন্তা আরও কয়েক গুণ বেড়েছে।

কথায় বলে, ‘গোদের ওপর বিষফোঁড়া’। আক্ষরিকভাবেই সেটার ছাপ এসে লাগল উত্তরাখণ্ডে। সৌজন্যে জোশীমঠ। ইতিমধ্যে জোশীমঠের অবস্থার কথা গোটা বিশ্ব জেনে গিয়েছে। বাড়িঘরে, দেওয়ালে, মেঝেয় লম্বা ফাটল। রাস্তাঘাটের সিমেন্ট ভেঙে ওপরে উঠে এসেছে। লম্বা ফাটল আরও বাড়ছে। যাতায়াত করতেও ভয় পাচ্ছেন এলাকাবাসীরা। সেইসঙ্গে হেলে পড়ছে হোটেল, রিসোর্ট, বাড়ি। একটু একটু করে ধ্বংসের মুখে দাঁড়িয়ে পড়েছে জোশীমঠ।

তবে এই খবরের পাশে আরও উদ্বেগ বাড়িয়েছে সাম্প্রতিক আবহাওয়া। ২০ জানুয়ারি মরসুমের প্রথম বড় তুষারপাত দেখল জোশীমঠ। পাহাড়প্রেমীরা তো এটাই চান। পাহাড়ি এলাকায় বরফ পড়লে মানুষও খুশি হয়ে ওঠেন। কিন্তু তুষারপাতের ফলে জোশীমঠের বাসিন্দাদের কপালে চিন্তার ভাঁজ আরও বেড়েছে। চোখে মুখে দুশ্চিন্তার ছাপ স্পষ্ট। আবহাওয়া দফতর আবার বলেছে, তুষারপাতের পাশাপাশি বৃষ্টিপাতও হতে পারে এখানে। তাই চিন্তা আরও কয়েক গুণ বেড়েছে। কিন্তু কেন?

কেদারনাথ, বদ্রিনাথ থেকে আউলি – উত্তরাখণ্ডের বিভিন্ন জায়গায় যাওয়ার জন্য জোশীমঠে আসতেই হতো পর্যটকদের। যত দিন গিয়েছে, এই শৈলশহরে ভিড় বেড়েছে মানুষের। সেইসঙ্গে রয়েছে আরও আনুষঙ্গিক কারণ। এত চাপ পার্বত্য এলাকাটি আর নিতে পারেনি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বহুদিন ধরেই একটু একটু বসে যাচ্ছিল জোশীমঠ। বিপদের কথা বলা হলেও গা করেনি কেউ। তারই ফল এখন চোখের সামনে দেখা যাচ্ছে। কেবল শহর নয়, গোটা জোশীমঠ এলাকাটাই বসে যাচ্ছে একটু একটু করে। ধস নামছে, ফাটল বাড়ছে।

আরও পড়ুন : নিরাপদ নয় দার্জিলিংও! কীভাবে জোশীমঠের মতোই তলিয়ে যাওয়ার পথে পাহাড়ের রানি?

এর মধ্যে নতুন করে বৃষ্টি আর তুষারপাত হলে সেই সমস্যা আরও বাড়বে। ফাটলের ভেতর দিয়ে জল আরও গভীরে ঢুকতে পারে। ফলে মাটি আরও আলগা হয়ে ফাটল বাড়াতে পারে। আর ফাটল বাড়লে বিপদের সম্ভাবনাও বাড়বে। এতেই চিন্তায় পড়েছে বাসিন্দারা। ইতিমধ্যেই জোশীমঠকে বসবাসের অযোগ্য হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। উদ্ধারকাজও চলছে, বাসিন্দাদের ক্ষতিপূরণের পাশাপাশি অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার কাজ চলছে। সমস্ত বাড়িতে এখনও ফাটল হয়নি। কিন্তু বৃষ্টি একবার শুরু হলে সেটা রোখা যাবে না বলেই মনে করছেন পরিবেশবিদরা।

এ তো গেল শীতের সময়। বর্ষায় ওই এলাকায় বৃষ্টির পরিমাণ সবাই লক্ষ্য করেছেন। সেই বৃষ্টি হলে কি আদৌ বাঁচানো যাবে জোশীমঠকে? শুধু তাই নয়, এখনকার আবহাওয়াও আরও খারাপ হতে পারে। হিসেব বলছে, গত কয়েকদিনে প্রায় ৮৫০টি বাড়িতে বড় বড় ফাটল দেখা গিয়েছে। বাসিন্দাদের সবসময় ভয়, যদি মাথার ওপর ভেঙে পড়ে দেওয়াল? যদিও সেন্ট্রাল বিল্ডিং রিসার্চ ইনস্টিটিউট জানিয়েছে, গত তিনদিনে নতুন করে ফাটল বাড়েনি। কিন্তু বৃষ্টি হলে ফাটল যে বাড়বে না, সেটা কেউ বলেছে? এখনও অবধি ২৫৯টি পরিবারকে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বাকি রয়েছেন আরও অনেক বাসিন্দা। বিপদ যাতে না নেমে আসে, সেটারই প্রার্থনা করছেন সবাই।

More Articles