নৃশংস! নিজের পাঁচ মাসের কন্যাসন্তানকে খালের জলে ছুঁড়ে ফেলে দিল মা-বাবা, কিন্তু কেন?

Rajasthan baby girl death : মাত্র পাঁচ মাসের ফুটফুটে এক কন্যাসন্তান! কিন্তু এমন অকালে কেন মেরে ফেলা হল তাকে?

কথায় বলে, কু-সন্তান যদি বা হয়, কু-মাতা কখনও নয়। কিন্তু ২০২৩-এর আধুনিক, প্রগতিশীল ভারতে দাঁড়িয়েও এমন কিছু ঘটনা সামনে আসে, যা শুনলে মাথা হেঁট হয়ে যায়। চোখের সামনে ভেসে আসে ‘মাত্রুভূমি’র সেই ছবি; যেখানে কন্যা সন্তানকে দুধের বালতিতে চুবিয়ে মেরে ফেলা হয়। মেয়েদের প্রগতি ও নারী স্বাধীনতার এই যুগে দাঁড়িয়েও কিছু কিছু ক্ষেত্রে এমন খবর গায়ে কাঁটা দেয়।

সেরকমই নৃশংস ঘটনার সাক্ষী থাকল রাজস্থান। মরু রাজ্যের বিকানেরের পুলিশের কাছে হঠাৎই একটি ফোন আসে। উল্টোদিক থেকে কেউ একজন বলেন, পুলিশ অফিসার শিগগিরই আসুন। চত্বরগড়ের খালে একটি শিশু ভেসে রয়েছে। একরত্তি শিশু, কয়েক মাসই বয়স হবে। তড়িঘড়ি ওই এলাকায় গিয়ে পুলিশ ওই শিশুটিকে উদ্ধার করে।

কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তার বলেন, ঠাণ্ডায় ওই খালের জলে ছুঁড়ে ফেলার কারণেই মৃত্যু হয়েছে ওই শিশুটির। আর বয়স? জানা গেল, মাত্র পাঁচ মাসের ফুটফুটে এক কন্যাসন্তান! কিন্তু এমন অকালে কেন মেরে ফেলা হল তাকে? শেষমেশ তদন্ত শুরু করে পুলিশ। শীঘ্রই ঘটনার সমাধানও হয়ে গেল। কিন্তু যে তথ্য সামনে এল, সেটা শুনে শিউরে উঠছেন সকলে। পাঁচ মাসের কন্যাসন্তানকে হত্যা করেছে খোদ তার মা-বাবা!

বিকানেরের চন্দসর গ্রামের স্কুল অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে কাজ করেন ঝানওয়ারলাল। সরকারি কাজ, সংসারও চলছিল ভালোই। আপাতত চুক্তির ভিত্তিতে তাঁকে নিয়োগ করা হলেও, স্থায়ী হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা ছিল। ২০২২-এর ডিসেম্বরে এই মর্মে একটি নথিও জমা দেন ঝানওয়ারলাল। সেখানে বলেন, তাঁর দুই সন্তান। কিন্তু বেমালুম লুকিয়ে গেলেন একটি তথ্য। ২০২২-এই তাঁর স্ত্রী একটি কন্যাসন্তানের জন্ম দেন। মাত্র পাঁচ মাস বয়স তার। সেই কথাটি উল্লেখই করলেন না ঝানওয়ারলাল।

এখানেই ভয় পেয়ে গেলেন তিনি। পরে তো তৃতীয় এই সন্তানের কথা জানতে পারবেই সবাই। তখন যদি চাকরি না থাকে! ভুল নথি দেওয়ার জন্য সরকারি চাকরি যদি স্থায়ী না হয়! চাকরি চলে গেলে কী করে চলবে সংসার? এই ভাবনা থেকেই নৃশংস রাস্তায় নেমে গেলেন ঝানওয়ারলাল আর তাঁর স্ত্রী। পাঁচ মাসের একরত্তি কন্যা সন্তানকে মেরে ফেলার সিদ্ধান্ত নিলেন। সেই অনুযায়ী, বিকানেরের খালের পাড়ে গিয়ে নিজের কোলের মেয়েকে ছুঁড়ে ফেলে দিলেন মা-বাবা!

পুলিশ ইতিমধ্যেই ঝানওয়ারলাল এবং তাঁর স্ত্রীকে গ্রেফতার করেছে। তাঁরা এখন পুলিশের হেফাজতে আছেন। কিন্তু কেন এমন কাজ করলেন তিনি? চাকরি বাঁচানোর জন্য নিজের সন্তানকে বিসর্জন দেওয়া? তাকে একেবারে মেরে ফেলা? নাকি কন্যাসন্তান বলে সেই ভাবনাটি খুব সহজে মাথায় চলে এসেছিল? এই প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে সবার মধ্যে।

More Articles