কুর্ণিশ হার না মানা প্রথম মহিলাদের || নিয়ম ভেঙে স্বপ্ন দেখতে শিখিয়েছেন ওঁরাই
প্রতি বছর ৮ ই মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালিত হলেও সত্যিই কি বদলে গেছে মেয়েদের অবস্থা! একবিংশ শতাব্দীতে দাঁড়িয়েও সমাজের চোখরাঙানি, টিটকিরি- এসব নিয়েও ভাবতে হয় মেয়েদের। তবে ঝড়ঝাপটা সামলে আজ নারী অনেক ক্ষেত্রেই নিজেদের ছাপ রাখতে পেরেছে। বদল আনতে পেরেছেন সমাজের দৃষ্টিভঙ্গিরও। তাঁরা প্রমাণ করে দিয়েছেন যে রাঁধে সে চুলও বাঁধে এবং শুধু তাই নয় সংসার সামলেও নিজের পরিচয় তৈরি করেছেন নারী। তাই হয়তো কোনো কাজকে শুধু পুরুষের কাজ বলে ভাবতে নারাজ তাঁরা। এমন নারীই তো বাকিদের পথপ্রদর্শক। সব সময় অনুপ্রেরণা জুগিয়েছেন অন্যদের সেই পথে হাঁটার। হার না মানা জেদ ও অদম্য ইচ্ছাকে সঙ্গী করে এঁরা হয়ে উঠেছেন রোল মডেল। জেনে নেওয়া যাক এমন কিছু নারীর কথা -
রাসিলা ভাদের:
২০০৮ সালে রাসিলকে গির অভয়ারণ্যের ফরেস্ট রেঞ্জার অফিসার পদে নিয়োগ করা হয়। তিনিই ছিলেন প্রথম মহিলা ফরেস্ট রেঞ্জার অফিসার। এই পদে তাঁর নিয়োগ নিয়ে অনেকেই ভ্রু কুঁচকেছেন সেসময় কিন্তু রাসিলা নিজের যোগ্যতার প্রমাণ দিয়েছেন বারে বারে। একা হাতেই চারশোর বেশি চিতাবাঘ,২০০ সিংহ, এবং কুমির, অজগর, পাখিদের উদ্ধার করেছে রাসিলা। ১৪ বছর এই পেশায় কাটিয়ে ফেলেও তাঁর ভয় মহিলা হওয়ার কারণে যদি বাদ পড়তে হয় দল থেকে।
ভাবনা পন্থ:
প্রতিবছর ২৬ শে জানুয়ারির কুচকাওয়াজে দিল্লির রাস্তায় সেনাদের কুচকাওয়াজ দেখেছেন সব ভারতবাসী। কিন্তু গতবছর ভাবনা সেই অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন তাঁর পুরুষ কর্মীদের সাথে। ভাবনা পন্থ প্রথম মহিলা ফাইটার পাইলট যিনি প্যারেড চলাকালীন যিনি টেবিলেক্স কন্টিজেন্টের অংশ হতে চলেছেন। অনুষ্ঠানের আগে সাংবাদিকদের বলেছেন, 'ছোটবেলা থেকে এই দিনটির অপেক্ষায় কাটিয়েছি'।
কিরণ বেদী:
একজন মহিলা তাও আবার আইপিএস অফিসার! এখনও বোধহয় এই কথায় রাজি হন না অনেক পরিবার। এক জায়গায় বসে কোনো কাজ নেই? সেগুলো চেষ্টা কর না! কিন্তু কিরণ বেদী তেমন ভাবেন নি। প্রথম আইপিএস অফিসার হিসেবে কাজে যোগ দেন ১৯৭২ সালে। ২০০৩ সালে, বেদী প্রথম ভারতীয় এবং প্রথম মহিলা যিনি জাতিসংঘের পুলিশ প্রধান এবং জাতিসংঘ বিভাগে পুলিশ উপদেষ্টা পদে নিযুক্ত হন।
আন্না রজম মালহোত্রা:
তখন সদ্য স্বাধীন হয়েছে দেশ। ১৯৫১ সালে প্রথম মহিলা আইএএস অফিসার হিসেবে কাজে যোগ দেন আন্না রজম। ইংরেজি সাহিত্য নিয়ে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করা সেই মেয়েটি ভারতের প্রথম কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত বন্দরের নির্মাণের কারিগর ছিলেন। সদ্য স্বাধীন হওয়া ভারতে যখন অন্যান্যরা ঠাঁই খুঁজছেন তখন ইতিহাস রচনা করেছিলেন আন্না রজম মালহোত্রা।
বাচেন্দ্রি পল :
পাহাড় চড়তে যাবে মেয়েরা ? এখনও এই কথা বললে আশেপাশের লোক বলবে কি প্রয়োজন ? বিয়ে করে সংসার করলেই তো হয়। কিন্তু বাচেন্দ্রি প্রথম ভারতীয় মহিলা যিনি মাউন্ট এভরেস্টের চুঁড়ায় পৌঁছে গিয়েছিলেন ১৯৮৪ সালে। উত্তরাখণ্ডের এক গরীব শ্রমজীবী পরিবারের মেয়ে বাচেন্দ্রি। পরিবার পরিজনদের কঠোর বিরোধিতার মুখেও নিজের ইচ্ছাপূরণ করেছিল এই পাহাড়ী মেয়ে।