সদর-অন্দর নয়, বাস্তু বলছে বাথরুমের অবস্থানই বদলে দিতে পারে ভাগ্য

বেশিরভাগ বাড়ির বেড রুম বা লিভিং এরিয়াকে বাস্তুমতে  সাজিয়ে তোলার জন্য আমরা অনেক পরিকল্পনা করি। কিন্তু বাড়ির বাথরুম বা শৌচালয়ের ক্ষেত্রে আমরা অনেকেই উদাসীন থাকি। বাস্তুবিদরা বলেন, আপনার অজান্তেই বাড়ির বাথরুম একাধিক সমস্যা তৈরি করতে পারে ভবিষ্যতে। বাস্তু শাস্ত্র মতে, ঘরের প্রতিটি কোণই ইতিবাচক শক্তির উৎস হয়ে উঠতে পারে যদি সঠিক দিকে অবস্থান হয়। তাই বাড়ির বাথরুম বা শৌচালয়ের দিক সম্পর্কে সচেতন হোন। নাহলে আপনার বাড়ির বাথরুমই হয়ে উঠতে পারে নেতিবাচক শক্তির উৎসস্থল। বাস্তুবিদরা আরও মনে করেন, এ বিষয়ে সতর্ক না হলে, আর্থিক সমৃদ্ধি, পরিবারের সদস্যদের স্বাস্থ্যের গুরুতর সমস্যা দেখা দিতে পারে। জেনে নিন নতুন বাড়ি বা ফ্ল্যাট কেনার সময় বাস্তু মতে বাড়ির বাথরুম সম্পর্কে কী কী লক্ষ্য রাখবেন- 

বাথরুমের অবস্থান

বাস্তু মতে, আপনার বাড়ির উত্তর বা উত্তর-পশ্চিম অংশে বাথরুম থাকতে হবে। দক্ষিণ দিক বা এমনকি দক্ষিণ-পূর্ব বা দক্ষিণ-পশ্চিম দিকের স্নানের ঘর তৈরি করবেন না, কারণ এটি বাড়ির সদস্যদের  স্বাস্থ্যের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে বলে মনে করা হয়। যদি আপনার বেডরুমের সঙ্গে সংযুক্ত বা অ্যাটাচ বাথরুম হয় তবে ঘরের পশ্চিম দিকে শৌচাগার বানান। 

বাথরুমের ছোটখাটো বিষয়ের বাস্তুর ভালো খারাপ

১. বাথরুমের জলের কল বা শাওয়ারের জন্য উত্তর বা উত্তর পূর্ব দিককে বেছে নিন। দক্ষিন-পূর্ব, উত্তর ও পশ্চিমে জলের কল না থাকলেই ভালো

২.বাথরুমের উত্তর-দক্ষিণ দিক করে কমোড বসাতে হবে। লক্ষ্য রাখুন যেন কমোড ব্যবহারের সময় ব্যক্তিকে পূর্ব অথবা পশ্চিম দিকে মুখ করে না বসতে হয়।

৩. অনেকই এখন বাথরুমে আয়না লাগান। সেক্ষেত্রে, উত্তর বা পূর্ব দিকের দেওয়াল বেছে নিন। ওয়াশ বেসিনের ক্ষেত্রেও উত্তর , পূর্ব বা উত্তর পূর্ব দিক বেছে নেওয়া ভালো। 

৪. গিজারের মত বৈদ্যুতিক যন্ত্র বাথরুমে স্থাপন করলে তা দক্ষিণ পূর্ব দিকে রাখা যেতে পারে।

 ৫. বাথরুমের জানালা উত্তর বা পূর্ব দিকের দেওয়ালে রাখতে পারেন। 

বাথরুমের দরজার অবস্থান

বাথরুমের দরজার অবস্থান উত্তর বা পূর্ব দিকে হওয়া উচিত। ভুলেও ধাতব উপাদান দিয়ে তৈরি দরজা ব্যবহার করবেন না বাথরুমে। সবসময় বাথরুমের দরজা বন্ধ রাখুন। বাস্তুবিদদের মতে, সবসময় বাথরুমের দরজা খোলা থাকলে তা আপনার ব্যক্তিগত সম্পর্কের ওপর কুপ্রভাব ফেলে।

বাস্তু অনুসারে বাথরুমের রঙ

বাথরুমের দেওয়ালের জন্য হালকা যে কোনও রঙ বেছে নিন। কোনও গাঢ় রঙ না ব্যবহার করাই ভালো।

আর কী মাথায় রাখবেন?

১. বাড়ির বেডরুমের সাথে অ্যাটাচ বাথরুম থাকলে সেই দেওয়ালের বিছানা কাছাকাছি বিছানা রাখা উচিত নয়।তবে শৌচালয়ের অবস্থান বেডরুম থেকে দূরে হওয়াই ভালো।কিন্তু বর্তমানে দুকামরার ফ্ল্যাট বা ছোট বাড়ির ক্ষেত্রে তা সবসময় সম্ভব হয়ে ওঠেনা। 
২. অবশ্যই খেয়াল রাখুন, বাড়ির বাথরুমের নীচে বা ওপরে রান্নাঘর বা ঠাকুর ঘর যেন না থাকে। 
৩. মেঝে বা মেঝের তল থেকে এক - দুই ফুট উঁচুতে শৌচাগার বানানো ভালো। 
৪. বাথরুমের মেঝের ঢাল রাখুন পূর্ব বা উত্তর দিকে। খেয়াল রাখুন যেন এই দুদিক থেকেই বাথরুমের ব্যবহৃত জল বেরিয়ে যায়। 

বাথরুমের  ভুল অবস্থানের প্রভাব     

১. বাড়ির উত্তর পূর্ব দিকে বাথরুম অবস্থিত হলে তা  ব্যবসায় বৃদ্ধি এবং সম্পদে বাধা সৃষ্টি করে। বলা হয় আসন্ন সুযোগগুলিকে বাধাগ্রস্থ করবে।  পরিবারের সদস্যদের মধ্যে স্বাস্থ্য সমস্যার কারণ হতে পারে এই অবস্থান। 
২. পূর্ব  দিকে বাথরুম থাকলে তা হজমের সমস্যা তৈরী করে এবং লিভারকে প্রভাবিত করে । 
৩.দক্ষিণ-পূর্ব দিকে বাড়ির শৌচালয় থাকলে তা  আর্থিক সমস্যা ,বিবাহ বা প্রসবের মত সমস্যার কারণ হতে পারে।
৪.দক্ষিণ দিকে অবস্থিত শৌচালয় আপনাকে আইনি সমস্যায় ফেলতে পারে।
৫. দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে বাথরুম থেকে কেরিয়ারের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
৬. বাড়ির পশ্চিম দিকে অবস্থিত শৌচালয় আপনার সম্পত্তি বিক্রির ক্ষেত্রে জটিলতা তৈরি করতে পারে। পাশাপশি এর কারণে স্বপ্ন পূরণেও বাধা তৈরী হয়।

More Articles