এবার বৌদ্ধ মন্দিরে মাদক! থাইল্যান্ডের ঘটনায় হতবাক গোটা বিশ্ব

Drug in Buddhist Temple: থাইল্যান্ডের মাটিতে ড্রাগের কারবার নতুন ব্যাপার নয়। এবার বৌদ্ধ মন্দিরেও হানা দিল সেই মাদক...

কথায় বলে, ড্রাগের নেশা সর্বনাশা। এই ঘূর্ণিপাকে পড়ে অনেকেই সর্বস্ব খুইয়েছেন। মারাদোনা থেকে বলিউড – ড্রাগের খবরে বারবার আলোড়িত হয়েছে বিশ্ব। এখনও তার অন্যথা হচ্ছে না। আজ, ২৯ নভেম্বর এমনই খবর শোনা গেল থাইল্যান্ডে। তবে এবারের ঘটনাটা শুনে আশ্চর্যই হচ্ছেন সবাই। কারণ, অভিযোগের তির বৌদ্ধ সাধুদের দিকে!

মধ্য থাইল্যান্ডের ফেচাবান প্রদেশের বাং সাম ফান জেলার একটি বৌদ্ধ মন্দিরে ঘটনাটি ঘটে। ড্রাগ পরীক্ষা চলাকালীন সেখানকার প্রধান সন্ন্যাসীর শরীরে মাদক ধরা পড়ে। চমকে ওঠেন অফিসাররা। এরপর ওই মঠের বাকি সন্ন্যাসীদেরও ড্রাগ পরীক্ষায় ডাকা হয়। সেখানেই রিপোর্ট ‘পজিটিভ’ আসে। দেখা যায়, বৌদ্ধ মঠটির মোট চারজন সন্ন্যাসীই মাদকাসক্ত। আরও ভালো করে বললে, ড্রাগ।

আরও পড়ুন : মদ না খেয়েই মাতাল! জানেন কোন কঠিন অসুখ বাসা বাঁধছে আপনার শরীরে 

কোন ড্রাগ? কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ওই সন্ন্যাসীদের নমুনায় পাওয়া গিয়েছে মেথামফেটামিন। অবশ্য গোটা বিশ্বে এর জনপ্রিয়তা ‘মেথ’ নামেই। বিখ্যাত আমেরিকান সিরিজ ‘ব্রেকিং ব্যাড’-এও এই মেথের কাজ কারবার এবং একে ঘিরে গজিয়ে ওঠা ড্রাগচক্রের উল্লেখ রয়েছে। এই বিশেষ রাসায়নিক বস্তুটিকেই ড্রাগ হিসেবে নিতেন বৌদ্ধ মন্দিরের সন্ন্যাসীরা। এই মুহূর্তে ওই মঠের সন্ন্যাসীদের অপসারিত করা হয়েছে। তাদের প্রত্যেককেই নেশামুক্তি কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে।

কিন্তু এর জেরে অন্য একটি সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে মধ্য থাইল্যান্ডের বৌদ্ধ মন্দিরটি। সন্ন্যাসীরা না থাকায় কার্যত ফাঁকা হয়ে গিয়েছে সেটি। যার ফলে সমস্যায় পড়েছেন মন্দির সংলগ্ন গ্রামের বাসিন্দারা। এখানে এসেই প্রার্থনা সারতেন তাঁরা। পাশাপাশি মঠের সন্ন্যাসীরা গ্রামে গ্রামে গিয়ে শিক্ষার প্রসারের কাজ করতেন। সেই সমস্ত কাজ একপ্রকার বন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে। তবে শীঘ্রই ওই মন্দিরে নতুন করে সন্ন্যাসী পাঠানোর কথাও বলা হয়েছে।

আরও পড়ুন : বিষাক্ত কাশির সিরাপে শিশুমৃত্যু! ভারতে মিলছে অবাধে, কীভাবে তিলে তিলে প্রাণ নেয় ‘ওষুধ’

কিন্তু মঠের সন্ন্যাসীদের হাতে মেথের মতো ড্রাগ এল কী করে? এটা কেবল একটি প্রদেশ বা জেলা নয়, গোটা থাইল্যান্ডের সমস্যা। এর আগেও ড্রাগ সমস্যার কথা বারবার উঠে এসেছে থাইল্যান্ডে। বিশেষ করে মেথের ব্যবহার প্রচুর দেখা যায়। রাষ্ট্রপুঞ্জের তরফ থেকেও বারবার মাদক নিয়ে সচেতন করা হয়েছে। মাদকাসক্তদের শনাক্ত করার কাজও চলছে। সেইসঙ্গে চলছে ড্রাগ পরীক্ষার কাজও। কিন্তু তাই বলে বৌদ্ধ মন্দিরের সন্ন্যাসী? এখনও যেন মানতে পারছেন না অনেকে। কী করে ওই সন্ন্যাসীদের হাতে মেথের মতো ড্রাগ পৌঁছল, কতদিন ধরে এই কারবার চলছে, অন্যান্য মন্দিরেও এমন অবস্থা কিনা সেসব খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। আপাতত ড্রাগ বন্ধের উদ্দেশ্যে অভিযান চালানোই মূল কামনা থাইল্যান্ডে।

More Articles