শীতকালে সামান্য হাঁপানিও ডেকে আনতে পারে ভয়ানক বিপদ, কেন এইসময় বাড়ে হার্টের সমস্যা

Heart Health : বার্ধক্যজনিত সমস্যা ছাড়াও আজকাল কম বয়সীদের মধ্যে হার্ট অ্যাটাকে মৃতের সংখ্যা বহুল পরিমাণে দেখা যাচ্ছে, যেভাবে এড়াবেন ঝুঁকি

ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে পরিবর্তিত হয় মানুষের শারীরিক ক্রিয়াকলাপ। যেমন গ্রীষ্মকালে বিভিন্ন রকমের চর্ম রোগ হয় তেমনই বর্ষা এলেই শুরু হয় সর্দি জ্বরের উপদ্রব। তার সঙ্গে সাম্প্রতিক সংযোজন ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া। আবার শীতকাল মানেও সেই ঠান্ডার উপদ্রব। এই সময় হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোকের সমস্যা বেশি মাত্রায় দেখা যায়। কার্ডিয়াক অ্যারেস্টে আক্রান্ত হন বহু মানুষ। বার্ধক্যজনিত সমস্যা ছাড়াও আজকাল কম বয়সীদের মধ্যে হার্ট অ্যাটাকে মৃতের সংখ্যা বহুল পরিমাণে দেখা যাচ্ছে। ওষুধ এবং চিকিৎসা তো আছেই তবে এই সময় না জেনেই বহু বিপদ ডেকে আনেন অনেকে জার জেরে সমস্যা হতে পারে হার্টের।

শীতকাল মানেই পরিবেশের তাপমাত্রা নিম্নমুখী আর তার জেরে আমাদের শরীরের অভ্যন্তরীণ তাপমাত্রাও বেশ কমে যায় এই সময়। আর তার নেতিবাচক প্রভাব পড়ে আমাদের হার্টের ওপর। কারণ শীতে আমাদের শরীরের উষ্ণতা বজায় রাখতে হৃদস্পন্দন বেড়ে যায়। অনেকেই দেখা যায় শীতের হাত থেকে বাঁচতে অতিরিক্ত শরীরচর্চায় ঝোঁকেন এই সময়। অতিরিক্ত ওয়ার্ক আউট করলে চাপ পড়তে পারে হার্টের ওপর। যার কারণে হাঁপানি, বুকে ব্যাথা ইত্যাদি হতে পারে। এই সমস্ত লক্ষণ দেখলেই ফেলে না রেখে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া বাধ্যতামূলক নচেৎ অজান্তেই ডেকে আনতে পারেন মারাত্মক বিপদ। হঠাৎ কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট-এর হলে অনেক সময় মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। তাই শীতকালে হার্টের বাড়তি নজর জরুরি।

আরও পড়ুন - শীতে ভোর ৪ টে থেকে ৬ টার মধ্যেই ঘটে বেশিরভাগ হার্ট অ্যাটাক! কীভাবে আটকাবেন?

আমাদের শরীরের স্বাভাবিক রক্তচাপের পরিমাণ হল ১২০/৮০। শীতকালে অতিরিক্ত বাইরের খাবার খাওয়া এবং শরীরচর্চার দরুণ বাড়তে পারে ব্লাড প্রেসার। ১৪০/৯০ এর বেশি যদি চড়ে যায় প্রেসার তৎক্ষণাৎ ডাক্তারের পরামর্শ নিন। মাথায় রাখবেন বাড়তি রক্তচাপ মানেই বাড়তি সমস্যা। রক্তচাপ সুস্থ সীমার মধ্যে না থাকলেই চাপ পড়তে পারে হার্ট ,ধমনী এবং কিডনিতে। তাই শীতকালে নিয়মিত ব্লাড প্রেসার পরিমাপ খুবই জরুরি। কোনরকম অস্বস্তি বুঝলেই চেকাপ করান। সবসময় ডাক্তারের কাছে গিয়ে BP চেক করা সম্ভব না হলে আপনি বাড়িতেই অ্যানারয়েড মনিটর, ডিজিটাল মনিটর, BP মনিটর সহ স্মার্টওয়াচ ইত্যাদি কিছু। যা প্রতি নিয়ত আপনাকে জানান দেবে আপনার শারীরিক পরিস্থিতি।

এছাড়াও নজরে রাখুন পালস রেট। বিশ্রাম অবস্থায় আমাদের স্বাভাবিক হার্ট রেট প্রতি মিনিটে ৬০ থেকে ১০০ অবধি হয়ে থাকে। এর বেশি বা কম হলে আপনাকে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। আপনি কাজের মধ্যে থাকলে এর পরিমাণ হেরফের হতে পারে তবে তা মাত্রা ছাড়ালে বিপদ আসন্ন। আরও একটা বিষয় প্রায়শই বলা হয়ে থাকে, তা হল সুগার অন্য রোগ ডেকে আনে। অর্থাৎ রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখাও আবশ্যক। শীতকাল মানেই খাওয়াদাওয়া। আর মিষ্টি জাতীয় খাবারের তো ঢালোয়া আয়োজন এই সময়। তবে মাত্রা ছাড়ালে বিপদ। তাছাড়া ডায়াবেটিস আক্রান্ত ৬৫ শতাংশ মানুষের হার্টের সমস্যা দেখা যায়। যার দরুণ স্ট্রোকের কারণে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে সুগার লেবেল পরীক্ষা করা জরুরি। প্রয়োজনে বাড়িতেই রাখতে পারেন পোর্টেবল সুগার মাপার যন্ত্র বা গ্লুকোমিটার। খুব সহজেই পরীক্ষা করা যায় তাতে।

শীতকালে হার্টকে সুস্থ রাখতে নিয়মিত এবং পরিমিত খাবার জরুরি। জরুরী নির্দিষ্ট পরিমাণ হ্যাঁ চলা করা। দিনে অন্ততপক্ষে আধ ঘন্টা থেকে এক ঘন্টা করে হাঁটলে শরীর সুস্থ থাকে। তার সঙ্গে নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে সঠিক খাওয়া দাওয়া এবং অবশ্যই দিবে অন্তত তিন লিটার জল পান অত্যন্ত আবশ্যক। কোলোস্টরেল, সুগার, প্রেসার এবং ওজন ঠিক থাকলে সহজেই বিদায় জানাতে পারবেন হার্টের সমস্যাকে।

More Articles