গরমের ছুটিতে সন্তানকে ব্যস্ত রাখবেন কীভাবে? রইল ৮টি টিপস

রাজ্য সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী, ২ মে অর্থাৎ সোমবার থেকে রাজ্যের সরকারি ও বেসরকারি স্কুলগুলিতে শুরু হতে চলেছে গরমের ছুটি। তীব্র গরমের হাসফাঁসের কারণে ও কোভিডের চতুর্থ ঢেউয়ের কথা মাথায় রেখে আপাতত ৪৫ দিনের ছুটি ঘোষণা করেছে সরকার। অর্থাৎ ১৫ জুন পর্যন্ত চলবে ছুটি।

বুধবার নবান্নে শিক্ষা বিভাগের মুখ্য সেক্রেটারি বলেছেন যে শিক্ষার্থীরা এই গরমে নাজেহাল হয়ে পড়েছে। আমাদের কাছে খবর এসেছে অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়ছে গরমে। এ কারণে সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ২ মে থেকে গরমের ছুটি চালু করার '। সরকারের সিদ্ধান্তে খুশি হলেও অনেক অভিভাবকই এখন ভাবছেন বাড়িতে থাকলেই তো শুধু দুষ্টুমি করবে সন্তান। তাঁদের মনে এখন একটাই প্রশ্ন কী করে ব্যস্ত রাখা যায় সন্তানকে? জেনে রাখুন গরমের ছুটিতে সন্তানকে ব্যস্ত রাখার এই উপায়গুলি -

১. পড়ার একটা রুটিন থাকুক, থাকুক গল্পের বইও

গরমের ছুটিতে স্কুলের দেওয়া কাজগুলি করিয়ে রাখুন সঠিক সময়ে। এছাড়া বেশিরভাগ স্কুলেই গরমের ছুটি কাটিয়ে উঠলেই পরীক্ষা তাই অল্প অল্প করে রোজ সেই পড়াও ঝালিয়ে নিন।

এছাড়া সন্তানকে ছোটদের গল্পের বই কিনে দিতে পারেন। প্রতিদিন অন্তত আধঘন্টা এই কাজে ব্যয় করলে শব্দভাণ্ডার বাড়বে সাথে নতুন জিনিস শিখতেও পারবে।একইসাথে বাড়বে লেখার দক্ষতাও। যেসব শিশুদের হাতের লেখা ভালো নয় তাঁদের ক্ষেত্রে লেখার অভ্যাসও গড়ে তুলতে পারেন।

২. শরীরচর্চা ও খেলাধূলা

দিনের কিছুটা সময় অবশ্যই সন্তানের খেলাধূলার জন্য রাখুন। এক্ষেত্রে বাচ্চাকে সাঁতারের ক্লাসে ভর্তি করতে পারেন। গরমকাল সাঁতার শেখার জন্য আদর্শ সময়। এতে সন্তান অ্যাক্টিভও থাকবে আর স্বাস্থ্যও বজায় থাকবে।
তাছাড়া বিকেলের দিকে সন্তানকে মাঠে নিয়ে যেতে পারেন।তবে খেয়াল রাখুন কোনোভাবেই যেন বেলার দিকে প্রখর রোদে খেলতে না যায় বাচ্চা।বাড়িতে বসে বোর্ড গেমও খেলতে পারেন সন্তানের সাথে। বিভিন্ন ধরনের কার্ড গেমও বাচ্চাকে ব্যস্ত রাখতে পারে যখন আপনি কাজ করছেন।

৩. সৃজনশীল কাজে উৎসাহ দিন

ফাঁকা সময়ে বিভিন্ন রকম জিনিস তৈরিতে উৎসাহ যোগান সন্তানকে।এর ফলে তাঁদের উদ্ভাবনী শক্তি বৃদ্ধি পাবে। ক্লে বা কাগজ দিয়ে কোনো জিনিস তৈরি করতে পারলে শিশুর আগ্রহ নিজে থেকেই বাড়বে। এছাড়া বাড়ি বসে ছবি আঁকতেও ভালোবাসে অনেক শিশু।

৪. ঘুরে আসুন

সন্তানের ছুটি থাকাকালীন কিছুদিনের জন্য পরিবার নিয়ে ঘুরতে যেতে পারেন। এক্ষেত্রে শিক্ষামূলক কোনো জায়গা বেছে নিন যা আপনার সন্তানের জন্যও উপকারী হবে।

৫. গাছ লাগানো শেখান

পরিবেশের কাছাকাছি থাকলে মন সতেজ থাকে একথা সকলেরই জানা।তাই বিভিন্ন ধরনের ফুল, ফলের গাছ রোপন ও পরিচর্যা করানো শেখাতে পারেন।ফলে পরিবেশ রক্ষা পাবে আবার আপনার সন্তানও ধৈর্য্যশীল ও দায়িত্ববান হয়ে উঠবে।পরিবেশ সম্পর্কে আপনার সন্তানের  সচেতনতাও বাড়বে এর মধ্য দিয়ে।

আরও পড়ুন-তাপপ্রবাহ থেকে ঝড়ঝঞ্ঝা, আরও করাল হবে প্রকৃতি! কী কারণে এত দুর্যোগ?

৬. সিনেমা দেখুক ও

করোনা সংক্রমণের ভয়ে অনেকেই আমরা বহুদিন সিনেমা দেখতে যায়নি। বিকেলের দিকে সন্তানকে সাথে করে বেরিয়ে পড়তে পারেন কোনো ভালো সিনেমা দেখতে। তবে এক্ষেত্রে খেয়াল রাখুন সিনেমাটি যেন শিশুর দেখার মতোও হয়। নাহলে ফল উল্টো হতে পারে। তাছাড়া বাড়িতে বসেও টিভিতে বা ল্যাপটপে কোনো বাচ্চাদের সিনেমা চালিয়ে দিতে পারেন সন্তানকে। ফলে আপনি কিছুক্ষণ স্বস্তিতে সময় সময় কাটাতে পারবেন।

৭. বিজ্ঞানের টুকিটাকি চর্চা

বেশিরভাগ শিক্ষার্থীই বিজ্ঞান বিষয়কে সবচেয়ে কঠিন বলে মনে করে। ফলে কোনোভাবেই ছুটিতে বিজ্ঞান পড়তে চায় না। চেষ্টা করুন বিজ্ঞানের বইতে থাকা বিভিন্ন পরীক্ষা এসময় বাড়িতে করে দেখাতে। বাড়িতে থাকা খুব সাধারণ জিনিস দিয়েই অনেক পরীক্ষা করা যায়। বিভিন্ন পাতা ,ফুল ,ফল ও গাছও শনাক্তকরণের উপায়ও শেখাতে পারেন সন্তানকে। এর ফলে তাঁর পড়ার প্রতি ঝোঁক বাড়বে।

৮. রান্না শেখাতে পারেন

পুঁথিগত বিদ্যার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় প্রাথমিক কাজগুলির দক্ষতা থাকাও প্রয়োজন। ছেলে মেয়ে নির্বিশেষে সহজ কিছু রান্না শিখে রাখা জরুরি। পরবর্তীকালে আপনার সন্তান উচ্চশিক্ষার জন্য অন্যত্র গেলে এই সহজ পাঠ কাজে দেবে। পরবর্তী সময়েও স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের  কারণে সুস্থ জীবনের অধিকারী হয়ে উঠবে আপনার সন্তান।

More Articles