হাসি, কান্না অথবা রাগ, সবেতেই ব্যবহার করছেন ‘ইমোজি’, জানেন কার আবিষ্কার?

Invention of Emoji : জাপানি ভাষায় ই-অর্থ ছবি, মো-অর্থ লেখা, এবং জি-অর্থ চরিত্র। অর্থাৎ সহজ করে বললে লেখা ও ছবিতে ফুটিয়ে তোলা চরিত্রই হল ইমোজি

‘ইমোজি’, আজকালকার দিনে অতি পরিচিত শব্দ এটি। মুঠোফোনের সঙ্গে ইমোজির এক অমোঘ সম্পর্ক। মন খারাপ, হাসি, কান্না, রাগ, চিৎকার, আলাদা আলাদা অনুভূতির জন্য রয়েছে আলাদা আলাদা ইমোজি। শুধু তাই নয়, হাসি, কান্না, রাগ ইত্যাদি অনুভূতিগুলোর মধ্যেও আবার রয়েছে আলাদা আলাদা ধরন, সেসবেরও ইমোজি থাকে তালিকায়। ধরুন আপনার কোনও কিছু হাসতে হাসতে চোখে জল চলে এসেছে কিংবা এত বেশি রাগ হয়েছে যে আমি রেগে লাল হয়ে গিয়েছেন, কিংবা ধরুন আপনার ঘুম পেয়েছে, হয় উঠছে অথবা কোনও কিছু নিয়ে খুবই ভাবিত, প্রতিটা অনুভূতির জন্য আলাদা আলাদা ধরন।

অর্থাৎ, সোশ্যাল মিডিয়ায় কথোপকথনে যখন শব্দ দিয়ে মনের ভাব প্রকাশ করতে পারছেন না আপনি, ঠিক তখন মুশকিল আসন এই ইমোজি। শুধু তাই নয়, হয়তো বেশি শব্দ টাইপ করতেও সবার বিশেষ ইচ্ছে করছে না তখনও এই ইমোজি দিয়ে কাজ মেটানো সম্ভব সহজেই। অর্থাৎ অনুভূতির এক কথায় প্রকাশ। কিন্তু এমন একটা বহুল প্রচলিত জিনিস যা ছাড়া কার্যত অচল বর্তমান প্রজন্মের একটা দিক, জানেন কি সেই ইমোজি তৈরি হল ঠিক কবে? করি বা আবিষ্কর্তা এই জিনিসটির?

আরও পড়ুন - শীতের সবজি বাজারে নজর কাড়ছে কমলা-হলুদ-বেগুনি ফুলকপি, জানেন আসলে কেন এরকম রং হয়?

সময়টা ১৯৯৯ সাল। জাপানে এক মহিলা নকশাকার প্রথম ভাবেন মানুষের অনুভূতি নিয়ে কাজ করবার কথা। মানুষের হাসি, কান্না, রাগ, ঈর্ষা, ঘুম পাওয়া, হয় তোলা, ডাক ডাকা, বিচলিত হওয়া ইত্যাদি যাবতীয় অনুভূতির সময় মুখমণ্ডলের ঠিক কীরকম পরিবর্তন হতে পারে সেগুলি ভেবেই মোট ১৭৬টি ক্ষুদ্রাকার মুখের ছবি আঁকেন তিনি। যার প্রতিটিই একে অপরের থেকে আলাদা, এবং প্রতিটিই কোনও না কোনও অনুভূতির প্রকাশ করছে। আর এই অভিনব কাজটির স্রষ্টা যিনি তাঁর নাম হল শিগোতাকা কুরিতা। তাঁর অসাধারণ দক্ষতার দৌলতেই আজ আমরা এই এত এত অনুভূতির নকশা পেয়েছি হাতের মুঠোয়।

When and how did emoji come into practical life?

জাপানি ডিজাইনার শিগোতাকা কুরিতা হলেন ইমোজির আবিষ্কারক

জাপানি শব্দ ইমোজি। জাপানি ভাষায় ই-অর্থ ছবি, মো-অর্থ লেখা, এবং জি-অর্থ চরিত্র। অর্থাৎ সহজ করে বললে লেখা ও ছবিতে ফুটিয়ে তোলা চরিত্রই হল ইমোজি। যা দিয়ে সম্পূর্ণ নতুন একটি ভাষা তৈরি হয়েছে বিশ্বে। হাজার ছবি, হাজার ভিডিওর ভিড়ে ডিভাইসে মাত্র তিন কিলোবাইট জায়গা নেই এই ইমোজি। ফাইল এর কদর আরও বেশি।

জানা যায়, জাপানি টেলিকম প্রতিষ্ঠান এনটিটি ডোকোমোর জন্য এই অভিনব কাজটি করেছিলেন শিগোতাকা। একটি সাক্ষাৎকারে তিনি নিজে মুখেই বলেন অভিজ্ঞতার কথা। মাত্র ১২ পিক্সেলের মধ্যে ১৭৬টি আলাদা আলাদা মৌখিক অভিব্যক্তি ফুটিয়ে তুলতে বলা হয়েছিল তাঁকে। সময় দেওয়া হয়েছিল মাত্র পাঁচ সপ্তাহ। আজকালকার অধিকাংশ ডিজাইনারদের কাছেও যা কার্যত অসম্ভব। ২০১১ সালে অ্যাপল তাদের আইওএস সিস্টেমের কি–বোর্ডে ইমোজি যোগ করে। পাশাপাশি তারা দাবি করে, ইমোজি হল পৃথিবীর ‘ফাস্টেস্ট গ্রোয়িং ল্যাংগুয়েজ’। অর্থাৎ সবচেয়ে দ্রুত প্রভাব বিস্তার করা ভাষা। এমনকী ২০১৩ সালে অক্সফোর্ড অভিধানেও স্বীকৃতি দেওয়া হয় এই ইমোজির ভাষাকে।

More Articles