খাস্তা লেরো বিস্কুট দিয়েই সকাল শুরু? না জেনে ডেকে আনছেন যে মারাত্মক বিপদ

Toast Biscuit : না জেনে এই টোস্ট বিস্কুট খেয়ে ডেকে আনছে না তো কোনও ক্ষতি?

সকালের ঘুম ভাঙাতে গরম গরম এক কাপ চা-ই কাফি। কিন্তু চায়ের সঙ্গে টা-এর জোগান না থাকলে মুখ ভাত হতে বাধ্য। অগত্যা বিস্কুটেই ভরসা। বয়াম ভরে বিস্কুট থাকে বাড়িতে। তবে এই বিস্কুটের প্রকারেও রয়েছে রকমফের। নোনতা, মিঠে নানান স্বাদের বিস্কুট এখন বাজারে। তবে রোজকার চায়ের অভ্যাসে বাহারি বিস্কুটের চল বিশেষ লক্ষ্য করা যায় না। সেখানে তাই চিরাচরিত টোস্ট বিস্কুটের চাহিদাই তুঙ্গে। বেশিরভাগ বাড়িতে চায়ের সঙ্গে খাওয়া হয়ে থাকে রাস্ট বিস্কুট অর্থাৎ টোস্ট বিস্কুট। কিন্তু না জেনে এই টোস্ট বিস্কুট খেয়ে ডেকে আনছে না তো কোনও ক্ষতি?

এ বিষয়ে সতর্ক করেছেন পুষ্টিবিদ খুশবু জৈন টিব্রেওয়ালা। তিনি একাধারে স্বাস্থ্য প্যান্ট্রির প্রতিষ্ঠাতা এবং ডায়াবেটিস শিক্ষাবিদ। খুশবু বলেছেন, “টোস্ট বিস্কুটে কামড় দিলেই আপনি বুঝতে পারবেন, সেটি আসলে মিহি ময়দা, চিনি, সস্তা তেল, অতিরিক্ত গ্লুটেন এবং আরও কয়েকটি খাদ্য সংযোজন -এর একটি বেকড মিশ্রণ ছাড়া কিছুই নয়। ফলে এটি স্বাস্থের পক্ষেও যথেষ্ট ক্ষতিকর।” তাঁর মতে, এই ধরনের বিস্কুট খাওয়ার ফলে স্বাস্থ্যের যে সমস্ত খতিগুলির হতে পারে তা হল-
১. রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বৃদ্ধি
২. প্রদাহ বৃদ্ধি

এছাড়াও অতিরিক্ত টোস্ট বিস্কুট খাওয়ার ফলে প্রভাব পড়তে পারে বিপাক যন্ত্রে। অন্ত্রে খারাপ ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধিকেও ত্বরান্বিত করে। পাশাপাশি অপর্যাপ্ত হজম, পুষ্টির শোষণ এবং অপ্রয়োজনীয় খাবারের লোভ বাড়িয়ে তোলে টোস্ট বিস্কুট।

আরও পড়ুন - ভাতের খিদে কি মানুষের মেরি বিস্কুটে মেটে?

কিন্তু কীভাবে ক্ষতি করে এই বিস্কুটের উপকরণগুলো?

পরিশোধিত গমের আটা/ময়দা: টোস্ট তৈরিতে ব্যবহার করা হয় প্রক্রিয়াজাত গিমের ময়দা। যার ফলে এর থেকে তুষ, ভিটামিন এবং প্রয়োজনীয় খনিজ পদার্থ, সবই বের হয়ে যায়। অর্থাৎ গমেরোধ্যে উপকারী যে ফাইবার থাকে, তার কিছুই অবশিষ্ঠ থাকে না টোস্ট বিস্কুটে।

চিনি : টোস্ট বিস্কুটের আর একটু জরুরি উপকরণ হল চিনি। অর্থাৎ হাই ক্যালোরি। স্বাস্থ্য সচেতনতার জন্য যারা অন্যান্য খাবারে চিনি এড়িয়ে যান তারা কি জানেন এই টোস্ট বিস্কুট খেয়ে একই বিপদ ডেকে আনছেন! দৈনিক মাত্র দুটি টোস্ট বিস্কুট খেলেই শরীরে চিনির মাত্রা ছাড়িয়ে যেতে পারে স্বাভাবিকের থেকে কয়েক গুণ।

পরিশোধিত উদ্ভিজ্জ তেল : তৈলাক্ত পদার্থ অতিরিক্ত সেবনে এমনিতেই দেহের ক্ষতি করে তার ওপর পরিশোধিত তেলের ক্ষেত্রে পুষ্টিগুণ একেবারেই থাকে না ফলে হজম শক্তি কমিয়ে দেয়।

সুজি : যদিও এটি গম থেকে তৈরি করা হয়, তবে এতে সমস্ত ফাইবার এবং পুষ্টি উপাদানও থাকে না।

কৃত্রিম ফ্লেভার : এর মধ্যে থাকে অপকারী রাসায়নিক পদার্থ। যা ক্ষতি করতে পারে শরীরের। বিস্কুটের স্থায়িত্ব বাড়ানোর জন্য ব্যবহৃত হয় এসব কিন্তু খেয়াল রাখবেন এতে শরীরের স্থায়িত্ব কমে যেতে পারে।

কৃত্রিম খাদ্য রং : টোস্টকে বাদামী রঙ দেওয়ার জন্য প্রায়শই ক্যারামেল রঙ বা বাদামী খাবারের রঙ যোগ করা হয়। এতেও থাকে রাসায়নিক পদার্থ যা ক্ষতি করে শরীরের।

তাই বিশেষজ্ঞরা টেস্টের পরিবর্তে চায়ের সঙ্গে রোস্টেড মাখানা খাওয়ার পরামর্শ দেন। তবুও যদি কারোর খুব টোস্ট খেতে ইচ্ছে হয় তবে একটা দুটো খুচরো কিনে খাবেন, কখনওই পুরো প্যাকেট কিনে বসবেন না এতে নেশার অথবা লোভের বসে শরীরের ক্ষতি ডেকে আনবেন। তাই সকলের শুরুতে কী খাচ্ছেন, কেন খাচ্ছেন সেটা ভালো করে জেনে বুঝে তবেই চায়ের কাপে চুমুক দিন।

More Articles