বয়স মাত্র ১৯০, যে 'বৃদ্ধের' জন্মদিন ঘিরে মেতে উঠেছে গোটা বিশ্ব

Jonathan the Tortoise: প্রায় দু শতাব্দীর দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে এখন জোনাথান। কী না দেখেছে সে!

বয়স ১৯০ ছুঁইছুঁই, চোখে ভালো দেখতে পান না। গন্ধ শুঁকে যে কিছু বুঝবেন সে ক্ষমতাও নেই বললেই চলে। তবে সজাগ দু-খান কান। তা দিয়ে দিব্যি সব শুনতেও পান। নাম জোনাথান। ইনি কোনও মানুষ নয়। একটি কচ্ছপ। বলা ভালো, পৃথিবীর সবচেয়ে বয়স্ক কচ্ছপ এই জোনাথান দ্য টরটয়েস।

এই কচ্ছপটির জন্ম হয়েছিল ১৮৩২ সালে। অর্থাৎ প্রায় দু শতাব্দীর দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে এখন জোনাথান। কী না দেখেছে সে! ঔপনিবেশিক শাসন থেকে শুরু করে প্রথম পোস্টাল স্ট্যাম্প,আইফেল টাওয়ার সবই গজাতে দেখেছেন চোখের সামনে। সাইক্লোন, ঝড় এমনকী হালের করোনা ভাইরাসের দাপট, সব সয়েও বহাল তবিয়তে রয়েছে সে। ১৮৮২ সালে তাকে ভারত মহাসাগর থেকে সংগ্রহ করা হয়। বর্তমানে আটলান্টিক মহাসাগরের ছোট্ট দ্বীপ সেন্ট হেলেনার গভর্নর হাউজের বাগানে বিশেষ ক্যাপ্টিভিটির মধ্যে রয়েছে কচ্ছপটি। সম্প্রতি সেখানেই ধুমধাম করে পালন করা হল জোনাথনের ১৯০ বছর পূর্তির উৎসব। আর এই খবর প্রকাশ্যে আসতেই তোলপাড় শুরু হয় নেট দুনিয়ায়।

আরও পড়ুন : যৌনমিলনের জন্য লাল-নীল হয় কচ্ছপের মাথা! কেমন আছে চম্বলের বিলুপ্তপ্রায় প্রাণীরা?

সাধারণত কোনও কচ্ছপের আয়ু এত বেশি দিনের হয় না। সেখানে প্রায় দু'টি শতাব্দী দেখে নিয়েছে জোনাথান। এসব কি চাট্টিখানি কথা! সম্প্রতি গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডেও জায়গা করে নিয়েছে জোনাথান। কচ্ছপের মধ্যে যে কেবল রেকর্ড করেছে তাই নয়। এর আগে কেলোনিয়ান গোত্রের কোনও প্রাণীই এতদিন বাঁচেনি বলেও জানিয়েছে গিনেস বুক কর্তৃপক্ষ। জোনাথানের আগে এই রেকর্ডের অধিকারী ছিল অস্ট্রেলিয়ার কাছে টোংগা রাজ্যের রাজপরিবারের এক কচ্ছপ। নাম টুই মালিয়া। গবেষকদের মতে, ১৯৬৫ সালে যখন তার মৃত্যু হয়, তখন তার বয়স ছিল ১৮৮ বছরের কাছাকাছি। সেই রেকর্ডও দুই বছর আগেই পেরিয়ে গিয়েছে জোনাথান।

আরও পড়ুন : মাতৃদুগ্ধেও প্লাস্টিক! রোজ যাচ্ছে শিশুর পেটে! ভয়াবহ তথ্য এবার সামনে

বর্তমানে আটলান্টিক মহাসাগরের দক্ষিণে ব্রিটিশ দ্বীপ সেন্ট হেলেনার প্রধান আকর্ষণই এই জোনাথন। তার টানেই নিত্যদিন ভিড় জমান পর্যটকরা। বয়সের ভারে খানিক ভেঙে পড়েছে ঠিকই কিন্তু মেজাজে এখনও রয়েছে আগের মতোই। দেখতে না পেলেও মানুষের গলার স্বর শুনতে পায় স্পষ্ট। আর তাতেই খোশমেজাজে দেখা যায় তাকে। শুধু তাই নয়, খাওয়াদাওয়ার দিকেও রসিক বলা চলে জোনাথানকে। ফলের প্রতি টান খুব বেশি। তরমুজ, আপেল, ন্যাসপাতি জাতীয় ফল খেতে বেশ পছন্দ করেন জোনাথান। তবে সবচাইতে বেশি ভালোবাসেন কলা আর লেটুস পাতা খেতেই।

কিন্তু বয়স তো হল ঢের, তাই বারণ না মানলে চলবে কেন! শরীর টিকিয়ে রাখতে তাই খাদ্য তালিকা থেকে বাদ পড়েছে পছন্দের কলা। কিন্তু তাতে আদর যত্নে ভাটা পড়েনি একটুও। সবাই যেন আগলে রেখেছে এই বৃদ্ধ অভিভাবককে। ১৯০ বছরের এই রেকর্ড এখানেই শেষ নয়, আরও আরও পথ চলার দিকেই তাকিয়ে বিশ্ব।

More Articles