মাধ্যমিকে সর্বকালের সেরা পাশের হার! মেধাতালিকায় জয়জয়কার কোন কোন জেলার?
WBBSE 10th result 2025: এ বছর মাধ্যমিকের সম্ভাব্য মেধা তালিকায় প্রথম দশে আছে ৬৬ জন। তবে প্রথম হয়েছেন একজনই। মাধ্যমিকে প্রথম স্থান অধিকার করেছেন রায়গঞ্জের অদৃত সরকার। প্রাপ্ত নম্বর ৬৯৬।
প্রকাশিত হলো 'জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষা' মাধ্যমিকের ফলাফল। পরীক্ষা শেষ হওয়ার ৬৯ দিনের মাথায় ফল ঘোষণা হলো ২ মে। ২০২৫ সালের মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হয়েছিল ১০ ফেব্রুয়ারি, শেষ হয় ২২ ফেব্রুয়ারি। এ বছরের মাধ্যমিক পরীক্ষায় মোট ৯,৮৪,৭৫৩ জন নাম নথিভুক্ত করে। এদের মধ্যে ছাত্রের সংখ্যা ৪,২৮,৮০৩ জন এবং ছাত্রীর সংখ্যা ৫,৫৫,৯৫০। গত বছরের তুলনায় এই বছরের মাধ্যমিকে ৬৫ হাজারের বেশি পড়ুয়া পরীক্ষা দিয়েছে। এবছর পরীক্ষা বাতিল হয়েছিল ১৯ জনের। মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি রামানুজ গঙ্গোপাধ্যায় মাধ্যমিকের ফল প্রকাশ করে জানিয়েছেন, গত বছরের তুলনায় পাশের হার সামান্য বেড়েছে। এ বছর মাধ্যমিকে পাশের হার নাকি সর্বকালের সেরা! এবছর পাশের হার ৮৬.৫৬ শতাংশ, যা গত বছর ছিল ৮৬.৩১ শতাংশ। তবে এবারও মেধাতালিকায় কলকাতার অবস্থা অত্যন্ত পশ্চাদমুখী, জয়জয়কার আবারও জেলারই।
এ বছর মাধ্যমিকের সম্ভাব্য মেধা তালিকায় প্রথম দশে আছে ৬৬ জন। তবে প্রথম হয়েছেন একজনই। মাধ্যমিকে প্রথম স্থান অধিকার করেছেন রায়গঞ্জের অদৃত সরকার। প্রাপ্ত নম্বর ৬৯৬। দ্বিতীয় স্থানে আছে দু’জন। মালদহের রামকৃষ্ণ মিশন বিবেকানন্দ বিদ্যামন্দিরের অনুভব বিশ্বাস (৬৯৪) এবং বাঁকুড়া বিষ্ণুপুর হাইস্কুলের সৌম্য পাল (৬৯৪)। মাধ্যমিকে পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষ পর্ষদের ছায়ায় থেকে এমন ভালো ফল করলেও আগামীতে এই বোর্ড থেকে পড়াশোনা করতে চায় না দ্বিতীয় স্থানাধিকারী অনুভব। বাংলা বোর্ড ছেড়ে দিল্লি বোর্ডেই যেতে চান এই ছাত্র। আর মাধ্যমিকে তৃতীয় হয়েছেন বাঁকুড়ার ঈশানী চক্রবর্তী। তাঁর প্রাপ্ত নম্বর ৬৯৩।
চতুর্থ স্থানে রয়েছে দু’জন। পূর্ব বর্ধমানের মহম্মদ সেলিম এবং পূর্ব মেদিনীপুরের সুপ্রতিক মান্না। তাঁদের প্রাপ্ত নম্বর ৬৯২। মাধ্যমিকে পঞ্চম স্থানে আছেন চার জন। হুগলি থেকেই রয়েছে তিন জন— সিঞ্চন নন্দী, মহম্মদ আসিফ এবং দীপ্তজিৎ ঘোষ। এ ছাড়া দক্ষিণ ২৪ পরগনার সোমতীর্থ করণও পঞ্চম হয়েছেন। তাঁদের প্রাপ্ত নম্বর ৬৯১।
ষষ্ঠ স্থানে আছেন ফালাকাটা উচ্চ বিদ্যালয়ের অউঞ্চ দে, বিবেকানন্দ শিক্ষানিকেতন উচ্চ বিদ্যালয়ের জ্যোতি প্রসাদ চট্টোপাধ্যায়, গোরাসোলে মুরলিধর হাই স্কুলের রুদ্রনীল মাসান্তা, টাকি রামকৃষ্ণ মিশন হাই স্কুলের অঙ্কন মণ্ডল, সারদা বিদ্যাপীঠ উচ্চ বিদ্যালয়ের অভ্রদীপ মণ্ডল। এঁদের প্রাপ্ত নম্বর ৬৯০।
সপ্তম স্থানে আছেন ফালাকাটা উচ্চ বিদ্যালয়ের দেবার্ঘ্য দাস, গঙ্গারামপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের অঙ্কন বসাক, বিবেকানন্দ শিক্ষানিকেতন উচ্চ বিদ্যালয়ের অরিত্রা দে, বাঁকুড়া মিশন গার্লস হাই স্কুলের দেবাদৃতা চক্রবর্তী এবং অমরগড় উচ্চ বিদ্যালয়ের সৌরিন রায়। এঁদের প্রাপ্ত নম্বর ৬৮৯।
অষ্টম স্থানে আছেন, তুফানগঞ্জ নৃপেন্দ্র নারায়ণ মেমোরিয়াল হাই স্কুলের অনির্বাণ দেবনাথ, রায়গঞ্জের সারদা বিদ্যামন্দিরের সত্যম সাহা, জয়েনপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের আসিফ মেহবুব, টার্গেট পয়েন্ট (আর) স্কুল উচ্চ বিদ্যালয়ের মহঃ ইনজামাম উল হক, রামকৃষ্ণ মিশন বিবেকানন্দ বিদ্যামন্দিরের অরিত্র সাহা, বিবেকানন্দ শিক্ষানিকেতন উচ্চ বিদ্যালয়ের শুভ্রা সিংহমহাপাত্র, রামপুরহাট জিতেন্দ্রলাল বিদ্যাভবনের অরিজিৎ মণ্ডল, ওই স্কুলেরই স্পন্দন মৌলিক, নব নালন্দা শান্তিনিকেতন হাই স্কুলের শ্রীজয়ী ঘোষ, বর্ধমান বিদ্যার্থী ভবন গার্লস হাই স্কুলের পাপড়ি মণ্ডল, কংসাবতী শিশু বিদ্যালয়ের সৌপ্তিক মুখোপাধ্যায়, বেলদা প্রভাতী বালিকা বিদ্যাপীঠের উদিতা রায়, মনসুকা লক্ষ্মীনারায়ণ উচ্চ বিদ্যালয়ের অরিত্র সাঁতরা, নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যালয়ের পুষ্পক রত্নম এবং কলকাতার বাগবাজারের রামকৃষ্ণ সারদা মিশন সিস্টার নিবেদিতা গার্লস স্কুলের ছাত্রী অবন্তিকা রায়। এঁদের প্রাপ্ত নম্বর ৬৮৮।
নবম স্থান অধিকার করেছেন তুফানগঞ্জ নৃপেন্দ্র নারায়ণ মেমোরিয়াল হাই স্কুলের দেবাঙ্কন দাস, কালিয়াগঞ্জ সরলা সুন্দরী উচ্চ বিদ্যালয়ের মৃন্ময় বসাক, বালুরঘাট হাইস্কুলের অনীক সরকার, বাঁকুড়া মিশন গার্লস হাই স্কুলের অরিত্রী মণ্ডল, দুবরাজপুর শ্রীশ্রী সারদেশ্বরী বিদ্যামন্দিরের দিশা ঘোষ, কাঁকুরিয়া দেশবন্ধু উচ্চ বিদ্যালয়ের ময়ূখ বসু, বর্ধমান মিউনিসিপাল উচ্চ বিদ্যালয়ের পরমব্রত মণ্ডল, কামারপুকুর আর.কে.মিশন মাল্টিপারপাস স্কুলের অয়ন নাগ, বেলদা গঙ্গাধর একাডেমির অঙ্কুশ জানা, বিবেকানন্দ মিশন আশ্রম শিক্ষায়তনের দ্যুতিময় মণ্ডল, কন্টাই মডেল ইনস্টিটিউটের ঐশিক জানা, শান্তিপুর মিউনিসিপ্যাল হাই স্কুলের প্রোজ্জ্বল দাস, প্রফুল্ল নগর বিদ্যামন্দিরের অনীশ দাস এবং জঙ্গিপাড়া বালিকা বিদ্যালয়ের তানাজ সুলতানা। সকলের প্রাপ্ত নম্বর ৬৮৭।
দশম স্থানে আছেন রায়গঞ্জ করনেশন উচ্চ বিদ্যালয়ের কৌস্তভ সরকার, মোজামপুর গার্লস হাই স্কুলের আমিনা বানু, সুজাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের উবে সাদাফ, বিবেকানন্দ শিক্ষানিকেতন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রিয়ম পাল, বিবেকানন্দ শিক্ষানিকেতন উচ্চ বিদ্যালয়ের তুহিন হালদা, কোটাসুর উচ্চ বিদ্যালয়ের দেবায়ন ঘোষ, গিরিজোর সাঁওতাল উচ্চ বিদ্যালয়ের এসকে আরিফ মণ্ডল, নব নালন্দা শান্তিনিকেতন হাই স্কুলের সম্যক দাস, কাসেমনগর বিএনটিপি গার্লস হাই স্কুলের স্বাগত সরকার, চিলাডাঙ্গী রবীন্দ্র বিদ্যাবীথির অয়ন্তিকা সামন্ত, তমলুক হ্যামিলটন উচ্চ বিদ্যালয়ের সমন্বয় দাস,ধন্যশ্রী কে.সি. উচ্চ বিদ্যালয়ের বিশ্রুত সামন্ত, পরমানন্দপুর জগন্নাথ ইনস্টিটিউশনের সায়ন বেজ, মহিষাদল রাজ উচ্চ বিদ্যালয়ের সোহম সাঁতরা, সুন্দরবন আদর্শ বিদ্যামন্দিরের শৌভিক দিন্দা এবং মজিলপুর জে.এম. ট্রেনিং স্কুলের রাহুল রিকতিয়াজ। সকলের প্রাপ্ত নম্বর ৬৮৬।
পর্ষদ জানিয়েছে, চলতি বছরের মাধ্যমিকে সর্বোচ্চ ‘এএ’ গ্রেড পেয়েছে ১০,৬৫৯ জন। ‘এ+’ গ্রেড পেয়েছে ২৫,৮২০ জন এবং ‘এ’ গ্রেড পেয়েছে ৯১,২৩৭ জন। এবছর মাধ্যমিকে পাশের হারে শীর্ষে আছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা। তারপর আছে কালিম্পং, কলকাতা এবং পশ্চিম মেদিনীপুর।