শতাব্দী, দুরন্ত, রাজধানী, কেন এমন আলাদা আলাদা নাম ভারতীয় রেলের বিভিন্ন ট্রেনের?

Indian Railways : ট্রেনে চড়া নিত্যদিনের অভ্যাস, কিন্তু জানেন কি ভারতের নামজাদা এক্সপ্রেস ট্রেনগুলির নামকরণের আসল কারণ কী?

‘কু ঝিক ঝিক’ শব্দটা আমাদের রোজকার জীবনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে। লোকাল অথবা এক্সপ্রেস, ট্রেন সফরের বিকল্প নেই। আজকাল অবশ্য আধুনিকতায় পাল্লা দিয়ে আকাশপথ অথবা সড়কপথে ভ্রমণের হুজুগ বেড়েছে তবে রেলপথে ভ্রমণ আজও সবকিছুর উর্ধ্বে। সময়ের সঙ্গে সাযুজ্য রেখে ভারতীয় রেল কর্তৃপক্ষও খানিক ট্রেন্ডি হয়ে উঠেছে। টিকিট ব্যবস্থা থেকে শুরু করে যাত্রী সফরের সঙ্গে সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয়েই এসেছে নয়া পরিবর্তন। অফলাইন দুনিয়ার একাধিপত্য কেড়ে নিয়েছে অনলাইন মাধ্যম। আজকাল রেল সংক্রান্ত সব নথিই পাওয়া যায় ঘরে বসেই। শুধু তাই নয়, মোবাইলের নিশানায় ট্রেনের মধ্যে প্রয়োজনীয় সমস্ত কিছুই চলে আসতে পারে হাতের কাছে। কিন্তু এহেন ভারতীয় রেল নিয়েও রয়েছে এমন কিছু বিষয় যা আজও প্রশ্নের উদ্রেগ করে।

রেলগাড়ির কামরার ক্ষেত্রে লাল, নীল, হলুদ, সবুজ ইত্যাদি রং কেন হয় তারও যেমন নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম রয়েছে, ঠিক তেমনই জানেন কি এক্সপ্রেস ট্রেনের নামকরণের ক্ষেত্রেও রয়েছে বেশ কিছু নিয়মাবলী। এই যে আমাদের পরিচিত এক্সপ্রেস যেমন শতাব্দী, রাজধানী অথবা দুরন্ত, তার যে এমন নামকরণ তার আসল কারণ কী জানেন? ট্রেনে চড়ার অভ্যাস থাকলেও, এমন কারণ হয়তো জানেন না বেশিরভাগ জনই। আসুন দেখে নেওয়া যাক সেই বিশেষ কারণগুলি...

আরও পড়ুন - মাত্র ৪ ঘণ্টায় দেশের জনপ্রিয়তম সৈকতে পাড়ি! বন্দে ভারত ট্রেন ছুটবে এবার যে গন্তব্যে

প্রতিটা এক্সপ্রেস ট্রেন যখন প্রথম চালু হয়, তখনই একটি নির্দিষ্ট বিশ্লেষণ জড়িয়ে থাকে তার নামকরণের সঙ্গে। কিছু ক্ষেত্রে উক্ত ট্রেন চলাচলের স্থানের ওপর নির্ভর করে সেই নামকরণ। কিছু কিছু ক্ষেত্রে আবার সূচনার সময়কালের সঙ্গে সম্পর্কিত হয় নামকরণ।

রাজধানী এক্সপ্রেস - নাম শুনেই খানিক আন্দাজ করা যাচ্ছে ঠিকই। আসলে এই ট্রেনটির বিশেষত্ব হল এটি মূলত হাওড়া থেকে থেকে দিল্লীগামী ট্রেন। দিল্লী অর্থাৎ, দেশের রাজধানী, আর সেই থেকেই এই ট্রেনের নামকরণ করা হয়েছে রাজধানী এক্সপ্রেস।দ্রুতগামী, বিলাসবহুল ও আধুনিক রেল পরিষেবা এটি। রাজধানী নয়া দিল্লির সঙ্গে অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ শহরের মধ্যে দ্রুতগামী রেল যোগাযোগের জন্য এই সেবা চালু করা হয়। ভারতীয় রেলের ট্রেনসমূহের মধ্যে সাধারণত রাজধানী এক্সপ্রেসকেই সবচেয়ে গুরুত্ব দেওয়া হয়। এটি ১৯৬৯ সালের ৩ মার্চ প্রথম চালু হয়।

knowledge story about indian railways train name

রাজধানী এক্সপ্রেস

শতাব্দী এক্সপ্রেস - এটিও একটি বিলাসবহুল দ্রুতগামী ট্রেনের মধ্যে অন্যতম। এটি দিবাকালিন ট্রেন হিসেবে জনপ্রিয়। ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুর ১০০ তম জন্মদিন অর্থাৎ ১৪ নভেম্বর, ১৯৮৮ সালে প্রথম এই ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছিল। সেই কারণেই তাঁর ১০০ বছর পূর্তিতে স্মরণ করে শতাব্দী নামকরণ করা হয় এই ট্রেনের।প্রথমে নয়া দিল্লি রেলওয়ে স্টেশন ও ঝাঁসি জংশন রেলওয়ে স্টেশনের মধ্যে চালু করা হয় শতাব্দী এক্সপ্রেস। এটি মূলত একটি চেয়ার কার ট্রেন, শোয়ার ব্যবস্থা ঠাহর না। ৪০০ থেকে ৮০০ কিলোমিটারের মধ্যে চালানো হয় ট্রেনটি। এই ট্রেনে যাতায়াত করা তুলনায় ব্যয়বহুল হওয়ায় ২০০২ সালে জন শতাব্দী এক্সপ্রেস চালু করা হয়, যা এর মতোই দ্রুতগামী তবে কম বিলাসবহুল ট্রেন।

knowledge story about indian railways train name

শতাব্দী এক্সপ্রেস

আরও পড়ুন - ট্রেনেই যাওয়া যাবে কাঠমান্ডু! এই মাসেই চালু ভারতীয় রেলের নয়া চোখ ধাঁধানো ‘ট্যুরিস্ট ট্রেন’!

দুরন্ত এক্সপ্রেস - ‘দুরন্ত’ শব্দটির সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে একটা বিরামহীন পরিষেবার প্রসঙ্গ। শুরু এবং গন্তব্য এই দুই স্টেশন ছাড়া মাঝে আর কোনও স্টেশনে থামে না এই ট্রেন। দুরন্ত রেল পরিষেবা ভারতের মহানগর ও প্রধান প্রধান রাজ্য-রাজধানীগুলিকে সংযুক্ত করেছে। ২০০৯-১০ সালের ভারতের কেন্দ্রীয় রেল বাজেটে এই পরিষেবা চালুর কথা প্রথম ঘোষণা করা হয়। তবে কোনো বাণিজ্যিক স্টপ না থাকলেও এই ট্রেনের কয়েকটি টেকনিক্যাল ও ক্রিউ হল্ট রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেলমন্ত্রী থাকাকালীন এটি চালু হয়। মূলত বিরামহীন পরিষেবা এবং একই গতিতে ছুটে চলা থেকেই এই ট্রেনের নামকরণ করা হয়েছে দুরন্ত এক্সপ্রেস।

knowledge story about indian railways train name

দুরন্ত এক্সপ্রেস

 

More Articles