কার্ড নাকি ইয়োগার্ট, কোনটা সঠিক শব্দ? জানেন কি দইয়ের ইংরেজি প্রতিশব্দ নিয়েও রয়েছে রহস্য

Difference Between Curd And Yogurt : আপনি কি জানেন দুটি তৈরির পদ্ধতি সম্পূর্ণ আলাদা? শুধু তাই নয়, দুটি জিনিসের উপকারিতাগুলিও একে অপরের থেকে আলাদা।
“দই চাই দই, ভালো দই”, রবিঠাকুরের সেই দইওয়ালাদের আজকাল বিশেষ দেখা যায় না ঠিকই, তবে মিষ্টির দোকানের হাঁড়িতে দই বিক্রির রেওয়াজ রয়েছে পুরোদস্তুর। বাঙালি বাড়িতে শুভ কাজ মানেই ডাক পড়ে দই-এর। শুধু তাই নয়, দই নিয়ে বর্তমান প্রজন্মের মাখামাখি খানিক বেশিই। ত্বক থেকে শুরু করে চুলের যত্ন, সবেতেই প্রয়োজন পড়ে দই। এমনকী হাল আমলের ডায়েট চার্টেও দই-এর চাহিদা সর্বাগ্রে। কিন্তু দই-এর ইংরেজি জিজ্ঞেস করলে কেউ বলে কার্ড (Curd), আবার কেউ বলেন ইয়োগার্ট (Yogurt)। দুটি ইংরেজি শব্দই বহুল প্রচলিত। তাই স্বাভাবিকভাবেই ধারণা হয় যে, একটি শব্দ অপরটির প্রতিশব্দ মাত্র। কিন্তু আপনি কি জানেন এই দুটি শব্দই সম্পূর্ণ পৃথক। এমনকী দুটি তৈরির পদ্ধতিও সম্পূর্ণ আলাদা। শুধু তাই নয়, দুটি জিনিসের উপকারিতাগুলিও একে অপরের থেকে আলাদা।
 
‘কার্ড’ বাড়িতে তৈরি করা যায় তবে ‘ইয়োগার্ট’ তৈরি করা হয় মূলত ইন্ডাস্ট্রিয়াল পদ্ধতিতে। দুটি তৈরি পদ্ধতি সম্পূর্ণ আলাদা। জেনে নেওয়া যাক সেই পদ্ধতি। দুধ ভালো করে ফুটিয়ে তারপর তাকে ঠান্ডা করে তার মধ্যে ‘সাজো’ অর্থাৎ পুরোনো দই মিশিয়ে নতুন করে যে দই পাতা হয় তাকেই ইংরেজিতে বলাহয় কার্ড। এই ক্ষেত্রে, দইয়ে উপস্থিত ল্যাকটিক অ্যাসিড ব্যাকটেরিয়া ৫-৭ ঘণ্টার মধ্যে দুধকে দইতে রূপান্তরিত করে। অন্যদিকে ইয়োগার্ট তৈরি করা হয় ইন্ডাস্ট্রিতে। এই ক্ষেত্রে দই তৈরির সময় দুটি ভিন্ন ব্যাকটেরিয়া ব্যবহার করা হয়। এছাড়াও, কৃত্রিম গাঁজন প্রক্রিয়া এবং কিছু অতিরিক্ত স্বাদ যোগ করার পরে, প্রস্তুত করা হয় ইয়োগার্ট।
 
শুধু তৈরির পদ্ধতি নয়, কার্ড এবং ইয়োগার্টের পুষ্টিগুণেও রয়েছে বিস্তর পার্থক্য। কার্ডে রয়েছে ভিটামিন বি৬, ভিটামিন বি১২, ক্যালসিয়াম, রিবোফ্লাভিন, ফসফরাস এবং প্রচুর পরিমাণে আয়রন। অন্যদিকে, সোডিয়াম, ভিটামিন এ এবং ক্যালসিয়ামের সেরা উৎস হিসেবে বিবেচনা করা হয় ইয়োগার্টকে। শুধু তাই নয়, কার্ডের চেয়ে ক্যালোরিও বেশি থাকে ইয়োগার্ট-এ।
 
ইন্ডাস্ট্রিয়াল পদ্ধতিতে তৈরি হয় বলে ইয়োগার্ট-এর স্বাদ খানিক মিষ্টি ধরনের হয়। তবে হল আমলে মিষ্টি দই খাওয়ার রেওয়াজের সঙ্গে গুলিয়ে ফেললে চলবে না, কথা হচ্ছে সাদা দই নিয়েই। অন্যদিকে কার্ড কিছুটা টক। রান্নায় ব্যবহার করা হয় যে ধরনের দই তাকে বলা হয় কার্ড। তাই যেকোনও খাবারে দুম করে ইয়োগার্ট মেশানো যায় না। তবে কার্ড এবং ইয়োগার্ট উভয়ই অন্ত্রের বন্ধুত্বপূর্ণ ব্যাকটেরিয়া।
 
কার্ড ও ইয়োগার্ট-এর উপকারিতাতেও রয়েছে পার্থক্য। কার্ড সেবন হাড় ও দাঁত মজবুত করার পাশাপাশি পরিপাকতন্ত্রকে সুস্থ রাখতেও সহায়তা করে। অন্যদিকে ইয়োগার্ট খেলে রক্তচাপ ও কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে। পাশাপাশি দেহের অতিরিক্ত ওজন কমাতে অথবা অস্টিওপোরোসিস এবং আর্থ্রাইটিসের মতো রোগ নিরাময়ে উপকারী ভূমিকা গ্রহণ করে কার্ড।

More Articles