গীতাপাঠের উত্তর, সংবিধান পাঠে জড়ো হতে ডাক দিচ্ছে কংগ্রেস
Constitution Reading: দেশের বহুত্ববাদের পক্ষে, সংবিধান রক্ষার স্বার্থে, ‘সহস্র কন্ঠে সংবিধান পাঠ’-এর ডাক দিল কংগ্রেস।
ব্রিগেডে গীতা পাঠের পর ধর্মতলায় ‘সংবিধান পাঠ’-এর ডাক দিল পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেস। আগামী ২০ ডিসেম্বর রানি রাসমণি রোডে দুপুর ১টার সময় এই কর্মসূচি আয়োজিত হবে। পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকারের বক্তব্য, ভারতবর্ষের রাজনৈতিক পরিসরে এক বিপজ্জনক আবহাওয়া তৈরি হয়েছে। যেভাবে ভাষা, পোশাক, খাদ্য ও ধর্মের ভিত্তিতে বিভাজনের রাজনীতি চলছে, তা অবিলম্বে বন্ধ হওয়া দরকার। এমন পরিস্থিতিতে দেশের বহুত্ববাদের পক্ষে, সংবিধান রক্ষার স্বার্থে, ‘সহস্র কন্ঠে সংবিধান পাঠ’-এর ডাক দেওয়া হয়েছে।
এদিন ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের নেতা-কর্মীরা রাস্তায় নেমে সাধারণ মানুষের সঙ্গে গলায় গলা মিলিয়ে সংবিধান পাঠ করবেন ও শপথ নেবেন। অনুষ্ঠানের সূচনায় গাওয়া হবে ‘বন্দেমাতরম’ গান। ৭ ডিসেম্বর কলকাতার ব্রিগেড ময়দানে অনুষ্ঠিত হয় ‘পাঁচ লক্ষ কণ্ঠে গীতা পাঠ’-এর অনুষ্ঠান। ‘সনাতন সংস্কৃতি সংসদ’ সেই অনুষ্ঠানের আয়োজক হলেও, মুখ্যমন্ত্রী অনুষ্ঠানটিকে ‘বিজেপির প্রোগ্রাম’ বলেছেন, গীতা পাঠের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত থেকেও না যাওয়ার কারণ বলতে গিয়ে। বঙ্গ বিজেপি-র প্রথম সারির নেতাদেরও (শুভেন্দু অধিকারী মজুমদার) সেই অনুষ্ঠানে দেখা গিয়েছে। তাছাড়া বিজেপির নেতারা, প্রকাশ্যেই বলে থাকেন, মুসলিমদের ভোটের তাঁদের দরকার নেই। হিন্দুরা পদ্ম শিবিরের পাশে আছে (অথবা হিন্দুদের পাশে আছে পদ্ম শিবির)।
আরও পড়ুন- গীতাপাঠে প্যাটি বিক্রেতাকে হেনস্থা! কে কী খাবে, তা ঠিক করবে কে?
কার্যত এভাবে বাংলায় মেরুকরণের রাজনীতি চলছে। অন্যদিকে শাসকদলও নরম হিন্দুত্বের পথে হাঁটছে। অযোধ্যায় রামমন্দির তৈরি হয়েছে, আর দিঘায় তৈরি হয়েছে জগন্নাথ মন্দির। এছাড়া নিউটাউনের দুর্গাঙ্গন আর শিলিগুড়িতে মহাকাল মন্দির নির্মাণের প্রচারও সুকৌশলে রাজনৈতিক বক্তব্যের মধ্যে চালান করে দিচ্ছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকার বলেন, এই সংকীর্ণ রাজনীতিই মানদণ্ড হয়ে দাঁড়িয়েছে। যার বিরুদ্ধেই আমাদের লড়াই।
প্রসঙ্গত, রবিবার ব্রিগেডে গীতা পাঠের অনুষ্ঠানে চিকেন প্যাটি বিক্রি করার অভিযোগে শেখ রিয়াজুল নামের এক ব্যক্তিকে মারধর করার অভিযোগে এই মুহূর্তে উত্তপ্ত রাজ্য-রাজনীতি। চিকেন ও ভেজ দু’রকমের প্যাটিই বিক্রি করছিলেন ওই বিক্রেতা। কিন্তু শুধু চিকেন প্যাটি বিক্রির বিষয়টি যেভাবে সমাজমাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে, যা বাংলার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিতেও আঘাত হানছে। হিন্দু-মুসলিম বিভেদ সৃষ্টিমূলক, প্ররোচনামূলক মন্তব্য উপচে পড়ছে সামাজিক মাধ্যমে। তবে, একটা অংশ অবশ্য এর বিরোধিতাও করছে। শেখ রিয়াজুল ছাড়াও সেদিন ময়দানে তপসিয়ার বাসিন্দা মোহম্মদ সালাউদ্দিন নামের আরও এক বিক্রেতাও আক্রান্ত হন ওই গীতাপাঠের অনুষ্ঠানে প্যাটি বিক্রি করার সময়। পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেস এই ঘটনার প্রতিবাদে ধর্মতলায় চিকেন প্যাটি বিতরণ করে ১০ ডিসেম্বর। এবার বহুত্ববাদের পক্ষে ‘সহস্র কন্ঠে সংবিধান পাঠ’-এর ডাক দিল তারা।

Whatsapp
