এক-দু'জন নয়, অন্তত ৫০০ সন্তানের 'বাবা'! কী কারণে রাতারাতি হাজতবাস এই সঙ্গীতশিল্পীর?

Musician fathered more than 500 kids : পুলিশ তাঁকে রাতারাতি গ্রেফতার করেছে। কেন? কারণও সেই একই, ৫০০-রও বেশি সন্তানের বাবা হওয়ার জন্য!

আজকের এই নিউক্লিয়ার পরিবার, ফ্যামিলি প্ল্যানিংয়ের যুগে সন্তান পালনও অনেক পরিকল্পনা করে করা হয়। সেখানে স্বামী-স্ত্রীর নিজস্ব ভাবনা জড়িয়ে থাকে। আগেকার দিনে তবুও খুব বেশি হলে কতজন সন্তান হতো দম্পতির? আট থেকে দশ! কিন্তু একসঙ্গে ৫০০-রও বেশি সন্তানের বাবা হওয়া কি মুখের কথা! তাও মাত্র ৪১ বছর বয়সে! কী করে এমনটা সম্ভব? এই প্রশ্নের উত্তর ভাবার আগে বলে রাখা ভালো, সেই সন্তানদের ‘বাবা’ আপাতত শ্রীঘরে। পুলিশ তাঁকে রাতারাতি গ্রেফতার করেছে। কেন? কারণও সেই একই, ৫০০-রও বেশি সন্তানের বাবা হওয়ার জন্য!

একটু অদ্ভুত না এই ঘটনাটা? ঠিক এমনই কাণ্ড ঘটেছে জোনাথন জ্যাকোব মেইজারের জীবনে। নেদারল্যান্ডের এই বাসিন্দা বর্তমানে কেনিয়ায় থাকেন। পেশায় তিনি একজন সঙ্গীতশিল্পী। শিল্পী মানুষ, তাই সঙ্গীতের খোঁজে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়ান। এবার সেই মেইজারই পড়েছেন মহা ফ্যাসাদে। নেদারল্যান্ডের পুলিশ আপাতত তাঁকে গ্রেফতার করেছে। এতগুলো সন্তানের জনক হওয়াই গ্রেফতারির কারণ। কিন্তু কেন? আর জোনাথন মেইজারের এত সন্তান হলই বা কীভাবে?

আসল রহস্য লুকিয়ে আছে অন্য জায়গায়। সঙ্গীতশিল্পী হিসেবে কাজ তো করেনই, সেইসঙ্গে আরও একটি জায়গায় যুক্ত আছেন মেইজার। তিনি একজন স্পার্ম ডোনার। অর্থাৎ, তিনি নিজের শুক্রাণু স্বেচ্ছায় দান করেন। তার বদলে টাকাও পান। ইতিমধ্যেই বিভিন্ন স্পার্ম ডোনেশন ক্লিনিকে গিয়ে তিনি এই কাজটি করেছেন। কিন্তু তাই বলে ইতিমধ্যেই ৫০০-রও বেশি সন্তানের ‘বাবা’ হয়ে গিয়েছেন তিনি! হিসেব বলছে, ৫০০টি শিশুর জন্ম হয়েছে তাঁর শুক্রাণুর ‘হাত’ ধরে। কিন্তু এত বেশি সংখ্যায় স্পার্ম ডোনেশন কেন করেছেন তিনি?

ঠিক এই জায়গাতেই প্রশ্ন তুলেছে ডোনরকাইন্ড ফাউন্ডেশন। নেদারল্যান্ডের এই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ডোনর শিশু অর্থাৎ যারা আইভিএফ পদ্ধতিতে জন্ম নিয়েছে, সেই বাচ্চাদের অধিকারের কথা বলে। এই সংস্থাই জোনাথন মেইজারের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নিয়েছে। তাদের বক্তব্য, মেইজার অতিরিক্ত পরিমাণে শুক্রাণু দান করেছেন। গোটা বিশ্বের ১৩টি জায়গায় তিনি স্পার্ম দান করেছেন। যা আইনত অবৈধ। বলা হয়, একজন ডোনর সর্বাধিক ২৫টি সন্তানের বাবা হতে পারবেন। মানে, তাঁর শুক্রাণুর নমুনা থেকে পঁচিশটি সন্তান জন্ম নিতে পারে। তার বেশি হলেই সেটা নিয়ম্ভঙ্গ হয়ে যাবে।

ডোনরকাইন্ড ফাউন্ডেশনের আইনজীবীর বক্তব্য, মেইজারের এই কাণ্ডের ফলে ভবিষ্যতে ওই শিশুদের সমস্যা হতে পারে। এমনও হতে পারে, একই জিন থেকে জন্ম নেওয়া দুই সন্তানের মিলন হল। এর ফলে পরবর্তী প্রজন্মে সমস্যা হতে পারে। তাছাড়া ৫৫০ বার শুক্রাণু দান করা নেদারল্যান্ড সহ অনেক দেশেই আইনত অপরাধ। সেজন্যই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। সন্তানের জন্ম দিয়েও জেলে যেতে হচ্ছে, ভাবা যায়!

More Articles