এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইট ১৭১! বিমান দুর্ঘটনার পাঁচ সম্ভাব্য কারণ

Air India Flight : দূষিত জ্বালানি ইঞ্জিন বাধা সৃষ্টি করে তা বন্ধ করে দিতে পারে। ইঞ্জিনে পর্যাপ্ত জ্বালানি না পৌঁছানোর কারণে সমস্যা হতে পারে। বিমানটির লন্ডনের জন্য পূর্ণ জ্বালানি ছিল, সেখান থেকেও ।

আহমেদাবাদ থেকে লন্ডন গ্যাটউইকের উদ্দেশে উড়ান শুরু করার কিছুক্ষণের মধ্যেই ভেঙে পড়ল এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইট এআই১৭১। এই বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনারে ২৪২ জন আরোহী ছিলেন। মাত্র একজন বেঁচে ফিরেছেন। বিমানটি একটি আবাসিক এলাকায় আছড়ে পড়ে, এই ঘটনায় অন্তত ২৬৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা এখন এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনার কারণ খুঁজছেন। উঠে আসছে পাঁচটি সম্ভাবনার কথা।

১. পাখির ধাক্কা

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, পাখি বিমানের ইঞ্জিনে ধাক্কা দিয়ে তা বিকল করতে পারে। ২০০৯ সালে নিউইয়র্কে একটি বিমান পাখির ধাক্কায় দুটি ইঞ্জিন হারিয়ে নদীতে অবতরণ করেছিল। আহমেদাবাদ বিমানবন্দরে আগেও পাখির ধাক্কার ঘটনা ঘটেছে। দুর্ঘটনার দিন গরম আবহাওয়ার কারণে পাখির সংখ্যা বেশি থাকতে পারে। একমাত্র জীবিত ব্যক্তি বিশ্বকুমার রমেশ বলেছেন, ৩০ সেকেন্ড পর একটি জোরে শব্দ শুনেছিলেন। পাখির ধাক্কায় এই শব্দ হতে পারে। তবে কিছু বিশেষজ্ঞ বলছেন, দুটি ইঞ্জিন বিকল হলে দু'বার শব্দ হতো।

২. জ্বালানির সমস্যা

দূষিত জ্বালানি ইঞ্জিন বাধা সৃষ্টি করে তা বন্ধ করে দিতে পারে। ইঞ্জিনে পর্যাপ্ত জ্বালানি না পৌঁছানোর কারণে সমস্যা হতে পারে। বিমানটির লন্ডনের জন্য পূর্ণ জ্বালানি ছিল, সেখান থেকেও ।

৩. নাশকতা

কিছু বিশেষজ্ঞ নাশকতার সম্ভাবনার কথা বলেছেন। তবে প্রাথমিক তদন্ত এবং এক্স-এ পোস্ট অনুযায়ী, নাশকতার সম্ভাবনা কম। ন্যাশনাল সিকিউরিটি গার্ড (এনএসজি) বিমানের ব্ল্যাক বক্স উদ্ধার করেছে, এবং প্রাথমিক পরীক্ষায় অন্যান্য কারণের দিকে ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।

৪. পাইলট বা প্রযুক্তিগত ত্রুটি

ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, বিমানের ল্যান্ডিং গিয়ার নিচে ছিল এবং উড়ানের জন্য ডানার ফ্ল্যাপ সঠিকভাবে সেট করা হয়নি। সাধারণত, পাইলটরা উড্ডয়নের সময় ল্যান্ডিং গিয়ার তুলে ফেলেন এবং ফ্ল্যাপ সঠিকভাবে খুলে যায়। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, পাইলটরা হয়তো কোনো আকস্মিক সমস্যার কারণে (যেমন ইঞ্জিন বিকল হওয়া) এই কাজগুলো করতে ভুলে গিয়েছেন। একজন প্রাক্তন পাইলট বলেছেন, বিমানটিতে শক্তি এবং গতির অভাব ছিল, যার ফলে তা থেমে যায়।

৫. ইঞ্জিন বিকল

কিছু বিশেষজ্ঞ মনে করেন, দুটি ইঞ্জিনই যান্ত্রিক সমস্যার কারণে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। এক্স-এ একজন প্রাক্তন নাসা কর্মীর পোস্টে বলা হয়েছে,বিমানের জরুরি শক্তি ব্যবস্থা (জার্ম এয়ার টারবাইন) সক্রিয় হয়েছিল, যা ইঞ্জিন বন্ধ হলে ঘটে। বোয়িং ৭৮৭-এ জিই ইঞ্জিন ব্যবহৃত হয়।

তদন্তকারীরা বিমানের একটি ব্ল্যাকবক্স উদ্ধার করেছেন, যা উড়ান এবং পাইলটদের কথোপকথন সম্পর্কে আরও তথ্য দেবে। ভারত, ইউকে এবং বোয়িং-একসঙ্গে এই ঘটনার তদন্ত করছে। ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

More Articles