আসছে মানুষের মতো AI! নিজেকে টিকিয়ে রাখার যে একমাত্র পথ এখন অবশিষ্ট
Artificial Intelligence: Artificial General Intelligence (AGI) হচ্ছে AI-এর এমন এক রূপ যা মানুষের মতো যুক্তি ও বিশ্লেষণে সক্ষম।
বিশ্ব এগিয়ে চলেছে AI-চালিত ভবিষ্যতের দিকে। সেই ভবিষ্যতে 'সারভাইভাল অফ দ্য ফিটেস্ট'-এর লড়াইয়ে নিজেকে যোগ্যতম প্রমাণ করতে গেলে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ছোঁয়াচ এড়িয়ে বাঁচা সম্ভব? Google DeepMind-এর সিইও ডেমিস হাসাবিস নতুন প্রজন্মকে স্পষ্ট এক বার্তা দিয়েছেন। বলেছেন, শিখতে হবে, নইলে পিছিয়ে থাকতে হবে। এখনই এই নয়া প্রযুক্তিকে সঙ্গী করে না চলতে পারলে ভবিষ্যৎ যে আঁধারে, তা মোটামুটি দ্ব্যর্থহীন ভাষাতেই বুঝিয়ে দিয়েছেন হাসাবিস। হাসাবিস তাঁর সংস্থার সবচেয়ে উচ্চমানের AI উন্নয়নের নেপথ্যের উন্নত গবেষণা ল্যাব, Google DeepMind-এর নেতৃত্ব দিচ্ছেন। এর মধ্যেই রয়েছে জেমিনি চ্যাটবট। সংস্থার প্রয়াস এখন কৃত্রিম সাধারণ বুদ্ধিমত্তা (AGI) অর্জন। বিষয়টি যা এখনও অবাস্তব স্তরেই রয়েছে। Artificial General Intelligence (AGI) হচ্ছে AI-এর এমন এক রূপ যা মানুষের মতো যুক্তি ও বিশ্লেষণে সক্ষম। সাম্প্রতিক এক সম্মেলনে, হাসাবিস বলেছেন গুগল ডিপমাইন্ড আর বছর দশেকের মধ্যেই AGI তৈরি করে ফেলবে। ফলে নিকট ভবিষ্যতে AI কী রূপ নেবে, তা অনুমেয়।
জনপ্রিয় প্রযুক্তি পডকাস্ট 'হার্ড ফর্ক’-এ একটি সাক্ষাৎকারে হাসাবিস কিশোর-কিশোরীদের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে নাড়াঘাঁটা করতে উৎসাহিত করেছেন। তাঁর বক্তব্য, ইন্টারনেট মিলেনিয়ালদের, স্মার্টফোন যেমন জেন জি-দের বৈশিষ্ট্য হয়ে উঠেছে, তেমনই জেনারেটিভ AI জেনারেশন আলফার বৈশিষ্ট্য হতে চলেছে। "আমি মনে করি, আগামী ৫ থেকে ১০ বছরের মধ্যে, আমরা নতুন প্রযুক্তিতে বড় পরিবর্তন আনতে চলেছি, যার অর্থ, কিছু চাকরির পতন ঘটবেই। তবে নতুন, আরও মূল্যবান, আরও আকর্ষণীয় চাকরি তৈরি হবে," বলছেন হাসাবিস।
আরও পড়ুন-প্রযুক্তির দুনিয়ায় নয়া বিপ্লবের নাম অ্যাজেন্টিক AI, জানেন কী কী করতে পারে এই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা?
ওই পডকাস্টে, তিনি নতুন প্রজন্মকে AI বিষয়ে নিজেদের পরিচিত করতে বলেছেন। AI কীভাবে কাজ করে এবং মানুষ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে দিয়ে কী করাতে পারে তা বুঝতে পারা আবশ্যক বলে মনে করছেন হাসাবিস। তবে তিনি এও বলেছেন যে, কেবল প্রযুক্তি-সচেতনতাই যথেষ্ট নয়। এক দৃঢ় STEM (বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল এবং গণিত) ভিত্তির উপর জোর দিয়েছেন হাসাবিস। কোডিং-এর পাশাপাশি সৃজনশীলতা, অভিযোজনযোগ্যতা এবং স্থিতিস্থাপকতার মতো বৃহত্তর 'মেটা স্কিল'-এর গুরুত্বের কথাও বলছেন তিনি। "এই ক্ষমতাগুলি পরবর্তী প্রজন্মকে উন্নতি করতে সাহায্য করবে, STEM-এর মৌলিক বিষয়গুলিতে দক্ষ হওয়া এখন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ঠিকই, তবে ক্রমশ পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়ার মানসিকতা বিকাশ করাটাও সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ,” বলছেন হাসাবিস।
OpenAI ২০২২ সালে ChatGPT চালু করে। তার পর থেকে, AI-এর ক্ষেত্র দ্রুত বিকশিত হয়েছে। মানুষের কর্মক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রভাব সম্পর্কে আশা এবং উদ্বেগ দুই-ই জাগিয়ে তুলেছে এটি। AGI-এর দিকে দৌড় যত তীব্র হচ্ছে, ততই উদ্বেগ আরও বাড়ছে। হাসাবিস স্পষ্ট বলছেন, AI কেবল ভবিষ্যত নয় - এটি বর্তমান। জেনারেশন আলফা একে যত তাড়াতাড়ি গ্রহণ করবে ততই মঙ্গল।
শিক্ষা ও কর্মসংস্থানের উপর কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রভাব সম্পর্কে বলতে গিয়ে হাসাবিস বলেছেন, কোনও কাজে মানুষের কঠোর দক্ষতা গুরুত্বপূর্ণ ঠিকই, তবে অনেক কাজ ইতিমধ্যেই মেশিন আরও দক্ষভাবে সামলে দিচ্ছে। তাই এমন গুণাবলী মানুষের মধ্যে বাড়াতে হবে যা এআই-এর পক্ষে নকল করাই কঠিন হবে। জেনারেটিভ এআই-কে আপন করতে এবং একইসঙ্গে নিজেদের এগিয়ে রাখতে পড়ুয়াদের আরও সক্রিয় এবং কৌতূহলী হওয়া দরকার। আনুষ্ঠানিক শিক্ষার মাধ্যমে মৌলিক বিষয়গুলি শেখার পাশাপাশি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার জগতে একটু একটু করে ঢুকে না পড়লে পিছিয়ে পড়বে জেনারেশন আলফা, মনে করছেন হাসাবিস।