ভয়াবহ অভিযোগ! কেন ৬০০ মিলিয়ন ডলার জরিমানা দিতে হবে টিকটককে?

TikTok Fined: তদন্তে উঠে আসে যে, ২০২০ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে ইউরোপের টিকটক ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্য চিনে পাঠানো হয়েছে

ভারতে নিষিদ্ধ হওয়ার আগে অবধি, টিকটকের জনপ্রিয়তা ছিল আকাশচুম্বী! এখনও বিশ্বজুড়ে কোটি কোটি মানুষ টিকটক অ্যাপ ব্যবহার করেন। তবে টিকটকের ইতিহাসে এমন ধাক্কা এই প্রথম! ইউরোপিয় ইউনিয়নের কঠোর শাস্তির মুখে টিকটক! প্রায় ৬০০ মিলিয়ন ডলার জরিমানা হয়েছে টিকটকের। অভিযোগ, ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষায় গাফিলতি দেখিয়েছে টিকটক এবং সেই সব ব্যক্তিগত তথ্য চিনে পাঠানো হয়েছে। তথ্য অধিকার ও আন্তর্জাতিক সাইবার নিরাপত্তা নীতি লঙ্ঘনের ভয়াবহ অভিযোগ এটি।

ইউরোপিয় ইউনিয়নের একটি গোপনীয়তা পর্যবেক্ষণ সংস্থা টিকটককে ৫৩০ মিলিয়ন ইউরো (৬০০ মিলিয়ন ডলার) জরিমানা করেছে। চার বছরের টানা তদন্তে দেখা গেছে এই ভিডিও শেয়ারিং অ্যাপ চিনকে তথ্য পাঠাচ্ছে। অর্থাৎ টিকটক ব্যবহারকারীদের উপর গুপ্তচরবৃত্তি চালানো হচ্ছে, যা ইইউ-এর তথ্য গোপনীয়তা নিয়মকে লঙ্ঘন করছে।

আরও পড়ুন- ভারতের ইউটিউব রাজধানী এই গ্রাম! অবাক করবে ইউটিউবারদের উত্থান কাহিনি

ইউরোপিয় ইউনিয়নের তথ্য সুরক্ষা সংস্থা, আয়ারল্যান্ডের ডেটা প্রোটেকশন কমিশন ২০২১ সালে একটি তদন্ত শুরু করেছিল টিকটকের বিরুদ্ধে। তদন্তে উঠে আসে যে, ২০২০ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে ইউরোপের টিকটক ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্য চিনে পাঠানো হয়েছে ব্যবহারকারীদের কোনওরকম অনুমতি না নিয়েই। টিকটকের বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ, তারা চিনের সন্ত্রাসবিরোধী ও গোয়েন্দাবিরোধী আইনকে মেনে নিয়েছে। এই আইনে চিনা অনায়াসে ইউরোপিয় টিকটক ব্যবহারকারীদের তথ্য চাইতে পারে। ডেটা প্রোটেকশন কমিশন জানাচ্ছে, চিনে কর্মরত টিকটক কর্মীরা ইউরোপিয়দের তথ্য দূর থেকে ব্যবহার করেছেন, অথচ সেই তথ্য নিরাপদভাবে সংরক্ষণ করা হচ্ছে— এমন কোনও প্রমাণ টিকটক দিতে পারেনি।

আয়ারল্যান্ডের ডেটা সুরক্ষা কমিশন ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্য কোথায় পাঠানো হচ্ছে সে সম্পর্কে স্বচ্ছতা বজায় না রাখার অভিযোগ এনেছে টিকটকের বিরুদ্ধে। পাশাপাশিই ছয় মাসের মধ্যে নিয়ম মেনে চলার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। টিকটক জানিয়েছে, তারা এই সিদ্ধান্তের সঙ্গে একমত নয়। টিকটক পাল্টা আপিল করার পরিকল্পনা করছে। উল্লেখ্য, ২০২৩ সালে, আইরিশ এই সংস্থাই একটি পৃথক শিশু গোপনীয়তা তদন্তের প্রেক্ষিতে টিকটককে কয়েকশ মিলিয়ন ইউরো জরিমানা করেছিল।

টিকটকের ওপর চাপ বাড়িয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও। ২০২৪ সালে মার্কিন কংগ্রেস আইন পাস করে জানিয়েছিল টিকটকের মূল প্রতিষ্ঠান ‘বাইটড্যান্স’ যদি আমেরিকার বাজারে থাকতে চায়, তবে তাদের মালিকানা বিক্রি করতে হবে। উল্লেখ্য, টিকটক শুধু ভারতে নয়, ফ্রান্সের নিউ ক্যালেডোনিয়া, পাকিস্তান এবং নেপালের মতো কিছু দেশে বিভিন্ন সময় নিষিদ্ধ হয়েছে।

More Articles