আহমেদাবাদ বিমান দুর্ঘটনায় যে কারণগুলি উঠে আসছে

Air India Crash: বিশেষজ্ঞেরা প্রশ্ন তুলছেন, দুর্ঘটনাগ্রস্ত বিমানটির ল্যান্ডিং গিয়ারে কোনো ত্রুটি ছিল কিনা। কারণ, ল্যান্ডিং গিয়ারটি বিমান ওড়ার পর ঠিক মতো বন্ধ হয়নি।

বৃহস্পতিবার (১২ জুন) দুপুরে আহমেদাবাদ থেকে লন্ডনগামী এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইট এআই১৭১ আহমেদাবাদ বিমানবন্দরের কাছেই মেঘানীনগর এলাকায় ভেঙে পড়ে। বিমানটিতে প্রায় ২৪২ জন যাত্রী ও ক্রু সদস্য ছিলেন, যাদের মধ্যে ১৬৯ জন ভারতীয়, ৫৩ জন ব্রিটিশ, ৭ জন পর্তুগিজ এবং একজন কানাডিয়ান নাগরিক ছিলেন। এই ঘটনা বিমানযাত্রার ইতিহাসে সবচেয়ে বড় দুর্ঘটনা বলে মনে করা হচ্ছে। গত পাঁচ বছরে ভারতে এত বড় বিমান দুর্ঘটনা ঘটেনি। এটিই ভারতের সবচেয়ে বড় মারাত্মক যাত্রীবাহী বিমান দুর্ঘটনা। এই বিমানটি ছিল বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার। এর আগে এই বিমানটি এত বড় দুর্ঘটনার মুখে পড়েনি। এই ঘটনা মডেলটির নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে।

তবে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, বিমানের ব্ল্যাকবক্সটি উদ্ধার হলে জানা যাবে দুর্ঘটনার আসল কারণ। তাই এই মুহূর্তে দুর্ঘটনার নিশ্চিত কারণ বলা সম্ভব নয়। তবে কী কারণে এই ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটেছে তা নিয়ে বিশেষজ্ঞদের আলোচনায় উঠে এসেছে চারটি কারণ।

প্রতিটি বিমানের ভারবহন ক্ষমতা আলাদা

বিমানটির ভার এবং সেই সংক্রান্ত গণনায় ত্রুটি থাকার ফলে এই দুর্ঘটনা হতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, যাত্রী এবং মালপত্র-সহ বিমানের ওজন কত হয়েছিল, তা খতিয়ে দেখা জরুরি। প্রতিটি বিমানের আলাদা ভারবহন ক্ষমতা থাকে। কিন্তু অনেক সময়ে ওজনের হিসাবে গোলমাল হয়ে যায়। তখন বিমানটি ভেঙে পড়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়। প্রত্যেক বিমানের আকার, গঠন মতো ভারবহন ক্ষমতা নির্দিষ্ট করা হয়ে থাকে। বিমানে যাত্রীদের কোথায় বসানো হবে, কীভাবে বসানো হলে বিমানের সামনের এবং পিছনের দিকের ভারসাম্য বজায় থাকবে, বিমান ওড়ার আগে এই সব কিছুই গুরুত্বের সাথে দেখে নিতে হয়। বিশেষজ্ঞরা প্রশ্ন তুলছেন, বৃহস্পতিবার সেই হিসাবে ভুল হয়েছিল কি না। বিমানটি একটি ভবনে ধাক্কা খায়, সেখানে তার একটি চাকা আটকে গিয়েছিল। বিশেজ্ঞরা বলছেন, ওজনের হিসাবে ভুল হলে এই ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে।

ল্যান্ডিং গিয়ারে ত্রুটি

বিশেষজ্ঞেরা প্রশ্ন তুলছেন, দুর্ঘটনাগ্রস্ত বিমানটির ল্যান্ডিং গিয়ারে কোনো ত্রুটি ছিল কিনা। কারণ, ল্যান্ডিং গিয়ারটি বিমান ওড়ার পর ঠিক মতো বন্ধ হয়নি। বলে রাখা ভালো, বিমানের ল্যান্ডিং গিয়ারই  ভার নিয়ন্ত্রণ করে। বিমান ওঠানামার সময় রানওয়ের সংস্পর্শে আসে ল্যান্ডিং গিয়ার। বিমানের চাকাও এখন থেকেই বেরিয়ে আসে। এতে বিমানের গতিও ল্যান্ডিং গিয়ারের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। তাই ল্যান্ডিং গিয়ারে সমস্যা থাকলেও দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

লিফ্‌ট কমে যাওয়া

দুর্ঘটনাগ্রস্ত বিমানটি মাটি থেকে ওঠার পরেই উপরের দিকে যাওয়ার ক্ষমতা কমে এসেছিল। ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, একসময় উপরের দিকে ওঠার ক্ষমতা একেবারেই শেষ হয়ে আসে। অনেকে বিশেষজ্ঞ বলছেন, রানওয়ে ছাড়ার পর বিমানটি মাঝপথে সামান্য গোঁত্তাও খেয়েছিল বলে মনে হচ্ছে। লিফ্‌ট কমে যাওয়ার কারণেই এমন ঘটেছে।

ইঞ্জিনে ত্রুটি

অনেক বিশেষজ্ঞ এও মনে করছেন যে এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানটির ইঞ্জিনে হয়তো ত্রুটি ছিল। দুর্ঘটনার আগে বিমানটি সর্বোচ্চ ৩২২ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টার গতিতে পৌঁছোতে পেরেছিল। এটি একেবারেই স্বাভাবিক ঘটনা নয় বলেই জানাচ্ছেন বিমান বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা বলছেন, ওই সময়ে বিমানের গতি আরও অনেক বেশি হওয়ার কথা। হয়তো কোনও কারণে বিমানের ইঞ্জিন শক্তি হারিয়ে ফেলে। আর তার ফলেই ভয়াবহ দুর্ঘটনাটি ঘটে।

More Articles