ইসলামাবাদ বিস্ফোরণ: ভারতের দিকে আঙুল পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর

Pakistan Blast: পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ এই বিস্ফোরণের জন্য আফগানিস্তানের দিকেও ইঙ্গিত করেছেন।

পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদে ভয়াবহ আত্মঘাতী বিস্ফোরণে কেঁপে উঠল গোটা শহর। মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) দুপুরে আদালত চত্বরে হওয়া এই হামলায় অন্তত ১২ জন নিহত ও ২৭ জন আহত হয়েছেন। ঘটনাটির পর পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ সরাসরি ভারতকে এই হামলার জন্য দায়ী করেছেন।

এই হামলার নিন্দা জানিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে শাহবাজ শরিফ বলেন, “ভারতের সন্ত্রাসী প্রক্সিগুলোর মাধ্যমে পাকিস্তানের নিরস্ত্র নাগরিকদের উপর হামলা অত্যন্ত নিন্দনীয়।” তিনি আরও বলেন, “ভারতকে এই অঞ্চলে প্রক্সির মাধ্যমে সন্ত্রাস ছড়ানোর জঘন্য কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে।” তবে পাকিস্তানের পক্ষ থেকে ভারতের বিরুদ্ধে ওঠা এই অভিযোগের বিষয়ে এখনো কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি নয়াদিল্লি।

ঠিক কী ঘটেছিল?

স্থানীয় সময় দুপুরের দিকে আদালতের প্রধান গেটের বাইরে এই বিস্ফোরণ ঘটে। ওই সময় আদালত এলাকায় সাধারণ মানুষ ও আইনজীবীদের ভিড় ছিল। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, এক ব্যক্তি গেটে ঢোকার চেষ্টা করছিলেন। নিরাপত্তারক্ষীরা তাঁকে আটকাতে গেলে তিনি শরীরে বাঁধা বিস্ফোরক ডিভাইসটি উড়িয়ে দেন। বিস্ফোরণের শব্দে চারপাশ কেঁপে ওঠে। আশেপাশের ভবনের কাচ ভেঙে যায়। পুলিশ জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে সাধারণ নাগরিক ও নিরাপত্তা কর্মী দুই রয়েছেন।

এখনও পর্যন্ত কোনো সংগঠন এই হামলার দায় স্বীকার করেনি। হামলার পর পুরো আদালত চত্বর ঘিরে ফেলে নিরাপত্তা বাহিনী। আশপাশের এলাকা খালি করে তল্লাশি শুরু হয়। আহতদের স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে, বেশ কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

আরও পড়ুন

২০২৫ প্রথম নয়, বারবার গাড়ি বিস্ফোরণে ছিন্নভিন্ন হয়েছে ভারতাত্মা

সাম্প্রতিক সময়ে পাকিস্তানে ফের বেড়েছে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা। বিশেষত খাইবার পাখতুনখোয়া ও বেলুচিস্তান প্রদেশে প্রায়ই বিস্ফোরণ ও হামলার খবর মিলছে। কিন্তু রাজধানী ইসলামাবাদের মতো নিরাপত্তায় মোড়া এলাকায় এমন ঘটনা দেশজুড়ে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে।

পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ এই বিস্ফোরণের জন্য আফগানিস্তানের দিকেও ইঙ্গিত করেছেন। তিনি বলেছেন, “কাবুলের শাসকরা চাইলে পাকিস্তানে সন্ত্রাস বন্ধ করতে পারে। কিন্তু ইসলামাবাদে হামলা করে তারা এক স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে, যার জবাব পাকিস্তান যথাযথভাবে দিতে সক্ষম।”

প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ জানান, হামলায় কারা জড়িত তা খুঁজে বের করতে তিনি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। তাঁর কথায়, “যারা এই নৃশংস ঘটনার সঙ্গে যুক্ত, তাদের আইনের মুখোমুখি করা হবে।”

ইসলামাবাদের আদালত চত্বরে এই ভয়াবহ আত্মঘাতী হামলা শুধু পাকিস্তানের রাজধানীর নিরাপত্তা ব্যবস্থাকেই প্রশ্নের মুখে ফেলেনি, বরং গোটা দক্ষিণ এশিয়ার ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনাকেও আরও তীব্র করে তুলেছে। একদিকে পাকিস্তান ভারতের বিরুদ্ধে সরাসরি অভিযোগ তুলেছে, অন্যদিকে আফগানিস্তানের দিকেও ইঙ্গিত করেছে ইসলামাবাদ। ফলে হামলার তদন্ত যতই এগোবে, ততই স্পষ্ট হবে এর পেছনের প্রকৃত যোগসূত্র। আপাতত এই হামলা প্রভাব শুধু সীমান্তের ভেতরে নয়, আন্তর্জাতিক কূটনীতিতেও গভীরভাবে পড়ছে।

More Articles