যেন একই চিত্রনাট্যে পুনরাভিনয়, বাংলাদেশের মতোই নেপালে জেল ভাঙল অপরাধীরা
Nepal Prisoners Escape: বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৫টি কারাগার ১৫ হাজারেরও বেশি বন্দি পালিয়েছে। খুব অল্প সংখ্যক বন্দি স্বেচ্ছায় ফিরে এসেছে বা ধরা পড়েছে।
বাংলাদেশের মতোই নেপালে উত্তাল পরিস্থিতির সুযোগে জেল থেকে পালাল হাজার হাজার বন্দি। জেন জি-র আন্দোলনে অস্থির পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে নেপালে। ছাত্র-যুবদের বিক্ষোভের চাপে পদত্যাগ করেছেন প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি। দেশজুড়ে ছড়িয়েছে হিংসা, চলছে লুটপাট। সেই অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতির সুযোগে নেপালে কারাগার ভেঙে পালিয়েছে ১৫ হাজারেরও বেশি বন্দি।
ধানগাড়ি শহরের কারাগার থেকে ৬৮২ বন্দি পালিয়ে যায়। অবাক করা বিষয়, পালিয়েও ফিরে এসে একজন আত্মসমর্পণ করে। কারণ তার মনে আশঙ্কা জাগে যে, পালিয়ে যাওয়ার অপরাধে নতুন সরকার গঠনের পর তার শাস্তি দ্বিগুণ করে দেওয়া হতে পারে। ধানগাড়ি কারাগারে মোট ৬৯৭ বন্দি আটক ছিল। এখন সেখানে মাত্র পাঁচজন বন্দি রয়ে গেছে।
আরও পড়ুন- কেন সুশীলা কারকিকে অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী চাইছে নেপালের জেন জি?
অন্যদিকে মঙ্গলবার থেকে শুরু হওয়া সংঘর্ষে এখনও পর্যন্ত আটজন বন্দির মৃত্যু হয়েছে। পিটিআই-এর প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, দাঙ্গা, অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর করে একাধিক কারাগার থেকে হাজার হাজার বন্দি পালিয়েছে। দ্য কাঠমান্ডু পোস্ট-এর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, জেন জি আন্দোলনকারীরা কারাগারের প্রশাসনিক ভবন জ্বালিয়ে দেয়, মূল দরজা ভেঙে দেয় এবং বন্দিদের একযোগে মুক্ত করে। প্রাথমিক হিসেব অনুযায়ী, বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৫টি কারাগার ১৫ হাজারেরও বেশি বন্দি পালিয়েছে। খুব অল্প সংখ্যক বন্দি স্বেচ্ছায় ফিরে এসেছে বা ধরা পড়েছে।
সবথেকে বেশি বন্দি পলাতক কাঠমান্ডুর সেন্ট্রাল জেল থেকে। সুন্দরহারা কারাগার থেকে পালিয়েছে ৩,৩০০ জন বন্দি। এছাড়া বানকে জেলা কারাগার থেকে পালিয়েছে ৪৩৬ জন। বানকে জুভেনাইল রিফর্ম সেন্টার থেকে ১২২ জন বন্দি পালিয়েছে। ললিতপুরের নাখখু কারাগার থেকে ১,৪০০ জন এবং দিল্লিবাজার কারাগার থেকে পালিয়েছে ১,১০০ জন বন্দি।
আরও পড়ুন- ১৭ বছরে ১৪ বার সরকার বদল, কেন কোনো স্থায়ী সমাধান খুঁজে পেল না নেপাল?
প্রসঙ্গত, ২০২৪ সালে বাংলাদেশে গণঅভ্যুত্থানের সময় সেদেশের পাঁচটি কারাগার থেকে জেল ভেঙে পালিয়ে যায় ২,২৪১ বন্দি। সেই বন্দিদের ৭২১ জন এখনও পলাতক। তাদের মধ্যে ৭ জন মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত এবং ৯ জন উগ্রপন্থী। তাদের কাছে রয়ে গিয়েছে চাইনিজ রাইফেল ও শটগানের মতো প্রাণঘাতী আগ্নেয়াস্ত্র। বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও পলাতক বন্দিদের মধ্যে কয়েকজন আত্মসমর্পণ করলেও এখনও অনেকেই পলাতক এবং তাদের হাতে রয়েছে প্রাণঘাতী আগ্নেয়াস্ত্র। ফলে তাদের নিয়ে উৎকণ্ঠা বাংলাদেশে। প্রশ্ন, সব বন্দিকে কারাগারে ফেরানো যাবে তো?
একইরকমভাবে নেপালের পরিস্থিতিও উদ্বেগজনক। নেপাল আর্মির দাবি, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত প্রায় ২০০ বন্দিকে পুনরায় ধরা গেছে, যা পালিয়ে যাওয়া হাজারও বন্দির তুলনায় নগণ্য। দেশজুড়ে জেন জি বিক্ষোভে কার্যত চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে নেপালের নিরাপত্তা বাহিনী ও পুলিশ। ইতোমধ্যেই ভেঙে গিয়েছে সরকার। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের পরিকল্পনা, বৈঠক চলছে। কে হবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান? তা নিয়েও উৎকণ্ঠার সীমা নেই নেপালবাসীর। সমগ্র পরিস্থিতির দিকে তাকিয়ে রয়েছে গোটা বিশ্বও।

Whatsapp
