গাছ পাহারা দেয় নিরাপত্তারক্ষী এবং কুকুর! জানেন বিশ্বের সবচেয়ে দামী আম কোনটি?

Most Expensive Mango : কয়েক ভরি সোনার দামে বিকোয় এক কেজি আম! এই জাপানি আমের কথায় চোখ কপালে উঠবে আপনারও!

প্যাচপ্যাচে ঘাম, হাঁসফাঁস পরিস্থিতি, হাজারটা রোগ, মাত্রারিক্ত বিদ্যুতের বিল গরমকালের এই দিবকতা খারাপ অনুষঙ্গের পাশে একমাত্র যেটা মনপসন্দ সেটা হল আম। সবকিছু খারাপকে উপেক্ষা করা যায় কেবল এই একটা স্বাদের জন্যই। আম নিয়ে অবশ্য জনতার চিরকালের আদিখ্যেতা। তাই আমজনতা শব্দবন্ধের ব্যবহারও বেশি। কিছুদিন আগেই মালদহের বাজারে ঝড় তুলেছিল শীতের আম! কমলালেবুর পাশেই জাঁকিয়ে বসেছিল খোদ গরমকালের ফলটি। একটা আম বিকিয়েছিল কড়কড়ে একশো টাকা দামে। কেজি কেজি কেনার সুযোগ না থাকলেও অন্তত একনপিস আম কিনে মন ভরিয়েছিলেন আমবাঙালি।

কিন্তু আজ যে আমার কথা বল হবে তার দাম মোটেই একশ দুশো টাকা নয়, হাজার হাজার টাকা দাম এক কেজি আমের। আক্ষরিক অর্থেই সোনার সমান দাম সে আমের। কেয়েক ভরি সোনার মূল্যে পাওয়া যায় মাত্র এক কেজি আম। জানেন বিশ্বের সবচেয়ে দামী আম কোনটি? কেমন দেখতে? চৈত্র মাস প্রায় শেষের পথে, গরমে দাপটে অবশ্য বৈশাখ মাস বলেই ভ্রম হতে পারে। ইতিমধ্যেই সন্ধের দিকে দু এক দিন কালবৈশাখী সদৃশ কালচৈত্রীর দেখা মিলেছে বাংলায়। আমের ফলনও হয়েছে বেশ ভালোই। গাছে গাছে ঝুলছে কাঁচা আম। বাজারেও ভরে গিয়েছে সবুজ আম। আর কয়েকদিনের মধ্যেইহিমসাগর, ল্যাংড়া, ফজলি, বোম্বাই, পেয়ারাফুলি, গোলাপখাস ইত্যাদি নামে আমের বাজার ছেয়ে যাবে নিশ্চিত। কিন্তু এই যে বিশ্বের সবচেয়ে দামি আমার কথা বলা হচ্ছে সেটা কোথায় পাওয়া যায় জানেন?

আরও পড়ুন - একটা আমের দাম নাকি একশো টাকা! অসময়ের বাজারে চাহিদা তাও তুঙ্গে

কমলা, হলুদ অথবা সবুজ নয় বেগুনি রঙের দেখতে এই আম। থাইল্যান্ড, ফিলিপাইনস, বাংলাদেশ সহ ভারতেও মেলে এই আম। আকারে মাঝারি, প্রতি কেজিতে কম বেশি পাঁচটি আম হয়। জাপানে এই আমের দাম সবচাইতে বেশি। সেখানে অবশ্য এই আম বাজারে কিনতে পাওয়া যায় না, রীতিমতো নিলাম করা হয় আড়াই লাখের আমকে। ভারতের মধ্যপ্রদেশে প্রতি কেজি কুড়ি হাজার টাকা দরে মেলে এই বিশেষ আম।

প্রতি কেজি আড়াই লাখ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হওয়া এই আমের নাম 'মিয়াজাকি', যাকে বলা হয় বিশ্বের সবচেয়ে দামি আম। এটি একটি জাপানি জাতের আম। জাপানের মিয়াজাকি শহরে প্রথম ফলন হয়েছিল বলেই এমন নাম এর। এখন অবশ্য অন্যান্য দেশেও ফলন হয়। এই আমগুলির রং খুবই উজ্জ্বল এবং আকৃতি অনেকটা ডিমের মতো, তাই একে ‘সূর্যের ডিম’ বলা হয়। এগুলি সাধারণত এপ্রিল থেকে আগস্টের মধ্যে জন্মায় এবং পাকলে আম বেগুনি থেকে লাল রঙের হয়ে যায়।

এই মিয়াজাকি আমের একটির গড় ওজন প্রায় ৩৫০ গ্রাম। এতে মিষ্টির পরিমাণ সাধারণ জাতের আমের তুলনায় ১৫% বেশি। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, বিটা ক্যারোটিন এবং ফোলিক অ্যাসিড সমৃদ্ধ এই আন স্বাস্থ্যের পক্ষে যথেষ্ট উপকারী। ভারতেও এখন এই আমার চাহিদা ঊর্ধ্বমুখী। কোটা, মধ্যপ্রদেশের জব্বলপুরের কৃষকরা বরাত পেয়েছেন এই মিয়াজাকি আন চাষের। শুধু তাই নয়, এমন দামী গাছ রক্ষার জন্য রাখা হয়েছে নিরাপত্তারক্ষী এবং কুকুরও। তিনজন নিরাপত্তারক্ষী এবং ছয়টি কুকুর পাহারা দেয় একটি গাছ! প্রসঙ্গত, ২০২১ সালে জাপানে ২.৭ লক্ষ টাকায় ২টি আম নিলাম করা হয়েছিল। ফলে পাহারা না দিয়ে উপায় কি!

More Articles