কেন থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার সীমান্তে ফের সংঘর্ষ?

Thailand-Cambodia Border Clashes: দুই দেশের বিরোধ শত বছরেরও বেশি পুরনো। সীমান্ত নির্ধারণ নিয়ে সমস্যা রয়েছে, আর প্রেহ ভিহেয়ার মন্দিরকে কেন্দ্র করে ২০০৮ সাল থেকে উত্তেজনা আরও তীব্র হয়েছে।

থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার সীমান্তে বহুদিনের বিবাদ আবারও সহিংসতায় রূপ নিয়েছে। কয়েক মাস আগে ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় হওয়া যুদ্ধবিরতির পর পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হলেও ডিসেম্বরের শুরুতেই ফের গোলাগুলি শুরু হয়েছে। এতে তিনজন থাই সেনা ও কম্বোডিয়ার সাতজন বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছেন।

দুই দেশই বলছে, প্রথমে হামলা করেছে অপরপক্ষ। থাই সেনাবাহিনী দাবি করছে, কম্বোডিয়ার গুলিতে তাদের এক সেনা মারা যাওয়ার পর তারা জবাব দিয়েছে এবং সীমান্তের ওপারে থাকা সামরিক ঘাঁটিতে বিমান হামলাও চালিয়েছে। অন্যদিকে কম্বোডিয়া বলছে, থাইল্যান্ডই আগে তাদের প্রেহ ভিহেয়ার প্রদেশে আক্রমণ চালিয়েছে; তারা কেবল পাল্টা গুলি করেছে।

আরও পড়ুন

উন্মত্ত ট্রাম্পের মাদকবিরোধী অভিযান ভেনেজুয়েলায়! মার্কিন মিডিয়া চুপ কেন?

এরপর অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগ আরও বেড়েছে। থাইল্যান্ড বলছে, কম্বোডিয়া রকেট, ড্রোন ও ভারী অস্ত্র ব্যবহার করেছে। কম্বোডিয়া বলছে, থাই বাহিনী তাদের বেসামরিক এলাকায় নির্বিচারে গুলি করেছে। এই পরিস্থিতি নতুন নয়। দুই দেশের বিরোধ শত বছরেরও বেশি পুরনো। সীমান্ত নির্ধারণ নিয়ে সমস্যা রয়েছে, আর প্রেহ ভিহেয়ার মন্দিরকে কেন্দ্র করে ২০০৮ সাল থেকে উত্তেজনা আরও তীব্র হয়েছে। বছরের পর বছর দুই দেশের সেনা মাঝে মাঝেই সংঘর্ষে জড়িয়েছে।

গত মে মাসে এক কম্বোডিয়ান সেনা নিহত হওয়ার পর সম্পর্ক আরও খারাপ হয়। জুলাইয়ের সংঘর্ষে ৪৮ জন মারা যায়। সেই অবস্থার পর ট্রাম্পের উদ্যোগে মালয়েশিয়ার সহায়তায় অক্টোবরে একটি শান্তিচুক্তি হয়। থাইল্যান্ড এটিকে 'যৌথ ঘোষণা' বলে উল্লেখ করলেও চুক্তি অনুযায়ী দু’পক্ষের ভারী অস্ত্র সরানো ও একটি পর্যবেক্ষক দল গঠনের কথা ছিল। কিন্তু নভেম্বরেই থাইল্যান্ড চুক্তি স্থগিত করে দেয়, বলে, নিরাপত্তা হুমকি কমেনি। কম্বোডিয়া যদিও বলে, তারা চুক্তি মানতে প্রস্তুত ছিল।

আরও পড়ুন

৬০ লক্ষ মানুষ অনাহারে! কী পরিস্থিতি সুদানে?

ডিসেম্বরে আবার সংঘর্ষ শুরু হওয়ার পর থাইল্যান্ড বলছে এবার দায় কম্বোডিয়ার। কম্বোডিয়া বলছে, তারা কেবল আত্মরক্ষা করেছে। দুই পক্ষের বিবরণে সময়, ঘটনা, কে আগে গুলি চালিয়েছে কোনোটাই মিলছে না।

পরিস্থিতি এখন কোন দিকে যাবে, তা স্পষ্ট নয়। অতীতে সংঘর্ষ কিছুদিনের মধ্যে থেমে গিয়েছিল, কিন্তু এবার দুই দেশের রাজনৈতিক নেতৃত্ব বেশ দুর্বল, তাই সমাধান দ্রুত হবে কিনা সন্দেহ আছে।

পর্যটকদের জন্যও সতর্কতা জারি হয়েছে। ব্রিটিশ ফরেন অফিসের পরামর্শ, থাইল্যান্ডে গেলে কম্বোডিয়ার সীমান্ত থেকে ৫০ কিলোমিটারের মধ্যে, আর কম্বোডিয়ায় গেলে থাইল্যান্ডের সীমান্ত থেকে ৫০ কিলোমিটারের মধ্যে প্রয়োজন ছাড়া ভ্রমণ না করতে।

More Articles