‘তিনবার মাটিতে পড়ে গিয়েছিলাম’! দিল্লির বিস্ফোরণ নিয়ে যা জানালেন প্রত্যক্ষদর্শীরা

Delhi Red Fort Blast: স্থানীয় দোকানদার ওয়ালিউর রহমান বলেন, “আমি দোকানে ছিলাম। হঠাৎ এত জোরে আওয়াজ হলো যে আমি পড়ে গিয়েছিলাম। দোকানের কাচ ভেঙে গেল, সবাই আতঙ্কে পালাচ্ছিল।”

১০ নভেম্বর ভয়াবহ বিস্ফোরণে কেঁপে উঠল রাজধানী। শুক্রবার সন্ধ্যায় দিল্লির লালকেল্লার কাছে হুন্ডাই আই-টুয়েন্টি গাড়িতে হওয়া সেই বিস্ফোরণে অন্তত ১৩ জন মারা গিয়েছেন, আহত হয়েছেন বহু মানুষ। মুহূর্তের মধ্যেই আগুনে ভস্মীভূত হয়ে যায় একের পর এক গাড়ি। চোখের পলকেই শান্ত সন্ধ্যা পরিণত হয় আতঙ্ক আর ধোঁয়ায় ঢেকে থাকা বিভীষিকার দৃশ্যে। বিস্ফোরণের পর মুহূর্তেই এলাকা ঘিরে ফেলে পুলিশ। ন্যাশনাল সিকিউরিটি গার্ড (এনএসজি), ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (এনআইএ) এবং দিল্লি পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায়। ঘটনার সময় যারা সেখানে ছিলেন, তাঁদের অভিজ্ঞতা ভয়ঙ্কর।

বিস্ফোরণের সময় যাঁরা ঘটনাস্থলের কাছে ছিলেন, তাঁদের বর্ণনা শুনলে আঁতকে উঠতে হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, এত জোরে শব্দ হয়েছিল যে চারপাশ কেঁপে উঠেছিল। ভিরু সিন্ধি নামের এক প্রত্যক্ষদর্শী বিবিসি-কে বলেন, “সিগন্যাল লাল ছিল, গাড়িগুলো দাঁড়িয়ে ছিল। হঠাৎই এক গাড়িতে বিস্ফোরণ হয়। মুহূর্তে আগুন ছড়িয়ে পড়ে ছয়-সাতটা গাড়িতে। আমি নিজে পুলিশের সঙ্গে কয়েকজনকে উদ্ধার করেছি।”

আরও পড়ুন

১৯৯৬ থেকে ২০২৫: দিল্লির বিস্ফোরণের ইতিহাস এক নজরে

অটোচালক জিশান ওই সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “আমার সামনেই গাড়িটা চলছিল, কয়েক ফুট দূরে। হঠাৎই বিস্ফোরণ হয়, আগুন লেগে যায়।” অ্যাম্বুলেন্স চালক মুহাম্মদ আসাদ জানান, “আমি পৌঁছে দেখি চারপাশে গাড়িতে আগুন, আহতরা রাস্তায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছেন। দৃশ্যটা খুব ভয়ঙ্কর ছিল।”

স্থানীয় দোকানদার ওয়ালিউর রহমানও বলেন, “আমি দোকানে ছিলাম। হঠাৎ এত জোরে আওয়াজ হলো যে আমি পড়ে গিয়েছিলাম। দোকানের কাচ ভেঙে গেল, সবাই আতঙ্কে পালাচ্ছিল।” স্থানীয় বাসিন্দা রাজধর পাণ্ডে জানান, “আমি ছাদে দাঁড়িয়ে ছিলাম। হঠাৎ দেখি একটা আগুনের গোলা উঠে গেল আকাশে। জানালার কাচ কেঁপে উঠল। নিচে নেমে দেখি চারপাশ ধোঁয়ায় ভরে গিয়েছে।”

বিস্ফোরণের পর শুধু দিল্লি নয়, কলকাতা, মুম্বই-সহ বড় শহরগুলোতেও সতর্কতা জারি হয়েছে। বিমানবন্দর ও ব্যস্ত এলাকায় চলছে বিশেষ তল্লাশি। মার্কিন দূতাবাস তাদের নাগরিকদের লালকেল্লা ও চাঁদনি চক এলাকায় না যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে।

আরও পড়ুন

২০২৫ প্রথম নয়, বারবার গাড়ি বিস্ফোরণে ছিন্নভিন্ন হয়েছে ভারতাত্মা

এদিকে জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ জানিয়েছে, উত্তরপ্রদেশ ও হরিয়ানায় তল্লাশিতে প্রায় তিন হাজার কিলো বিস্ফোরক ও অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। সাতজনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে, তবে তাদের সঙ্গে দিল্লির বিস্ফোরণের যোগ নেই বলেই জানানো হয়েছে।

রাজধানী এখনও আতঙ্কে কাঁপছে। বিস্ফোরণের পরে এখনও আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন দিল্লিবাসী। লালকেল্লা ও চাঁদনি চক এলাকায় কড়া নিরাপত্তা, বাড়ানো হয়েছে টহল। স্থানীয়দের অনেকেই জানাচ্ছেন, রাতের সেই বিকট শব্দ, আগুনের শিখা আর আহতদের চিৎকার এখনো কানে বাজছে। প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনাতেই স্পষ্ট— এক মুহূর্তে বদলে গিয়েছিল লালকেল্লার চারপাশের চেনা চিত্র। শান্ত সন্ধ্যা পরিণত হয়েছিল আগুন, ধোঁয়া আর বিভীষিকার এক ভয়ানক দৃশ্যে।

More Articles