আরজি কর তদন্তের আওতায় কে কে? সিবিআইকে তালিকা দেওয়ার নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের
RG Kar Case Hearing: কাদের কাদের নাম তদন্তাধীন সেই তালিকা আদালতে জমা দেওয়ার জন্য সিবিআইকে নির্দেশ দেন প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়।
সিবিআইয়ের তদন্তে পূর্ণ আস্থা রয়েছে শীর্ষ আদালতের। গত শুনানিতেও সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছিল আরজি কর কাণ্ড নিয়ে যে রিপোর্ট সিবিআই জমা করেছে তা পড়ে বিচলিত হয়েছেন খোদ বিচারপতিরা। ৩০ সেপ্টেম্বর আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ ও মৃত্যু বিষয়ক মামলার শুনানিতে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, সিবিআইয়ের তদন্তে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উঠে আসছে। স্টেটাস রিপোর্ট খতিয়ে দেখে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির বেঞ্চ জানিয়েছে, এই তদন্ত চালিয়ে নিয়ে যাক সিবিআই। আরজি কর কাণ্ডের বিচার নিয়ে সংশয় উঠেছে ইতিমধ্যেই। কারণ এই ঘটনায় একাধিক প্রভাবশালী ব্যক্তির জড়িয়ে থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
জুনিয়র ডাক্তারদের আইনজীবী ইন্দিরা জয়সিং আদালতে এদিন বলেন, “এটা সাধারণ খুন ও ধর্ষণের ঘটনা হিসাবে দেখলে ভুল হবে। আমাদের কাছে চার জনের নাম রয়েছে। দু’জনের নাম আমরা সিবিআইকে দিয়েছি। ওই চার জন ঘটনাস্থলে ছিলেন।” তদন্তের আওতায় আসা হাসপাতালের সাতজনকে আপাতত সাসপেন্ড করারও দাবি জানান তিনি।একই আর্জি জানান জয়েন্ট প্ল্যাটফর্ম অফ ডক্টরস-এর আইনজীবী করুণা নন্দীও। এদিনের শুনানিতে কাদের কাদের নাম তদন্তাধীন সেই তালিকা আদালতে জমা দেওয়ার জন্য সিবিআইকে নির্দেশ দেন প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়। রাজ্য আদালতকে জানায়, তদন্তকারী সংস্থা ওই নামের তালিকা দিলেই পদক্ষেপ করা হবে। যদি সেই তালিকায় প্রভাবশালী ব্যক্তিও থাকেন, তাহলেও পদক্ষেপ করা হবে।
রাজ্য এদিন শীর্ষ আদালতকে জানায়, জুনিয়র ডাক্তারেরা শুধুমাত্র জরুরি পরিষেবা দিচ্ছেন। বহির্বিভাগ ও অন্য ক্ষেত্রে পরিষেবা দিচ্ছেন না। যদিও সেই অভিযোগ উড়িয়ে দেন জুনিয়র ডাক্তারদের আইনজীবী ইন্দিরা জয়সিং। প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড় এদিন জানতে চান, কেন শুধু প্রয়োজনীয় পরিষেবাই দিচ্ছেন? সব ডাক্তারেরা সব ডিউটি করছেন না তাহলে? ইন্দিরা আদালতে জানান, প্রয়োজনীয় পরিষেবার মধ্যে বহির্বিভাগের পরিষেবা পড়ে না। প্রধান বিচারপতি বলছেন, হাসপাতালের বহির্বিভাগ ও অন্য ক্ষেত্রগুলি-সহ সমস্ত প্রয়োজনীয় পরিষেবা কাজই করতে হবে জুনিয়র ডাক্তারদের।
আরও পড়ুন- ওঁর দু’চোখ জোড়া স্বপ্ন রক্ত হয়ে ঝরতে দেখেছি: আরজি কর কাণ্ডে মৃতার মা-বাবা
এদিন সিবিআইয়ের রিপোর্ট খতিয়ে দেখে প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড় জানান, তরুণীর চোখে গুরুতর আঘাত লেগেছিল বলে সিবিআই তাদের রিপোর্টে উল্লেখ রয়েছে। ঘুমন্ত অবস্থায় কীভাবে চোখে আঘাত লাগতে পারে সেই প্রশ্ন তুলেছিলেন বিচারপতি। সলিসিটর জেনারেল এই প্রশ্নের উত্তরে বলেন, চশমা খুলে না রাখার জন্য আঘাত লেগেছে চোখে।
আরজি কর হাসপাতালে সিসিটিভি বসানো নিয়েও প্রশ্ন করে আদালত। রাজ্য প্রধান বিচারপতিকে জানিয়েছে, সমগ্র হাসপাতালে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা বসাতে আরও কিছু সময় লাগবে। বন্যার কারণে নাকি ক্যামেরা বসানোর কাজ থমকে গেছে। ১০ অক্টোবরের মধ্যে সিসিটিভি বসানোর কাজ হয়ে যাবে বলে আশ্বস্ত করেন তিনি। আদালত রাজ্যকে নির্দেশ দেয়, যাতে ৩১ অক্টোবরের মধ্যে কাজ সম্পূর্ণ হয়।
আরজি কর কাণ্ডে নির্যাতিতার পরিবারের আইনজীবী এদিন শীর্ষ আদালতকে জানান, আরজি কর নিয়ে একটি স্বল্পদৈর্ঘ্যের সিনেমা তৈরি হয়েছে। উল্লেখ্য, এই সিনেমায় অভিনয় করেছেন তৃণমূলের ছাত্রনেত্রী রাজন্যা হালদার। আইনজীবী আর্জি জানান, ওই সিনেমা বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হোক। যদিও প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড় বলেন, সিনেমা বন্ধের নির্দেশ দিতে হলে শুনানির প্রয়োজন।