সায়ানাইডের চেয়ে ১২০০ গুণ বিষাক্ত! এই মাছ খাওয়া মাত্রই কোমাতে স্বামী, স্ত্রীর মৃত্যু!

Dangerous Puffer Fish: পাফার ফিশ এক জনপ্রিয় জাপানি খাবার। এতে শক্তিশালী এবং মারাত্মক বিষ টেট্রোডোটক্সিন এবং স্যাক্সিটক্সিন থাকতে পারে।

বিখ্যাত মাছ। সেই মাছ দিয়ে রান্না হওয়া পদের নামও সব বাহারি! অথচ এই মাছ খেলেই মৃত্যু! বিষাক্ত এই মাছ খেয়ে সম্প্রতি এমনই ভয়াবহ ঘটনা ঘটেছে মালয়েশিয়ায়। ৮৩ বছর বয়সী এক মহিলার মৃত্যু হয়েছে পাফার মাছ খেয়ে। এখানেই শেষ নয়, ওই মাছ খাওয়ার পর তাঁর স্বামী আইসিইউতে চিকিৎসাধীন। নিউ ইয়র্ক পোস্ট জানিয়েছে, ঘটনাটি ঘটেছে ২৫ মার্চ, জোহরে। এই দম্পতির মেয়ে, এনজি আই লি জানিয়েছেন, তাঁর বাবা স্থানীয় একটি দোকান থেকেই পাফার মাছটি কিনেছিলেন। মাছটি অত্যন্ত উপাদেয় আবার একইসঙ্গে অত্যন্ত বিষাক্তও। তবে দীর্ঘদিন থেকেই এই দোকান থেকেই মাছ কিনতেন এই পরিবার। তাই এই মাছ কেনার আগে দ্বিতীবার ভাবেননি তারা। জেনেশুনেই কি তবে বিষপান?

জোহরের স্বাস্থ্য ও ঐক্য কমিটির চেয়ারম্যান, লিং তিয়ান সূন জানিয়েছেন, ওই দম্পতি দুপুরের খাবারের জন্য মাছ কেটে পরিষ্কার করেন এবং রান্নাও করেন। এর কিছুক্ষণ পরেই ওই মহিলা লিম সিউ গুয়ান কাঁপতে শুরু করে এবং তীব্র শ্বাসকষ্ট অনুভব করে। তাঁর স্বামীর দেহেও প্রায় এক ঘণ্টা পরে একই উপসর্গ দেখা দিতে থাকে।

ওই দম্পতির ছেলে তখন তাঁদের দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যান। তবে শেষরক্ষা হয়নি। সেইদিন সন্ধ্যায় তাঁর মাকে মৃত ঘোষণা করা হয়। মৃত্যুর কারণ হিসাবে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, সম্ভবত পাফার মাছ থেকে সিগুয়েটেরা টক্সিন বা টেট্রোডোটক্সিন খাওয়ার কারণে খাদ্যে বিষক্রিয়া, যার ফলে স্নায়বিক বৈকল্য, কার্ডিয়াক ডিসরিথমিয়া সহ শ্বাসযন্ত্রের ব্যর্থতা।

আরও পড়ুন- চামড়ার নিচে হামাগুড়ি দিচ্ছে কী? বিরলতম রোগ নিয়ে শোরগোল বিশ্বজুড়ে…

স্থানীয় প্রশাসন সেই তারিখে বিক্রি হওয়া সমস্ত মাছ জেলা স্বাস্থ্য অফিসে (পিডিকে) বিশ্লেষণের জন্য পাঠিয়েছে। কোনও রকমের কোনও ঝুঁকি থাকলে খাবার বাছাইয়ে সতর্ক হওয়ারও আহ্বানও জানানো হয়েছে প্রশাসনের তরফে। ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন জানাচ্ছে, পাফার ফিশ এক জনপ্রিয় জাপানি খাবার। এতে শক্তিশালী এবং মারাত্মক বিষ টেট্রোডোটক্সিন এবং স্যাক্সিটক্সিন থাকতে পারে। এই বিষ রান্না করে বা হিমায়িত করেও ধ্বংস করা যায় না। সাধারণত যোগ্য শেফ যারা, তারাই জানেন এই বিষাক্ত পদার্থগুলিকে কীভাবে সরিয়ে ফেলে তারপর রান্না করতে হয়। সেই কারণে একমাত্র প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদেরই এই মাছ পরিবেশন করার অনুমতি দেওয়া হয়।

পাফারফিশের চামড়া তীক্ষ্ণ কাঁটাময়, যা অত্যন্ত বিপজ্জনক। টেট্রোডোটক্সিন নামক ওই টক্সিন বা বিষটি পেটে গেলে তো মারাত্মক বটেই। এই মাছ হাত দিয়ে ধরলেও মৃত্যু হতে পারে। মাছটির গায়ে থাকা কাঁটা হাতে লাগলে হাত ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে এবং মৃত্যুও হতে পারে। সায়ানাইডের থেকে ১২০০ গুণ বেশি মারাত্মক এই বিষ! পাফার মাছ সোয়েলফিশ বা ব্লোফিশ নামেও পরিচিত। নিজেদের ভাসিয়ে রাখতে এই মাছ এতই বেশি স্ফীত হয় যে তারা প্রায় গোলাকার হয়ে যায়। পাফার মাছ সাধারণত আকারে ছোটই, সবচেয়ে বড় পাফারের আকৃতি প্রায় ৯০ সেন্টিমিটার (৩ ফুট)!

 

More Articles