১০ বছরের খরা কাটিয়ে দাপট এবিভিপির! জেএনইউ দখলে রেখেও কেন চিন্তায় বামেরা?
JNUSU Election Results: প্রায় এক দশক পর জেএনইউ-এর ছাত্র সংসদ কমিটির কোনও শীর্ষ পদ অধিকার করেছে এবিভিপি।
ফের লাল জেএনইউ। তবে শক্তি বৃদ্ধি হয়েছে এবিভিপির। জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ নির্বাচনে শীর্ষ চার পদের মধ্যে তিনটিতে জয়লাভ করে রাজত্ব বজায় রাখল বাম জোট। পাল্টা অবশ্য এবিভিপি কড়া টক্কর দিয়েছে লাল সেনাকে। এবার নির্বাচনে উনিশ-বিশের ফারাকে জয় হয়েছে বামেদের। সভাপতি, সহ-সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের পদ জিতেছে বামেরা, এবিভিপির ঝুলিতে গিয়েছে যুগ্ম সম্পাদকের পদ।
সোমবার সকালে জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ইউনিয়ন (JNUSU) নির্বাচন কমিশন ছাত্র সংসদ নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করেছে। সেই ঘোষণানুসারে, অল ইন্ডিয়া স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের (AISA) নীতীশ কুমার ১,৭০২ টি ভোট পেয়ে সভাপতি পদে জয়ী হয়েছেন।
AISA প্রার্থীর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের (ABVP) শিখা স্বরাজ ১,৪৩০ টি ভোট পেয়েছেন এবং স্টুডেন্টস ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়া (SFI) সমর্থিত তৈয়বা আহমেদ পেয়েছেন ৯১৮ টি ভোট।
সহ-সভাপতি পদে জয়লাভ করেছেন ডেমোক্র্যাটিক স্টুডেন্টস ফেডারেশনের (DSF) মণীষা পেয়েছেন ১,১৫০ টি ভোট, যেখানে ABVP-এর নিত্তু গৌতম পান ১,১১৬ ভোট।
এছাড়া সাধারণ সম্পাদক পদেও জয়লাভ করেছে ডিএসএফ। ডিএসএফ প্রার্থী মুনতেহা ফাতিমা পেয়েছেন ১,৫২০ টি ভোট, অন্যদিকে এবিভিপির কুনাল রাই কাঁটায় কাঁটায় টক্কর দিয়েছেন। এই ABVP প্রার্থী পেয়েছেন ১,৪০৬ টি ভোট।
তবে, যুগ্ম সম্পাদক পদে জিতেছে এবিভিপি। বৈভব মীনা ১,৫১৮ ভোটে জয়লাভ করেছেন। যেখানে AISA-র নরেশ কুমার (১,৪৩৩ টি ভোট) এবং প্রগ্রেসিভ স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন (পিএসএ) প্রার্থী নিগম কুমারী (১,২৫৬ টি ভোট) পেয়েছেন।
আরও পড়ুন- আমরা কাশ্মীরের ‘আপনা আদমি’ হতে পারি না?
প্রায় এক দশক পর ছাত্র সংসদ কমিটির কোনও শীর্ষ পদ অধিকার করেছে এবিভিপি। এর আগে ২০১৫ সালে সৌরভ শর্মা একই পদে জয়লাভ করেছিলেন। শেষবার ২০০০ সালে এবিভিপি সভাপতি পদ জিতেছিল, জয়ী হয়েছিলেন সন্দীপ মহাপাত্র।
এবার নির্বাচনে চারটি শীর্ষ পদের জন্য ২৯ জন এবং ৪৪টি কাউন্সিলর আসনের জন্য ২০০ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন।
প্রসঙ্গত, জেএনইউ যে বামেদের শক্ত ঘাঁটি, তা কারও অজানা নয়। কিন্তু সেখানেও কি আধিপত্য বিস্তার করছে গেরুয়া মনোভাব? এবারের নির্বাচনে যেভাবে এবিভিপি টক্কর দিয়েছে বাম প্রার্থীদের — প্রাপ্ত ভোটসংখ্যা অন্তত তাই বলছে।
অবশ্য বামেদের এই দুর্বলতার পিছনে উঠে আসছে আরও একটা কারণ। এই বছরের নির্বাচনে বাম জোটে ভাঙন দেখা দেয়। AISA এবং DSF একজোট হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছে। অন্যদিকে SFI এবং AISF বিরসা আম্বেদকর ফুলে স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন (BAPSA) এবং PSA-এর সঙ্গে জোট গঠন করে। বাম ছাত্র সংগঠনগুলোর মধ্যে ভাঙনের ফলেই এবিভিপি সেই সুযোগ নিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
গত ২৫ এপ্রিল জেএনইউ-তে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ভোট পড়েছিল প্রায় ৭০ শতাংশ। ৭,৯০৬ যোগ্য ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে ৫,৫০০ জন ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। ২০২৩ সালে ৭৩ শতাংশ ভোট পড়েছিল। সেই তুলনায় এবার কম হলেও, ২০১২ সালের পর এই নির্বাচনের ভোটপ্রদান সর্বোচ্চ।