স্বল্প বিনিয়োগে অবিশ্বাস্য রিটার্ন! পুজোর মরশুমে ধনকুবের হতে ভরসা এশিয়ান পেন্টস-এর স্টক
Asian Paints: পুজোয় আরও কিছুটা ধনী হতে চান? এশিয়ান পেন্টস-এর স্টকই হবে আপনার ভরসা।
মহালয়া কাটিয়ে ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে দেবীপক্ষ। এবার বলা যেতে পারে, পুরোপুরি শুরু হয়ে গেল বাঙালির সবথেকে বড় উৎসব দুর্গোৎসব। দুর্গাপুজো শুধুমাত্র পশ্চিমবঙ্গে সীমিত নেই, ভারতের নানা বড় বড় শহরের পাশাপাশি বিশ্বের নানা প্রান্তেও আজ শুরু হয়েছে দুর্গাপুজো। উত্তরে আমেরিকা থেকে শুরু করে দক্ষিনে অস্ট্রেলিয়া পর্যন্ত দেশে দেশে জনপ্রিয়তা পেয়েছে বাঙালির এই উৎসবটি। তবে হয়তো কলকাতা এবং পশ্চিমবঙ্গের দুর্গাপুজোর সঙ্গে কোন দেশের দুর্গাপুজোই এঁটে উঠতে পারে না।
চারদিকে আলোর রোশনাই, প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে দর্শনার্থীদের ভিড়, ত্রিধারা বা টালা পার্ক প্রত্যয়ের মত পুজোর নিত্য নতুন থিমের প্রতিমার সঙ্গে, মুদিয়ালি বা গৌরিবেড়িয়ার সাবেকিয়ানার টক্কর, এসব কিছু তো রয়েছেই। তবে এর পাশাপাশি, বাংলার দুর্গাপুজোর আবেগের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে আরও একটি জিনিস, এবং তা হলো শারদ সম্মান। কোন ক্লাব জিতল সেরার শিরোপা, কোন প্রতিমা হলো প্রথম, কারা হলেন বছরের বিস্ময়- এইসব না জানতে পারলে যেন বাঙালির শারদীয়া ঠিক জমতে চায় না। বার্জার পেইন্টস কিংবা বাংলায় মিডিয়া হাউজগুলি যতই শারদ সম্মান প্রদানের অনুষ্ঠান করুক না কেন, বাঙালি মনে এশিয়ান পেইন্ট শারদ সম্মানের একটা আলাদা জায়গা রয়েছেই।
তাই দুর্গাপুজো যত কাছে আসছে, ততই জনপ্রিয়তা বাড়ছে এশিয়ান পেইন্টস কোম্পানির। যাঁরা স্টক মার্কেটে বিনিয়োগ করেন, তাঁরা সকলেই জানেন, যত দ্রুত কোনও কোম্পানির জনপ্রিয়তা বাড়ে, সেই সঙ্গেই পাল্লা দিয়ে বৃদ্ধি পায় সেই কোম্পানির শেয়ারের মূল্য। এই কারণ এই বিগত কয়েকদিন যাবৎ ভারতীয় বিনিয়োগকারীদের অত্যন্ত ভরসার জায়গা হয়ে উঠেছে এশিয়ান পেন্টস কোম্পানির স্টক। শেয়ার বাজারে চড়াই-উতরাই লেগে থাকলেও, যদি আপনি এশিয়ান পেন্টস কোম্পানির স্টকে বিনিয়োগ করে মোটা টাকা রিটার্ন পেতে চান, তাহলে এটাই হল সবথেকে ভালো সময়। শেয়ার বাজারে ন্যূনতম টাকা বিনিয়োগ করলেও এই মুহূর্তে এশিয়ান পেইন্টস আপনাকে দারুণ রিটার্ন দেবে।
আরও পড়ুন: ১৫ দিনেই টাকা দ্বিগুণ! অল্প দিনেই ধনকুবের হতে বিনিয়োগ করুন ৩ টাকার এই স্টকে
বছরকয়েক আগে থেকেই ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জে মাল্টিব্যাগার হয়ে উঠেছে এশিয়ান পেইন্ট লিমিটেড কোম্পানির শেয়ার। বর্তমানে এই কোম্পানির মার্কেট ক্যাপিটাল ৩.২৬ লক্ষ কোটি টাকা। আপনারা হয়তো অনেকেই জানেন, এটি ভারতের সবথেকে বড় এবং এশিয়ার চতুর্থ সবথেকে বড় পেইন্ট কোম্পানি। ১৯৯৯ সালে এই কোম্পানির শেয়ার ভারতীয় শেয়ার বাজারে লিস্ট করা হয়েছিল। সেই সময় থেকে এখনও পর্যন্ত এশিয়ান পেইন্টস তাদের বিনিয়োগকারীদের সম্পত্তি প্রায় ২৯০ গুণ বাড়িয়ে তুলেছে। যারা সেই সময় এশিয়ান পেইন্টসে ১ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করেছিলেন, তাঁরা এখন হয়ে উঠেছেন কোটিপতি।
এশিয়ান পেইন্টসের শেয়ার শনিবার কিছুটা নিম্নমুখী থাকলেও, আগামী কয়েক দিন এই কোম্পানির শেয়ারের গতি ঊর্ধমুখী থাকবে বলে মনে করছেন শেয়ার মার্কেটের বিশেষজ্ঞরা। গত ২৩ সেপ্টেম্বর বাজার বন্ধর সময় এই কোম্পানির শেয়ার মূল্য ৩,৪০০.০০ টাকায় থেমেছে। ২৩ বছর আগে, ১৯৯৯ সালের ১ জানুয়ারি যখন ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জে প্রথমবারের জন্য এশিয়ান পেইন্টস নিজের নাম লিখিয়েছিল, সেই সময় এই শেয়ারের দাম ছিল মাত্র ১১.৮৮ টাকা। সুতরাং, এশিয়ান পেইন্টস এর শেয়ারের দাম ২৮,০০০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে বিগত ২৩ বছরে।
১ লাখ এখন ৩ কোটি
কোনও বিনিয়োগকারী যদি ১৯৯৯ সালের ১ জানুয়ারি এশিয়ান পেইন্টস কোম্পানির শেয়ারে ১ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করে থাকেন, তাহলে সেই টাকা এই মুহূর্তে ২.৮ কোটি টাকায় পৌঁছে গিয়েছে। সেই একইভাবে যদি কোনও বিনিয়োগকারী ১৯৯৯ সালের ১ জানুয়ারি এশিয়ান পেইন্টসের শেয়ারে ৩৫ হাজার টাকা বিনিয়োগ করে থাকেন, তাহলে সেই টাকা আজ বেড়ে গিয়ে ১ কোটি টাকায় পৌঁছেছে।
পাঁচ বছরে ১৭৪.৯১% রিটার্ন
বিগত এক মাসে এশিয়ান পেইন্টসের শেয়ারের মূল্য নিম্নমুখী হলেও, যদি আপনারা একটু ধৈর্য ধরে দীর্ঘ সময়ের জন্য এই এশিয়ান পেইন্টসের স্টকে বিনিয়োগ করেন তাহলে আপনার অবশ্যই লাভ হতে বাধ্য। বিগত ছয় মাসে এই শেয়ারের দাম প্রায় ২ শতাংশের কাছাকাছি বৃদ্ধি পেয়েছে। বিগত পাঁচ বছরে এই শেয়ার বিনিয়োগকারীদের ১৭৪.৯১% রিটার্ন দিয়েছে, যা সাধারণ কোনও সংস্থার শেয়ারের থেকে অনেক বেশি। পাঁচ বছর আগে অর্থাৎ ২০১৭ সালে যদি কোনও ব্যক্তি এশিয়ান পেইন্টস এর শেয়ারের উপরে এক লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করেন, তাহলে সেই এক লাখ টাকার ভ্যালু এখন ২.৭৪ লক্ষ টাকা হয়ে গিয়েছে। অর্থাৎ বিগত পাঁচ বছরে এশিয়ান পেইন্টস ভারতের বিনিয়োগকারীদের একটা বিশাল পরিমাণ লাভ দিয়েছে।
কোম্পানির আর্থিক পরিস্থিতি কীরকম?
এশিয়ান পেইন্টস এমনিতে কিন্তু ভারতের সবথেকে লাভজনক পেইন্ট কোম্পানির মধ্যে একটি। এই কোম্পানির দেউলিয়া হওয়ার সম্ভাবনা খুব কম। পাশাপাশি এই কোম্পানির মাথায় বিশেষ কিছু ধার দেনা নেই। ২০২২ সালের জুন মাসে এশিয়ান পেইন্টসের মুনাফা ১০.৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ১০৩৬ কোটি টাকা হয়েছে। বিগত বছরে এই সময় এই মুনাফার পরিমাণ ছিল ৫৭৪.৩০ কোটি টাকা। অর্থাৎ, গত বছরের তুলনায় এই বছরের মুনাফা প্রায় দ্বিগুণ বলা চলে।
অন্যদিকে কোম্পানির সর্বমোট আয় গত জুন ত্রৈমাসিকে ৫৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ৮৬০৭ কোটি টাকা। বিগত বছরে জুন ত্রৈমাসিকে এই আয়ের পরিমাণ ছিল মাত্র ৫৫৮৫.৩৬ কোটি টাকা। এখানেও এক বছরে প্রায় ১.৫ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে কোম্পানির সম্পত্তি। অপারেটিং ফ্রন্টের বার্ষিক আধারে আর্থিক বছর ২০২৩ অনুযায়ী EBITDA ৮৮.৬৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ৯১৩.৫৬ কোটি টাকা। অন্যদিকে কোম্পানির মার্জিন বিগত আর্থিক বছরের তুলনায় বেড়েছে ১৯৪ বিপিএস এবং হয়েছে ১০.৬১ শতাংশ। অর্থাৎ, যদি আপনি এই পুজোর মাসে কোনও দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগের মাধ্যমে নিজের টাকা বাড়াতে চান, তাহলে এটাই হতে চলেছে আপনার জন্য সবথেকে বড় সুযোগ। তাই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আর দেরি না করে কিনে ফেলুন এশিয়ান পেইন্টস কোম্পানির শেয়ার এবং তৈরি হয়ে যান ভবিষ্যতের জন্য।