Exclusive: এক মঞ্চে দেখা যেতে পারে মমতা-রাহুলকে?

Bharat Jodo Nyay Yatra Exclusive: 'ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা' বাংলায় প্রবেশ করে বৃহস্পতিবার। কোচবিহার শহর এবং সংলগ্ন এলাকায় রোড শো করেন রাহুল।

ছেড়ে রেখেই ধরে রাখা। এই কি কংগ্রেস ও তৃণমূল সম্পর্কের নতুন রসায়ন? এই রসায়নেই কি দূরে গিয়েও কাছে আসতে চলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাহুল গান্ধী, তথা তৃণমূল ও কংগ্রেস?

'ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা' বাংলায় প্রবেশ করে বৃহস্পতিবার। কোচবিহারে যাত্রাকে স্বাগত জানাতে উপস্থিত ছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী। কোচবিহার শহর এবং সংলগ্ন এলাকায় রোড শো করেন রাহুল। রাতে থাকার কথা ছিল ফালাকাটায়। কথা ছিল ২৬ জানুয়ারি প্রজাতন্ত্র দিবসের উপলক্ষে দিল্লি যাবেন তিনি। কিন্তু হঠাৎ গুরুত্বপূর্ণ কারণে ২৫ জানুয়ারিই দিল্লি ফিরে যেতে হয় রাহুলকে।

যাত্রার দ্বিতীয় পর্ব শুরু হতে চলেছে ২৮ জানুয়ারি, রবিবার। কিন্তু এর মধ্যেই কয়েকটি ঘটনা ঘটে গিয়েছে পশ্চিমবঙ্গে। অধীর রঞ্জন চৌধুরী ডেরেক ও'ব্রায়ানকে 'বিদেশি' বলে ফেলে ক্ষমা চেয়েছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, "আমার কারও সঙ্গে কোনও কথা হয়নি। আমার প্রস্তাব প্রথম দিনেই (ওরা) প্রত্যাখ্যান করেছে। তখন থেকেই আমরা একলা লড়ব বলে ঠিক করে নিয়েছিলাম।" অর্থাৎ জোটের সম্ভাবনা তেমন নেই বললেই চলে। যদিও এই ব্যাপারে অধীর চৌধুরীকেই দায়ী করছে তৃণমূল। বাংলায় আসন সমঝোতা নিয়ে কংগ্রেসের সঙ্গে একমত হতে পারেনি তৃণমূল। কংগ্রেস যে পরিমাণ আসন দাবি করেছিল, তৃণমূল সেই পরিমাণ আসন তাদের ছাড়তে রাজি ছিল না। এরপরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই উক্তি পরিষ্কার করে দিয়েছে, আসন সমঝোতায় যাচ্ছে না তৃণমূল। এখান থেকেই মতানৈক্যের শুরু।

আরও পড়ুন : কংগ্রেসের সঙ্গে আসন ভাগ করবেন? ইন্ডিয়া জোটের অস্তিত্ব নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত মমতার 

রাহুল দিল্লি রওনা হওয়ার পরপরই প্রশ্ন ওঠে, তবে কি দিল্লি থেকে আসতে চলেছে সন্ধি প্রস্তাব? তা হলে কি সোনিয়া গান্ধী দূরভাষে যোগাযোগ করবেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে? ইতিমধ্যেই, আজ জয়রাম রমেশ বলেছেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চিরকাল বলে এসেছেন তাঁর প্রধান লক্ষ বিজেপিকে পরাজিত করা। কংগ্রেস এবং ইন্ডিয়া ব্লকেরও মূল লক্ষ তাই। আমরা আবার যাত্রা শুরু করছি বাংলায়। তাতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যোগ দিলে আমরা অত্যন্ত আনন্দিত হব। এই জোট গড়ে তোলার নেপথ্যে তাঁর অবদান অনস্বীকার্য।" মল্লিকার্জুন খাড়্গে আজ একটি চিঠিতে বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকে তাঁর আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন। যাত্রায় কয়েকজন সমস্যা তৈরি করতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তিনি অনুরোধ করেছেন যেন রাহুলের নিরাপত্তার ব্যাপারটি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একটু দেখেন। গান্ধী পরিবারের সঙ্গে মমতার সুসম্পর্কের কথাও উল্লেখ করেন তিনি। অসমর্থিত সূত্রের খবর, প্রিয়াঙ্কা এবং সোনিয়ার মোবাইল থেকে দু'টি টেক্সট মেসেজ এসছে আজ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। যদিও এ থেকে জোটের আসন সমঝোতার কোনও ইঙ্গিতই পাওয়া যায় না। তবে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে চাইছে উভয় পক্ষই।

 

প্রথমে জল্পনা শোনা যাচ্ছিল, রাহুলের সঙ্গে মমতার দেখা হতে পারে মালদায়। কিন্তু আগামীকাল, রবিবার, কিছু দলীয় কর্মসূচি পালনের উদ্দেশ্যে হাসিমারায় আসছেন মুখ্যমন্ত্রী বন্দ্যোপাধ্যায়। সূত্রের খবর, তিনি রাত্রিবাসও করতে পারেন হাসিমারায়। সেখান থেকে কোচবিহারের দিকে যাওয়ার কথা তাঁর। হাসিমারা থেকে জলপাইগুড়ির দূরত্ব মাত্র ৮৭ কিমি। দুই ঘণ্টার দূরত্বে থেকেও কি দেখা হবে না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও রাহুল গান্ধীর? অনেকে মনে করছেন, আগামীকাল জলপাইগুড়িতে একসঙ্গে হাঁটতে দেখা যেতে পারে তাঁদের। কেউ কেউ মনে করছেন, যাত্রায় না হাঁটলেও একত্রে বৈঠক করতে পারেন তাঁরা। অথবা মালদার জনসভাতেও এক সঙ্গে দেখা যেতে পারে মমতা এবং রাহুলকে। আপাতত সেই দিকেই তাকিয়ে আছেন বাংলার মানুষ।

More Articles