সলমনকে মারার জন্য জুগিয়েছিল অস্ত্র! পুলিশি নজর এড়িয়ে কীভাবে নিজেকে শেষ করল ধৃত অনুজ?
Salman Khan House Firing Case: এদিনই খবর এসেছে আমেরিকায় মৃত্যু হয়েছে সিধু মুসওয়ালার খুনি গোল্ডি ব্রারের। জানা গিয়েছে, গ্যাংস্টার আরশ ডাল্লা ও লখবীরের সঙ্গে সংঘর্ষে মৃত্যু হয়েছে গোল্ডির।
সলমন খানের বাড়ির সামনে গুলি চালানোর ঘটনায় অন্যতম অভিযুক্তের এবার মৃত্যু হল জেল হেফাজতেই। বুধবার পুলিশ হেফাজতেই আত্মহত্যার চেষ্টা করে অভিযুক্ত। সঙ্গে সঙ্গেই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় ৩২ বছরের অনুজ থাপানকে। তবে বাঁচানো যায়নি তাকে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থাতেই মৃত্যু হয় অভিযুক্তের। সলমন খানের বাড়ির বাইরে দুই শুটার গুলি চালিয়েছিল, তাদের অস্ত্রের জোগান দেয় এই অনুজই।
গত ২৬ এপ্রিল পঞ্জাব থেকে গ্রেফতার করা হয়েছিল অনুজকে। বুধবার সকাল এগোরোটা নাগাদ জেল সংলগ্ন শৌচাগারে গিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে অনুজ। পুলিশ সূত্রের খবর, আরও দশ বন্দির সঙ্গে জেলে ছিলেন অনুজ। চার-পাঁচ জন পুলিশ পাহারায় ছিল। তা সত্ত্বেও কী করে এই ঘটনা ঘটল, এ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
গত ১৪ এপ্রিল সলমন খানের বাড়ির সামনে দুই দুষ্কৃতি গুলি চালায়। কোনও হঠকারিতা নয়। রীতিমতো রেইকি করে সলমনকে খুনের চেষ্টার অভিযোগ ওঠে দুষ্কৃতিদের বিরুদ্ধে। প্রাথমিক তদন্তে অভিযোগের তির যায় কুখ্যাত গ্যাংস্টার লরেন্স বিষ্ণোইয়ের দলের বিরুদ্ধে। অনেকদিন ধরেই বলিউড ভাইজানকে হুমকি দিয়ে যাচ্ছে লরেন্স বিষ্ণোইয়ের গ্যাং। পঞ্জাবের বিখ্যাত গায়ক সিধু মুসওয়ালাকে খুনের নেপথ্যেও ছিল লরেন্স বিষ্ণোই গ্যাংয়ের হাত।
আরও পড়ুন: সলমান খানকে খুনের চেষ্টা! ভাইজানের বাড়িতে ৫ রাউন্ড গুলি চালাল কারা?
এদিকে, এদিনই খবর এসেছে আমেরিকায় মৃত্যু হয়েছে সিধু মুসওয়ালার খুনি গোল্ডি ব্রারের। জানা গিয়েছে, গ্যাংস্টার অর্শ ডাল্লা ও লখবীরের সঙ্গে সংঘর্ষে মৃত্যু হয়েছে গোল্ডির। গোল্ডিকে খুনের দায় স্বীকার করে নিয়েছে গ্যাংস্টার অর্শ ডাল্লা ও লখবীরও। ২০২২ সালের মে মাসে পঞ্জাবি গায়ক সিধু মুসওয়ালেকে গুলি করে হত্যার অভিযোগ ওঠে কুখ্যাত গ্যাংস্টার গোল্ডি ব্রারের বিরুদ্ধে। যে হত্যাকাণ্ডের দায় নিয়েছিল সেই লরেন্স গ্যাংই।
দীর্ঘদিন ধরে সলমন খানের পিছনে পড়ে রয়েছে লরেন্স বিষ্ণোইয়ের গ্যাং। প্রায়শই বলিউডের এই তারকাকে খুনের হুমকি পর্যন্ত দেওয়া হয়েছে। এবার এক ধাপ এগিয়ে সলমন পানভেলের ফার্মহাউজে ঢুকে গুলি চালায় টুপি ও টি-শার্ট পরা দুই দুষ্কৃতি। জানা যায়, গুলি চালানোর আগে প্রায় ১৫ দিন পানভেলে থেকে রেইকি করেছে তারা। জানা যায়, ইদের দিনই সলমনের উপর হামলার পরিকল্পনা ছিল দুষ্কৃতিদের। তবে সেদিন পুলিশি প্রহরার কারণে তা সম্ভব হয়নি। হামলার দিক কাকভোরে দুই বাইকারোহী পাঁচ রাউন্ড গুলি চালায় সলমনের বাসভবনের সামনে। দুষ্কৃতিদের নাকি অস্ত্রের জোগান দিয়েছিল সোনু সুভাষ চন্দর ও অনুজ থাপান নামে দুই ব্যক্তি। সেই অনুজেরই এবার রহস্যজনক মৃত্যু হল জেল হেফাজতে।
দীর্ঘদিন ধরে বিষ্ণোই গ্যাংয়ের কুনজরে রয়েছে সলমন। ১৯৯৮ সালে কৃষ্ণসার হরিণ হত্যার অভিযোগ ওঠে সলমনের বিরুদ্ধে। সেই থেকেই বিষ্ণোই গ্যাংয়ের রাগ সলমনের উপরে। এর আগে একাধিক বার হত্যার হুমকিও দিয়েছে তারা সলমনকে। প্রাণের ঝুঁকি এড়াতে ইতিমধ্যেই দেশ ছেড়েছেন সলমন। শোনা গিয়েছে, আপাতত ক'দিনের জন্য দুবাইতেই রয়েছেন টাইগার খ্যাত অভিনেতা। সলমনকে খুনের চেষ্টার নেপথ্যে লরেন্স বিষ্ণোইয়ের ভাগ্নে আনমোল রয়েছে বলে খবর। যে কিনা আবার সলমন খুনের ষড়যন্ত্রে ব্যবহার করেছে কানাডার রোহিত গোদারা নামে এক গ্যাংস্টার। ভারতের কালো দুষ্কৃতীদের তালিকায় রয়েছে এই আনমোল।
আরও পড়ুন:করণি সেনার প্রধানকে খুন করে ফেসবুকে পোস্ট! কে এই ‘গ্যাংস্টার’ রোহিত গোদারা?
কিন্তু জেল হেফাজতে অনুজের এই রহস্যমৃত্যুর নেপথ্যে সত্যিই আত্মহত্যা না অন্য কোনও কারণ রয়েছে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। পুলিশি নিরাপত্তার মধ্যে কীভাবে এই পথ বেছে নেওয়ার সুযোগ পেল ওই অভিযুক্ত, সেই প্রশ্নও ছুঁড়ে দিয়েছেন অনেকে। একদিকে জেল হেফাজতে অনুজ থাপানের রহস্যমৃত্যু, অন্যদিকে আমেরিকায় সিধু মুসওয়ালার খুনির হত্যা, দুই কাণ্ডের সঙ্গেই লরেন্স বিষ্ণোই গ্যাংয়ের যোগ, সব মিলিয়ে নতুন করে রহস্যকে উস্কে দিয়েছে বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহলের একাংশ।