২০২৫ প্রথম নয়, বারবার গাড়ি বিস্ফোরণে ছিন্নভিন্ন হয়েছে ভারতাত্মা
From Mumbai 1993 to Delhi 2025: ১২ মার্চ ১৯৯৩, শুক্রবার। মুম্বইয়ের একাধিক এলাকায় হামলা হয়। একদিনে ১২টি বিস্ফোরণ। ২৫৭ জন নিহত, ৭০০-রও বেশি আহত হন। দেশ আগে কখনও এমন জঙ্গি হামলা দেখেনি।
ভারতের বিভিন্ন শহর বারবার কেঁপে উঠেছে ভয়াবহ বিস্ফোরণে। প্রশাসনিক নজরদারি ও নিরাপত্তা বলয়ের মধ্যেও এই হামলাগুলি দেশের ইতিহাসে রেখে গিয়েছে ক্ষতচিহ্ন। এক নজরে দেখে নেওয়া যাক বিস্ফোরণের ঘটনাগুলি—
১৯৯৩ সালের মুম্বই: ১২টি বিস্ফোরণ
১২ মার্চ ১৯৯৩, শুক্রবার। মুম্বইয়ের একাধিক এলাকায় হামলা হয়। একদিনে ১২টি বিস্ফোরণ। মূলত গাড়ি, জিপ ও স্যুটকেস বোমা ব্যবহার করা হয়েছিল। বাবরি মসজিদ ধ্বংসের প্রতিক্রিয়া স্বরূপ এই হামলা চালানো হয়। ২৫৭ জন নিহত, ৭০০-রও বেশি আহত হন। সবচেয়ে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে সেঞ্চুরি বাজার ও একটি বাসে, প্রায় ৯০ জন প্রাণ হারান।
এই ঘটনায় হাত ছিল দাউদ ইব্রাহিমের ‘ডি-কোম্পানি’র। এদের সঙ্গে পাকিস্তানি আইএসআই (ISI)-এর যোগাযোগ ছিল। এক মুহূর্তে স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল মুম্বই। দেশ আগে কখনও এমন জঙ্গি হামলা দেখেনি।
আরও পড়ুন
বিস্ফোরণের মূল চক্রীর মৃত্যুদণ্ড, ষোলো বছর আগে ঠিক কী ঘটেছিল বারাণসীতে?
২০০৩ সালের মুম্বই: গেটওয়ে অফ ইন্ডিয়া ও জাভেরি বাজারে ট্যাক্সিতে বোমা
২৫ অগাস্ট ২০০৩। মুম্বইয়ের গেটওয়ে অফ ইন্ডিয়া ও জাভেরি বাজারে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। দু'টি ট্যাক্সিতে রাখা বোমা প্রায় একই সময়ে বিস্ফোরিত হয়। ৫৪ জন নিহত, ২৪৪ জন আহত হন।
লস্কর-ই-তৈবা (LeT) এবং স্টুডেন্টস ইসলামিক মুভমেন্ট অফ ইন্ডিয়া (SIMI), দিনদুপুরে কাঁপিয়ে দেয় গোটা শহরকে।
২০০৫ সালের দিল্লি: দীপাবলির আগে বাজারে মৃত্যুমিছিল
২৯ অক্টোবর ২০০৫। দিল্লির সরোজিনী নগর, পাহাড়গঞ্জ মার্কেট ও একটি যাত্রীবাহী বাসে হামলা।
বাজারের তিনটি বাসে রাখা বোমা। ৬২ জন নিহত, ২১০-রও বেশি জন আহত হন।
লস্কর-ই-তৈবা-র হামলায় উৎসবের আগে রাজধানীতে আতঙ্কে থমকে গিয়েছিল জনজীবন।
২০০৭ সালের হায়দরাবাদ: পার্ক করা গাড়িতে বিস্ফোরণ
২৫ জুলাই ২০০৭। হায়দরাবাদের একটি খোলা অডিটোরিয়াম ও খাবারের দোকানে দু'টি বোমা বিস্ফোরণ হয়। একটি বোমা ছিল পার্ক করা গাড়ির ভেতরে। এই হামলায় বহু প্রাণহানি ও আহতের ঘটনা ঘটে।
আরও পড়ুন
১৯৯৬ থেকে ২০২৫: দিল্লির বিস্ফোরণের ইতিহাস এক নজরে
২০২৫ সালের : দিল্লি
২০২৫ সালের ১০ নভেম্বর। পুরনো দিল্লির লালকেল্লা মেট্রো স্টেশনের সামনে ভয়াবহ বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে রাজধানী। সন্ধ্যা প্রায় সাতটার সময় একটি গাড়ি ট্রাফিক সিগন্যালে থামতেই হঠাৎ বিস্ফোরণ ঘটে। মুহূর্তের মধ্যে আগুন ছড়িয়ে পড়ে, ক্ষতিগ্রস্ত হয় আশপাশের গাড়ি। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় অন্তত আট জনের, আহত হন ২০ জনেরও বেশি। বিস্ফোরণের পর গোটা এলাকায় চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। দিল্লি পুলিশ ও বিশেষ দফতর ঘটনাস্থলে পৌঁছে তদন্ত শুরু করেছে। প্রাথমিকভাবে সন্ত্রাসযোগের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া হয়নি। নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে লালকেল্লা ও আশপাশের এলাকায়।
১৯৯৩ থেকে ২০০৭— এই সময়সীমায় মুম্বই, দিল্লি, হায়দরাবাদ ভারতের একের পর এক শহর কেঁপে উঠেছে। প্রতিটি ঘটনায় ছিল সুপরিকল্পিত জঙ্গি ছক। প্রশাসন ও গোয়েন্দা সংস্থার কঠোর নজরদারি সত্ত্বেও বারবার লক্ষ্য করা গিয়েছে একই প্রবণতা— জনবহুল এলাকা, উৎসবের সময়, আর নিরস্ত্র সাধারণ মানুষই হয়ে উঠেছেন হামলার প্রধান লক্ষ্য।

Whatsapp
