রাশিয়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক বদলাচ্ছে? আলাস্কার বৈঠক কীসের ইঙ্গিত?
Russia US Relations: গুরুত্বপূর্ণ হল, আলাস্কার বৈঠকের আগেই পুতিনকে হুশিয়ারি দিয়েছিলেন ট্রাম্প। কিন্তু দেখা গেল বৈঠক শেষে সাংবাদিক বৈঠকের পর হাসিমুখে হাত মেলাচ্ছেন ট্রাম্প।
সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ভ্লাদিমির পুতিন আলাস্কায় বৈঠক করলেন। এই আলাস্কা একদা রাশিয়ারই ভূখণ্ড ছিল। এখন এখানেই দুই দেশের শীর্ষ নেতৃত্বের মুখোমুখি হওয়া নিয়ে কূটনৈতিক মহলে জোর চর্চা শুরু হয়েছে। এ যেন ঠান্ডা লড়াইয়ের আগের কোনো বৈঠক। তখন যুক্তরাষ্ট্র ও সোভিয়েত ইউনিয়ন ছিল পরস্পরের প্রতিদ্বন্দ্বী। এই বৈঠককে বড় বার্তা বলেই মনে করছেন কূটনৈতিক মহলের একাংশ।
সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের যে ভূখণ্ডগুলি হাত ছাড়া হয়েছিল তার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল ইউক্রেন। ৭.২ মিলিয়ন ডলার খরচ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আলাস্কা কিনে নিয়েছিল। আর সেখানেই দুই দেশের প্রধানদের মধ্যে বৈঠক হল। কিন্তু কোনো চুক্তি হল না।
২০১৬ সালে প্রথম ক্ষমতায় আসেন ট্রাম্প। আর ২০২২ সালে রাশিয়া ইউক্রেনে হালমা শুরু করে। তবে থেকে এখনও সেই হামলা চলছেই। হামলা শুরুর পর পুতিনের প্রশংসা করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্টের। তাঁর দাবি ছিল, শান্তি রক্ষার্থেই রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা করেছে।
আরও পড়ুন- ট্রাম্প প্রশাসনের চড়া শুল্কে যেভাবে ধস নামতে পারে হীরক শিল্পে
তবে ক্ষমতায় আসার আগে থেকেই নির্বাচনী প্রচার যুদ্ধ থামানোর কথা বলেছিলেন তিনি। ট্রাম্প দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর যুদ্ধ থামানো নিয়ে একাধিকবার বৈঠকও করেছেন রাশিয়া আমেরিকা। কিন্তু কোনো মীমাংসাই হয়নি। দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কেরও অবনতি হয়।
উল্লেখ্য, চলতি বছর ফেব্রুয়ারি মাসে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির জেলেনস্কি সঙ্গে বাদানুবাদ হয়েছিল। লাইভ টেলিভিশন ক্যামেরা ছেড়ে উঠে গিয়েছিলেন জেলেনস্কি। ট্রাম্পের দাবি, জেলেনস্কি চাইলেই যুদ্ধ বন্ধ হয়ে যাবে। তার জন্য নেটোয় যোগ দেওয়ার দাবি ছাড়তে হবে। আমেরিকার নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট নেটোয় অন্তর্ভুক্তি ছিল ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির অন্যতম দাবি। ট্রাম্পের আরও দাবি ছিল, পুতিনের ইচ্ছানুযায়ী ক্রিমিয়ায়ও যেন রাশিয়ারই ভূখণ্ডে থাকে।
আরও পড়ুন- পুতিন কাছে এলেন বলেই ট্রাম্প দূরে গেলেন?
এখন আলাস্কার বৈঠকে কোনো চুক্তি হয়নি দুই দেশের। ইউক্রেনে এখনও হামলা চালিয়ে যাচ্ছে রাশিয়া। গুরুত্বপূর্ণ হল, আলাস্কার বৈঠকের আগেই পুতিনকে হুশিয়ারি দিয়েছিলেন ট্রাম্প। কিন্তু দেখা গেল বৈঠক শেষে সাংবাদিক বৈঠকের পর হাসিমুখে হাত মেলাচ্ছেন ট্রাম্প। আবার সেই বৈঠকের পরই পুতিনকে ওয়াশিংটনে আমন্ত্রণও জানিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, ঠাণ্ডা লড়াইয়ে দু'ভাগ হয়ে গিয়েছিল বিশ্ব। একদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ,অন্যদিকে সোভিয়েত ইউনিয়ন। সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একাই দাপট দেখিয়ে এসেছে। এখন কী তবে সেই সমীকরণ বদলাচ্ছে? আলাস্কার বৈঠক কীসের ইঙ্গিত? কেন রাশিয়াকে শক্তিশালী করা হচ্ছে? কেন এত স্পষ্টভাবে নিজের স্বার্থের বিরুদ্ধে কাজ করছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র? সেই প্রশ্ন থাকছেই।

Whatsapp
