বিকেলের আকাশে এলিয়েন থেকে বিদেশি মিসাইল, 'বঙ্কুবাবুর বন্ধু'র জন্য হাপিত্যেশ করে রইল বাংলা

Mysterious light on West Bengal : ছোট্ট একটা আলোকপিণ্ড, আর ইয়া বড়ো তার 'ন্যাজ'... সায়েন্স ফিকশন কি সত্যি হতে চলেছে?

বঙ্কুবাবুকে মনে আছে? সেই যে গ্রামের এক মাস্টারমশাই, কথায় কথায় যাকে নিয়ে ইয়ার্কি মারতেন তাঁর বন্ধুরা? মুখ বেজার করে বাড়ি চলে আসতেন তিনি। সেই বঙ্কুবাবুর সঙ্গেই একদিন দেখা হয়ে গেল 'অ্যাং'য়ের। ভিনগ্রহের এই জীবের স্পেস শাটল বা ইউএফও পৃথিবীতে এসেছে। সেই অ্যাংই হয়ে গেল বঙ্কুবাবুর বন্ধু। 'বঙ্কু মাস্টার'ও গেলেন বদলে। 

বৃহস্পতিবারের কলকাতা সেই 'অ্যাং'য়ের খোঁজেই বঙ্কুবাবু হয়ে বসে রইল বাড়ির ছাদে, মাঠে, রাস্তায়। কেবল কলকাতা মহানগর নয়, গোটা বাংলাই। বাঁকুড়া হোক বা নামখানা - মাঝ আকাশে হঠাৎ উদয় হওয়া অদ্ভুতুড়ে আলো নিয়ে গবেষণার শেষ নেই। ছোট্ট একটা আলোকপিণ্ড, আর ইয়া বড়ো তার 'ন্যাজ'... সায়েন্স ফিকশন কি সত্যি হতে চলেছে? হাজির হল ভিংরহের প্রাণী? সত্যজিৎ রায়ের অ্যাং এবার পা রাখবে পৃথিবীতে? 

এখন অবশ্য আমরা জানি এই আলোর রহস্য। ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রক অগ্নি ৫ মিসাইলের পরীক্ষা করছিল। সেই মিসাইলের আলোই আমাদের চোখে এসেছে। মাত্র দু'মিনিট এই আলো আকাশে ছিল। আসল খবর সামনে না আসা অবধি গোটা বাংলা উৎকণ্ঠায় ভুগল। সেইসঙ্গে উঠে এল বিভিন্ন তথ্য এবং তত্ত্ব। 

সবার প্রথমে বাঁকুড়ায় দেখা যায় এই আলো। তারপর গোটা দক্ষিণবঙ্গে। সেইসঙ্গে চলতে থাকে হাজার একটা কল্পনা। আমেরিকা ছেড়ে কি এবার ইউএফও বাংলার আকাশে ঘাঁটি গেড়েছে? এই এক্ষুনি সেখান থেকে ভিনগ্রহের প্রাণীরা নামল বলে। পৃথিবী কবজা করে নেবে তারা? প্রতিটি মানুসশের মনেই নিজস্ব কল্পবিজ্ঞানের গল্প তৈরি হয়ে গিয়েছিল। বিজ্ঞানঘেঁষা মানুষজন চলে গিয়েছিলেন ধূমকেতু আর উল্কার ইতিহাসে। কবে কবে এসেছে, এখন সেই উল্কার আসার সময় কিনা, জোরালো হিসেবনিকেশ চলেছে। উল্লেখ্য, এই সময়টায় এমনিতেই উল্কাবৃষ্টি হয়। তবে ভরা সন্ধ্যায় এতো জোরালো আলো? 

তবে সম্ভাবনার শেষ নেই এখানেও। বিদেশি কোনও মিসাইল কি আচমকা হানা দিল শহরে? মনে পড়ল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ের একটি ছড়া। "সা রে গা মা পা ধা নি/ বোম ফেলেছে জাপানি"। এক্ষেত্রে অবশ্য জাপানি নয়, চিন। কয়েকদিন ধরেই ভারত-চিন সীমান্ত সরগরম। যুদ্ধ যুদ্ধ হাওয়া বইছে। তার মাঝেই এমন আলো... ডাল মে কুছ তো কালা হ্যায়! কন্সপিরেসি থিয়োরি ধেয়ে আসতে থাকে সোশ্যাল মিডিয়ায়। নানা মুনির নানা মতের ভিড়। শেষমেশ সত্যি জানার পর নিঃশ্বাস ফেলল সবাই। যাক, তবে স্বস্তি!

বিগত কয়েকদিন ধরে ফুটবল নিয়ে মেতে বাংলা। মেসি, এমবাপে, রোনাল্ডোদের ভিড়েও নিস্তরঙ্গ জীবন চঞ্চল হয়ে উঠল একটা আলো দেখে। চায়ের দোকান গরম হল আরও খানিক। গল্পের গরু মগডালে না হোক, ছোটখাটো মই ধরে একটু তো উঠল! 

More Articles