কমান্ডার অভিনন্দনকে আটক করেছিলেন, জঙ্গিদের গুলিতে নিহত সেই পাকিস্তানি মেজরই

Moiz Abbas Shah: ২০১৯ সালে ভারতীয় বায়ু সেনার উইং কমান্ডার অভিনন্দন বর্তমানকে আটক করেছিলেন পাকিস্তানি মেজর মইজ আব্বাস শাহ।

পাকিস্তানের মাটিতেই জঙ্গিদের সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে নিহত পাকিস্তানি মেজর মইজ আব্বাস শাহ। ২০১৯ সালে ভারতীয় বায়ু সেনার উইং কমান্ডার অভিনন্দন বর্তমানকে আটক করেছিলেন এই পাকিস্তানি মেজরই। সোমবার দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তানের সারারোগা এলাকায় নিষিদ্ধ সংগঠন তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তানের (TTP) বিরুদ্ধে অভিযান চালায় পাকিস্তানি সেনাবাহিনী। পাক সেনাবাহিনীর দাবি, সেই অভিযানে টিটিপি-র ১১জন জঙ্গিকে তারা হত্যা করেছে। অন্যদিকে, জঙ্গিদের সঙ্গে গুলির লড়াইয়েই নিহত হয়েছেন মেজর মইজ শাহ এবং তাঁর সহযোদ্ধা ল্যান্স নায়েক জিবরান উল্লাহ।

২০১৯ সালে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনার সময় ভারতীয় বিমান বাহিনীর উইং কমান্ডার অভিনন্দন বর্তমানের বিমান পাক অধিকৃত কাশ্মীরে প্রবেশ করলে তাঁকে আটক করে পাকিস্তানি বাহিনী। ২০১৯ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি পুলওয়ামা হামলার প্রতিক্রিয়ায় ২৬ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের বালাকোটে জঙ্গি শিবিরে অভিযান চালায় ভারতীয় বিমানবাহিনীর বারোটি মিরাজ-২০০০ জেটবিমান। এর জবাবে ২৭ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানি বাহিনী ভারতীয় আকাশসীমা লঙ্ঘন করে হামলা চালায়। সেই সময় হামলাকারী পাক বিমানকে ধাওয়া করে নিজের যুদ্ধবিমান নিয়ে উইং কমান্ডার অভিনন্দন বর্তমান প্রবেশ করেন পাক অধিকৃত কাশ্মীরে। এরপর পাক সেনার তরফে মইজ আব্বাস শাহ আটক করেন ভারতীয় উইং কমান্ডার অভিনন্দনকে। সামাজিক মাধ্যমে আটক অভিনন্দনের একাধিক ছবি, ভিডিও ছড়িয়ে দেয় পাকিস্তান। দীর্ঘ টানাপড়েনের পর অবশেষে ১ মার্চ অভিনন্দন বর্তমানকে মুক্ত করে পাকিস্তান। সেই ঘটনার পরই সৈয়দ মইজকে ক্যাপ্টেন থেকে মেজর পদে উন্নীত করে ইসলামাবাদ সরকার। নিজেরই দেশে জঙ্গিদের গুলিতে নিহত হলেন সেই মইজ আব্বাস শাহ।

আরও পড়ুন- জাল ছবি উপহার দিয়ে বিজয়োল্লাস! মুনিরের কীর্তিতে উপহাসের মুখে পাকিস্তান

উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, ভারতের সঙ্গে লড়াইয়ে নয় বরং পাকিস্তানের মাটিতেই জঙ্গিদের গুলিতে নিহত হয়েছেন এই পাক সেনা নায়ক। রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় রাওয়ালপিন্ডির চকলালা গ্যারিসনে মেজর শাহের শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। উপস্থিত ছিলেন সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনির। রাষ্ট্রপতির পক্ষ থেকেও জানানো হয় শ্রদ্ধাঞ্জলি। তবে এই ঘটনায় প্রশ্ন উঠছে কিছু। পাকিস্তান বারেবারেই দাবি করেছে রাষ্ট্র সন্ত্রাসবাদীদের পৃষ্ঠপোষকতা করে না। এদিকে দেখা যাচ্ছে, দেশের মধ্যেই জঙ্গি সংগঠনের বিরুদ্ধে লড়াই করছে পাক সেনাবাহিনী। আরও উল্লেখযোগ্য হলো, সেই লড়াইয়ে প্রাণ হারাচ্ছেন একজন সেনা কর্মকর্তা! দেশের সেনা নায়কেরই যদি নিরাপত্তা নিশ্চিত না থাকে, তাহলে সন্ত্রাসবাদের বিরোধিতা আসলে কোন ব্যর্থতাকে ঢাকার চেষ্টা পাকিস্তানের?

প্রসঙ্গত, দীর্ঘদিন ধরেই খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশ থেকে পাকিস্তানে উত্তেজনা বাড়িয়েছে টিটিপি (TTP)। ২০২২ সালে ইসলামাবাদ সরকারের সঙ্গে শান্তি আলোচনা ভেস্তে যাওয়ার পর যুদ্ধ ঘোষণা করে টিটিপি। পাকিস্তান এর আগেও অভিযান চালিয়ে টিটিপিকে দমানোর চেষ্টা করেছে। কিন্তু তারপরও পিছু হটেনি টিটিপি। পাক সেনার মেজরের মৃত্যুতে কি কোনও পরিবর্তন আসবে পড়শি দেশের 'সন্ত্রাসবিরোধী' কার্যক্রমে?।

More Articles